সকল মেনু

যশোর শিক্ষাবোর্ড ইতিবাচক অগ্রগতি

রিপন হোসেন, যশোর প্রতিনিধি:মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুম ব্যবহার করে শিক্ষা কার্যক্রমকে আরো গতিশীল করে তুলেছে যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষার্থীদের মাঝেও শিক্ষাদানের এ প্রক্রিয়া ইতিবাচক সাড়া ফেলেছে। তাদের পাঠ্যবিষয় যেমন সহজবোধ্য ও আনন্দময় হয়ে উঠছে, তেমনি এর প্রভাব পড়ছে ফলাফলেও। এজন্য মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টরের মাধ্যমে ডিজিটাল ক্লাসের সংখ্যা আরো বৃদ্ধির বিষয়টিও তুলে ধরেছে শিক্ষার্থীরা।
যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’র নবম শ্রেণির ছাত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস স্বাগতা জানায়, ডিজিটাল ক্লাসে স্যারের পাঠদানের সাথে সাথে বোর্ডে চিত্রের মাধ্যমে সেটি দেখাও যায়। এনিমেশনের সাহায্যে লেখাপড়া চোখের সামনেই দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। ফলে বোঝার ক্ষমতা বেড়ে যায়, সৃজনশীল প্রতিভার বিকাশ হয়। এজন্য ডিজিটাল ক্লাস তারা খুব উপভোগ করে।
নবম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র রাকিব হাসান শুভ জানায়, ডিজিটাল ক্লাসে বইয়ের একটি বাস্তব রূপান্তর ও বাস্তব অভিজ্ঞতা পাওয়া যায়। ফলে বিজ্ঞানের কঠিন কঠিন বিষয়সমূহও তাদের কাছে সহজবোধ্য হয়ে ওঠে। যা তাদের শিক্ষা গ্রহণে ইতিবাচক ভূমিকা রাখছে বলেও শুব জানায়।
যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’র বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক মুকাররম হোসেন জানান, এই স্কুলের বেশিরভাগ ক্লাসই মাল্ডিমিডিয়া ক্লাসরুমে নেয়া হয়। এতে পাঠ্যসূচির বিমূর্ত বিষয়গুলো তাদের সামনে মূর্ত হয়ে ওঠে। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়ার ভীতি দূর হয়, পাশাপাশি তারা লেখাপড়ায় আরও আগ্রহী হয়ে ওঠে। এ জন্য এই কার্যক্রম যদি দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কার্যকরভাবে ছড়িয়ে দেয়া যায় তাহলে শিক্ষার অগ্রযাত্রা ত্বরান্বিত হবে।
যশোর মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের অদূরে উপশহর এলাকায় ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যশোর শিক্ষা বোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ৩ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত এ বিদ্যাপীঠটি শুরুতেই এ অঞ্চলের মানুষের দৃষ্টি কাড়ে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩য় শ্রেণি থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মোট ৯২৬ জন শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। তাদের পাঠদানের জন্য নিয়োজিত রয়েছেন ৩৮ জন শিক্ষক শিক্ষিকা। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় ৯৩ দশমিক ৫৫ ভাগ পাসের হার নিয়ে যশোর বোর্ডে ৮ম স্থান অধিকার করেছে। এর এসএসসিতে ধরে রেখেছে শতভাগ পাসের হার। এছাড়া প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা সমাপণীতেও এ স্কুলের শিক্ষার্থীরা রাখছে কৃতিত্বের স্বাক্ষর।
যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’র সহকারী প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ গোলাম মোস্তফা জানান, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ২০১২ সালের শুরুতে মাল্টিমিডিয়া ক্লাসরুমের কার্যক্রম শুরু করা হয়। ৬ষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত সব বিষয়েই এই ডিজিটাল পদ্ধতিতে ক্লাস নেয়া হয়। এর ফলে ছেলে মেয়েরা যেমন পাঠে আগ্রহী হয়ে ওঠছে, তেমনি তাদের ক্লাসে উপস্থিতিও নিশ্চিত করা যাচ্ছে। আর ক্লাসের গতানুগতিক পদ্ধতির বিপরীতে তারা অগ্রগতির সোপানে পৌঁছে যাচ্ছে। পাশাপাশি শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেটের সাথেও সম্পৃক্ত হয়েছে। তাদের ই-মেইল অ্যাড্রেস খুলে দেয়া হয়েছে। যা তাদের তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণকে আরও কার্যকর করে তুলবে।
যশোর শিক্ষাবোর্ড মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ’র অধ্যক্ষ প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান জানান, বর্তমান সৃজনশীল পদ্ধতিকে মাল্টিমিডিয়ার মাধ্যমে নিয়ে এসে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান করা হচ্ছে। ফলে তাদের পাঠ্যবিষয় ব্ল্যাকবোর্ডের পরিবর্তে স্ক্রিনের মাধ্যমে সজীব বাস্তবতায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে। বিজ্ঞান ক্লাব, ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব’র মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন সৃষ্টিশীল কার্যক্রমে ভূমিকা রাখছে। আমরা মনে করি শিক্ষার্থীদের যুগোপযোগী করে গড়ে তুলতে হলে, মাল্ডিমিডিয়া, তথ্য প্রযুক্তি, সাংস্কৃতিক কর্মকাÐসহ সবকিছুর সমন্বিত ব্যবহার দরকার। এর মাধ্যমে গড়ে ওঠা শিক্ষার্থীরা আধুনিক বিশ্বের সবধরণের চ্যালেঞ্জকে গ্রহণ করতে পারবে বলে তিনি বিশ্বাস করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top