সকল মেনু

৯ মাস অপারেশন বন্ধ ভোলা সদর হাসপাতালে

   ভোলা প্রতিনিধি : দ্বীপজেলা ভোলার সদর হাসপাতালে নয় মাস ধরে এনেসথেসিয়ার ডাক্তার না থাকায় অপারেশন বন্ধ রয়েছে। সিজারিয়ান অপারেশনসহ জটিল রোগের অপারেশন বন্ধ থাকায় ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে দ্বীপজেলার ২০ লাখ মানুষ।

দেশের মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন এ জেলায় সবচেয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে হত-দরিদ্র মানুষদের। জেলার ২০ লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবার একমাত্র হাসপাতালের চিকিৎসা কার্যক্রম ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, স্বাধীনতার পর ৫০ বেড দিয়ে ভোলা সদর হাসপাতালের কার্যক্রম শুরু হয়। ৯৬ সালে তা ১০০ শয্যায় উন্নীত হয়। কিন্তু প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে চিকিৎসক সংকট লেগে রয়েছে সেখানে। বিশেষ করে গুরুত্বপূর্ণ এনেসথেসিয়া চিকিৎসকের পদটি শূন্য থাকায় মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে দরিদ্র রোগীর চিকিৎসা কার্যক্রম।

চিকিৎসকরা জানান, মাঝে মধ্যে একজন এনেসথেসিয়া চিকিৎসক এলেও বেশিরভাগ সময়ই পদটি শূন্য থাকে। গত বছরের জুলাই থেকে এনেসথেসিয়া চিকিৎসক নেই। এতে বন্ধ হয়ে গেছে মেজর অপারেশন।

সরেজমিন গিয়ে দেখা গেছে, হাসপাতালের অপারেশন থিয়েটারে লাখ লাখ টাকার অপারেশন যন্ত্রপাতি থাকলেও তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না শুধু চিকিৎসকের অভাবে। বিশেষ করে মহিলাদের সিজারিয়ান অপারেশন, হেপেনটাইটিস, পাকস্থলী ও নাভিসহ জটিল রোগের অপারেশন করতে আসা রোগীরা বিপাকে পড়ছেন। এসব অপারেশনের জন্য রোগীরা হাসপাতালে এলেও বাধ্য হয়ে তাদের ফিরে যেতে হচ্ছে। উচ্চমূল্যে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে ঢাকা কিংবা বরিশাল।

এতে দরিদ্র রোগীরা পড়ছে বিপাকে। হাসপাতালের এক কর্মকর্তা বলেন, গর্ভবতী মহিলারা বেশি বিপাকে পড়ছেন। তাদের চিকিৎসা হচ্ছে না হাসপাতালে। বিশেষ করে সিজারিয়ান অপারেশন করতে হচ্ছে ক্লিনিকে। আর জটিল অপারেশন করতে হচ্ছে ভোলার বাইরে গিয়ে।

ভোলা প্রেসক্লাবের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, ভোলার ২০ লাখ মানুষের প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র ভোলা সদর হাসপাতাল। এ সদর হাসপাতালে দিনের পর দিন অপারেশন হয় না একজন এনেসথেসিস্টের অভাবে।

ভোলা সদর হাসপাতালের নার্স নাজনীন আক্তার বলেন, এনেসথেসিস্ট না থাকায় মেজর অপারেশন করতে পারছেন না তারা।

হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাজিদুল ইসলাম বলেন, ছোট ছোট অপারেশন হলেও মেজর অপারেশন হচ্ছে না। নিরূপায় হয়ে রোগীদের রেফার করতে হচ্ছে।

হাসপাতালের আরএমও ডা. বর্নি বলেন, ওটিতে অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি থাকা সত্ত্বেও তা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে। মাঝে-মধ্যে একজন চিকিৎসক এলেও তিনি বেশি দিন ভোলায় থাকছেন না। এজন্য মেজর অপারেশন বন্ধ রয়েছে। তিনি বলেন, গত বছরের জুন মাস থেকে এনেসথেসিয়া চিকিৎসকের পদটি শূন্য রয়েছে।

সিভিন সার্জন অফিস সূত্র জানান, সদর হাসপাতালটি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীত করার কার্যক্রম চলছে। চিকিৎসকের ২২টি পদের বিপরীতে মাত্র ১০ জন চিকিৎসক কর্মরত রয়েছেন। চিকিৎসক সংকটে চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচ্ছে। শুধু সদর হাসপতাল নয়, চিকিৎসক সংকট রয়েছে জেলার ছয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও।

এ ব্যাপারে ভোলার সিভিল সার্জন ডা. ফরিদ আহমেদ বলেন, এনেসথেসিয়া চিকিৎসকের চাহিদার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। কর্তৃপক্ষ দ্রুত  এখানে একজন চিকিৎসক নিয়োগ দেবেন বলে তাদের আশ্বস্ত করেছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top