সকল মেনু

ভারত বন্ধু হলে সীমান্তে হত্যা বন্ধ হতো: মিজানুর

ঢাকা :: জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেছেন, প্রতিবেশী ভারত আমাদের প্রকৃত বন্ধু হলে অবশ্যই সীমান্তে নিরীহ বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধ হতো।

তিনি শনিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘বাংলাদেশ-ভারত বন্ধুত্ব: দুদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের সোপান’ শীর্ষক আলোচনা সভায় একথা বলেন। সভার আয়োজক বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া সিটিজেন সোসাইটি (বিআইসিএস)।

মিজানুর রহমান বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু একটি সাদামাটা পররাষ্ট্রনীতি করেছিলেন, যার মূল কথা- সকলের সঙ্গে বন্ধুত্ব; কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়। তিনি এই বন্ধুত্ব অটুট রাখারও অনুরোধ করেছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘কিন্তু ভারতের সঙ্গে আমাদের এই বন্ধুত্ব সব সময় সুমধুর থাকছে না। তারা নির্বিচারে আমাদের নিরীহ নাগরিককে গুলি করে মারে। এটাই কি বন্ধুত্বের নমুনা?’

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। তার মধ্যে চতুর্থ চুক্তি হয়েছে ইন্দিরা গান্ধীর সময়, যাকে কিছু লোক গোলামীর চুক্তি বলে। অথচ কেউ সেই গোলামীর চুক্তিতে কি ছিল তা বলে না।’

তিনি বলেন, ‘এমনকি মাত্র ১২টি শর্তের সেই চুক্তি আওয়ামী লীগ সরকারও প্রকাশ করার সাহস দেখায় না।’

মিজানুর রহমান বলেন, ‘মুজিব-ইন্ধিরা চুক্তিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা ছিল– চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী কোনো দেশ অপর দেশের বিরুদ্ধে ক্ষতিকর কোনো সামরিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারবে না। অর্থাৎ কেউ কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে পারবে না। এর চেয়ে ভালো শর্ত আর কি হতে পারে?’

তিনি বলেন, ‘এই চুক্তি মানলে আপনি ১০ ট্রাক অস্ত্র নিয়ে অন্য দেশের সীমানা পার হয়ে নিজ দেশে প্রবেশ করতে পারবেন না। এজন্য এই চুক্তিকে গোলামীর চুক্তি বলা হয়। আর এটা কারা বলে তাও সকলেল কাছে স্পষ্ট।’

তিনি আরো বলেন, ‘একজন রাজাকার আজীবন রাজাকার। কিন্তু একজন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রতিদিন বারং বার প্রমাণ করতে হয় তিনি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।’

মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান বলেন, ‘বাংলাদেশে যে জঙ্গিদের উত্থান হয়েছে, তা দমন ও নিয়ন্ত্রণ করতে হলে অবশ্যই প্রতিবেশী ভারতের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে।’

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এখন এমন একটি উচ্চতায় পৌঁছেছে যেখান থেকে শুধু এগিয়েই যাওয়ায় সম্ভব।’

দুদেশের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ফিরিস্তি তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেশী দেশগুলো সহযোগিতার হাত না বাড়ালে ভারতের পক্ষে একা এগিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। একই কথা বাংলাদেশের বেলাতেও প্রযোজ্য।’

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশনের তথ্য ও রাজনীতিবিষয়ক কাউন্সিলর সুজিত ঘোষ বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের যাতায়াত বিষয়ে আলোচনা চলমান রয়েছে। কিভাবে আরো বেশি সুবিধা পাওয়া যায়, সে বিষয়ে আগামীতে গুরুত্ব দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ভিসার ক্ষেত্রে আমাদের হেল্প লাইন আছে। অনেকে আছেন চিকিৎসার জন্য বা জরুরি প্রয়োজনে দু-তিনদিনের মধ্যে যেতে হবে, তারা আবেদন করলে দ্রুতই ভিসা পেতে পারেন। এছাড়া টুরিস্ট ভিসা গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে আপনারা ভারত গিয়ে ১০ থেকে ২০ দিন থাকতে পারেন। কোনো সমস্যা হবে না।’

বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া সিটিজেন সোসাইটির (বিআইসিএস) নির্বাহী সভাপতি জাফর ইকবালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরো বক্তৃতা করেন- সংসদ সদস্য নাজমুল হক, অধ্যাপক ড. দূর্গাদাস ভট্টাচার্য, অধ্যাপক ড. সৈয়দ আনোয়ার হোসেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী মনোরঞ্জন ঘোষাল প্রমুখ।

সম্পাদনায় / জীবন

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top