সকল মেনু

ইমামের নির্দেশেই প্রহসনের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে-মির্জা ফখরুল

  নিজস্ব প্রতিবেদক : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘এইচ টি ইমাম আওয়ামী লীগের ইমাম। কারন তিনি আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক ছিলেন।’

তিনি বলেন, ‘ইমামের নির্দেশেই প্রহসনের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তার বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে সব জারিজুরি ফাঁস হয়ে গেছে।’

মঙ্গলবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্র ফোরাম ও উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরাম আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

গত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এইচ টি ইমাম বিসিএসে মৌখিক পরীক্ষায় ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের ‘দেখবেন’ বলে আশ্বাস দেন। একই সঙ্গে গত ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি নিজে অনেক উপজেলায় গেছি। সেখানে আমাদের যারা ছিল, তাদের সঙ্গে কথা বলে নির্বাচন করেছি। তারা আমাদের পাশে আছে। তারা বুক পেতে দিয়েছে।’

তার এই বক্তব্যে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে আওয়ামী লীগ। নির্বাচন নিয়ে নিজেদের আশঙ্কার পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে সমালোচনায় মুখর হয়ে ওঠে বিএনপি। এরই মধ্যে নিজের বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিয়ে সংবাদ সম্মেলনও করেছেন এইচটি ইমাম। তার বক্তব্য গণমাধ্যমে ‘খন্ডিতভাবে’ এসছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আওয়ামী লীগ তাদের অনুগত নির্বাচন কমিশন ও মোবাইল কোর্ট বসিয়ে কিভাবে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন করেছে, তা ইমামের বক্তব্যে ফুটে উঠেছে। তিনি প্রেস কনফারেন্স করে এর ব্যাখ্যা দিতে চেয়েছেন। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণ এর সত্যটা জেনে গেছে।’

মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মামলায় সমন জারি করে বিএনপির আন্দোলন স্তব্ধ করা যাবে না। যে দেশে বাকস্বাধীনতা নেই, গণতন্ত্র নেই; সেই দেশে সবই সম্ভব। কিন্তু এভাবে বাংলাদেশের মানুষের আন্দোলন স্তব্ধ হবে না।’

তিনি বলেন, ‘তারেক রহমান দেশ ও জনগণের জন্য রাজনীতি করেন। তিনি (তারেক রহমান) সেই রাজনীতির চর্চা করেন, যে রাজনীতি কোনো অপশক্তির কাছে মাথা নত করে না।  সেজন্যই তারেক রহমানকে এতো ভয়।’

দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব বিপর্যস্ত করতে অনেক আগে থেকেই তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এ মূখপাত্র বলেন, ‘তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কিন্তু জাতীয়তাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে জিয়াউর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে। এর ধারবাহিকতায় ১/১১ প্রেক্ষাপটে তাকে (তারেক রহমান) মিথ্যা মামলায় কারাগারে নিয়ে অবর্ণনীয় নির্যাতন করা হয়েছে।  বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ অসংখ্য নেতাকে কারগারে নেওয়া হয়েছে।’

তারেক রহমান ক্ষুধাহীন দারিদ্রমুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করার স্বপ্ন দেখেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি সেই রাজনীতির চর্চা শুরু করেছিলেন। দেশের রাজনীতিতে তিনিই প্রথম রাজনীতিবিদ যিনি প্রতিপক্ষ দলের নেতার জন্মদিনে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলাদেশের ভবিষ্যত নিয়ে আগাম চিন্তা  ভাবনা শুরু করেছেন।

হজ ও জয়ের বেতন বিষয়ে সরকারের সাবেক মন্ত্রী লতিফ সিদ্দকীর বক্তব্যের দৃষ্টি আকর্ষন করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বলেন, ‘তারা যে ধর্মে বিশ্বাস করে না সেটি তার (লতিফ সিদ্দকী) কথায় প্রমান হয়েছে।  তিনি বলেছেন, জয়ের মাসিক বেতন নাকি ১ কোটি ৬০ লাখ। সত্যিই কি তাই? এই কথা ফাঁস করার জন্যই কি তার মন্ত্রিত্ব গেলো? আমরা অনেকবার এর ব্যাখ্যা চেয়েছি, কিন্তু জানা যায়নি।’

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘এখন কঠিন সময়, পরীক্ষার সময়। আন্দোলন নয়, সংগ্রামের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। এ সংগ্রাম বিএনপির ক্ষমতায় আসার জন্য নয়, বরং দেশের স্বাধীনতা, স্বার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র রক্ষার জন্য।’

বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ও উত্তারাঞ্চল ছাত্র ফোরামের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা শওকত মাহমুদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু,  আহমেদ আজম খান, যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, ছাত্রদল সভাপতি রাজীব আহসান, সাধারণ সম্পাদক মো. আকরামুল হাসান, সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান, উত্তরাঞ্চল ছাত্র ফোরামের আহ্বায়ক শফিকুল ইসলাম প্রমুখ।

গণস্বাস্থ্যের প্রতিষ্ঠাতা জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক গাজী মাজহারুল আনোয়ার, চিত্র পরিচালক চাষী নজরুল ইসলাম, চিত্র নায়ক আশরাফ উদ্দিন উজ্জল অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top