সকল মেনু

ভোলায় আমনের বাম্পার ফলন: কৃষকের মুখে হাঁসি

Pic--(1)--10--12--14

এম. শরীফ হোসাইন,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ভোলা প্রতিনিধি: ভোলায় এবার লক্ষমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমানে আমনের বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাঁসি ফুটেছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর আমন চাষ করে উৎপাদন ব্যয় মিটিয়ে লাভের আশা দেখা দিয়েছে কৃষকের মাঝে। কৃষকরা একখ দলবেঁধে আমন ধান কেঁটে ঘরে তুলছেন। কেউবা আবার নতুন ফসল কেঁটে ঘরে তুলছেন। জেলার কৃষকদের ঘরে ঘরে এখন নতুন ধানের উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, গত বছরের তুলনায় এ বছর প্রতিটি উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক পরিমানে আমন ধানের বাম্পার ফলন ভালো হয়েছে। এবছর জেলায় আমনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩ শ’ ৮৯ হেক্টর। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ১শ’ ২০ হেক্টর। এর মধ্যে ভোলা সদর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ৩শ’ ৫০ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছে ২৫ হাজার ৭ শ’ হেক্টর। দৌলতখান উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ৮শ’ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছে ১৩ হাজার ৯ শ’ ৫০ হেক্টর। বোরহানউদ্দিন উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৯ হাজার ৮শ’ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছে ২১ হাজার ১ শ’ হেক্টর। তজুমদ্দিন উপজেলায় লক্ষমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৩ শত হেক্টর, উৎপাদন হয়েছে ১১ হাজার ৮ হেক্টর। লালমোহন উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৪ হাজার ২ শ’ ৫০ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছে ২৫ হাজার ৬ শ’ ৯০ হেক্টর। চরফ্যাশন উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭১ হাজার ৪ শ’ ৮৯ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছে ৭৩ হাজার ৩ শ’ হেক্টর। মনপুরা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১১ হাজার ৪ শ’ হেক্টর, উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ৩ শ’ হেক্টর।
গত বছরের তুলনায় এবার জেলায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হওয়ায় কৃষদের পরিবারের মধ্যে এখন আনন্দ বিরাজ করছে। প্রতিটি উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলে কৃষক পরিবারে এখন চলছে নবান্ন উৎসব আয়োজনের আমেজ। তবে প্রাকৃতিক দুযোগ বা বিপর্যয় না ঘটলে ক্ষেতের সোনালী ধানে কৃষকের বাড়ির আঙ্গিনা ভরে উঠবে। এমন আশায় দিন গুনছেন ওইসব কৃষকরা।
সরজমিনে বিভিন্ন এলাকা ঘুর দেখা গেছে, মাঠ জুড়ে সবুজ ধানের শীষ উকি দিচ্ছে সোনালী স্বপ্ন নিয়ে। ক্ষেতের আগাছা দমন, পোকা দমনসহ অন্যান্য পরিচর্যায় ও অনেক কৃষকেরা ধান কাটায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন।
ভোলা সদরের আলীনগর, চরসামাইয়া, শিবপুর, ভেদুরিয়া ও দক্ষিণ দিঘলদী ইউনিয়নের স্থানীয় একাধিক কৃষকের সাথে আলাপ করলে তারা জানায়, গতবছরের তুলনায় এ বছর আমন চাষে কৃষকের উৎপাদন খরচ কম পড়েছে। অতি বৃষ্টি বা অতিরিক্ত খরার কারণে এবছর তেমন কোন সমস্যায় পড়তে হয়নি। প্রকৃতি অনুক‚লে থাকলে ফলানো ধান যথাসময়ে ঘরে তুলতে পারবে এমন আশাই কৃষকদের। এখনো ক্ষেতের ধান কাটার অপেক্ষায় আছে অধিকাংশ কৃষকেরাই। ইতোমধ্যে বেশী ভাগ কৃষক পরিবারে শুরু হয়েছে নবান্ন উৎসব আয়োজনের প্রস্তুতি ও ধান কাটা।
চরফ্যাশনের কৃষক ছায়েদুর রহমান হাওলাদার জানান, এবার আমন ধান ভাল হয়েছে, প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন ঘরে উঠবে। তজুমদ্দিনের কৃষক শাহে আলম জানান, তিনি এবছর প্রায় ৩ একর জমিতে আমন ধান চাষ করেছেন। গত বছরের তুলনায় উৎপাদন ব্যয় অনেক কম লেগেছে। এছাড়া ফলনও বিগত বছরের চেয়ে এবছর অনেক বেশি হয়েছে। লালমোহনের রমাগঞ্জ এলাকার কৃষক আবুল হোসেন হাওলাদার জানান, গতবছরের তুলনায় এবার ক্ষেতে আমন দান খুব ভালো হয়েছে। কীটনাশক ও অনেক কম লেগেছে। এখনো তিনি ধান কাটেননি। দু’একদিনের মধ্যেই ধান কাটবেন বলে আশা করছেন।
ভোলা জেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক রমেন্দ্র নাথ বড়ৈ জানান, এবছর জেলায় আমনের লক্ষ মাত্রা ছিল ১ লাখ ৭৪ হাজার ৩শ’ ৮৯ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ১শ’ ২০ হেক্টর জমিতে। সকল কৃষকের ফলন ভালো হয়েছে। প্রকৃতি ছিল আমন চাষের অনুক‚লে। এখন পর্যন্ত রোগ-বালাইয়ের তেমন কোন প্রকোপ দেখা যায়নি। প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে আমনের বাম্পার ফলন এই পাবেন জেলার কৃষকেরা।
জেলার সকল উপজেলার আমন চাষীদের মাঝেই এখন উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। ঘরে ঘরে নতুন ধানের মৌ-মৌ গন্ধ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। কৃষকদের বাড়িতে এখন নতুন ধানের উৎসব চলছে। এবছর ধানের বাম্পার ফলন পেয়ে কৃষকরাও অনেক খুশি।

ছবি-১। ভোলায় আমন ধান কেটে ঘরে নেয়ার দৃশ্য।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top