সকল মেনু

শ্রমিকবান্ধব শ্রমবিধিমালা বাস্তবায়নের দাবিতে জিপিইইউ এর মানববন্ধন

 অাছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: ১৪ নভেম্বর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে গ্রামীণ ফোন এমপ্লোইজ ইউনিয়নের (জিপিইইউ) উদ্যোগে একটি মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত মানববন্ধন কর্মসূচীতে জিপিইইউ নেতৃবৃন্দ শ্রমিকবান্ধব শ্রমবিধিমালা বাস্তবায়নের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করে। মানববন্ধন কর্মসূচীতে বক্তারা বাংলাদেশ শ্রম আইনের সুষ্ঠ বাস্তবায়ন তথা ন্যায়বিচার এবং টেকসই শিল্প, ব্যবসা ও বানিজ্যের উন্ন্য়নের জন্য একটি শ্রমিকবান্ধব শ্রমবিধিমালা অতিসত্তর প্রনয়ণ করার দাবী অনেকদিন ধরে করে আসছে শ্রমিক অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলি। এর আলোকে বাংলাদেশ সরকার শ্রমবিধিমালা প্রণয়নের উদ্যোগ স্বাভাবিকভাবেই সকল সচেতন মহলকে আশান্বিত করেছিল। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত কিছু সংবাদ এবং বিশ্বস্তসূত্রের কিছু তথ্য শ্রমিক সংগঠন হিসেবে উদ্বিগ্ন করে তুলেছে। ইতোমধ্যে অগঞঙই শ্রমিকের সংজ্ঞা এবং বেশকিছু ধারা, উপধারার ক্ষেত্রে পরিবর্তনের কিছু প্রস্তাব সুপারিশ করেছে এবং আমরা আরও জানতে পেরেছি শ্রম মন্ত্রণালয় অগঞঙই এর সুপারিশ হুবহু খসড়া আকারে গ্রহণ করেছেন। আমাদের উদ্বেগ এখানেই । নতুন খসরায় যে প্রস্তাব করেছে তা হলো-
২ (চ) ‘প্রশাসনিক, তদারকি কর্মকর্তা বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে নিয়োজিত’ কোন ব্যক্তি বলিতে বুঝাইবে;

(র) প্রশাসনিক কাজে নিয়োজিত বলিতে এমন একজন পদধারী ব্যক্তিকে বুঝাইবে যিনি কোন প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এক বা একাধিক কাজ বা প্রক্রিয়া পর্যালোচনা বা নির্ধারিত পরিমাণ আর্থিক ক্ষমতা প্রয়োগ বা কোন নির্ধারিত বিষয়ে নিজের ইচ্ছাধীনতা পোষণ বা কোন ব্যক্তি বা শ্রমিকের বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কার্যবিবরণী গ্রহণ করেন;
(রর) তদারকি কাজে নিয়োজিত বলিতে এমন একজন পদধারী ব্যক্তিকে বুঝাইবে যিনি কোন প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন ব্যক্তি বা শ্রমিককে দিক নির্দেশনা বা উপদেশ বা তাহাদের কাজ পর্যালোচনা বা তত্ত্বাবধান করেন;
(ররর) ব্যবস্থাপনামূলক কাজে নিয়োজিত বলিতে এমন একজন পদধারী ব্যক্তিকে বুঝাইবে যিনি কোন প্রতিষ্ঠানে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এক বা একাধিক ব্যক্তি বা শ্রমিকের কাজ বা কোন কাজের পরিধি নিয়ন্ত্রন করেন বা কোন কাজ বণ্টন বা কোন ব্যক্তি বা শ্রমিকের উপর কর্তৃত্ব প্রয়োগ করেন;

অল মোবাইল  টেলিকম অপারেটর অব বাংলাদেশের(এমটব) এর প্রস্তাব গৃহীত হলে প্রাতিষ্ঠানিক খাতের পাশাপাশি তৈরী পোষাক কারখানা সহ অন্যান্য খাতের শ্রমিকগন শুধু ক্ষতিগ্রস্তই হবে না, বাংলাদেশ শ্রম আইনের মূল উদ্দেশ্যই ব্যাহত হবে, কারন দেশে যদি কোন শ্রমিক না থাকে তবে শ্রম আইনের কোন প্রয়োজনীয়তা থাকবে না।

এমটব শ্রমিকের যে সংজ্ঞা প্রস্তাব করেছে, তা গৃহীত হলে আইনগতভাবে কোন প্রতিষ্ঠানে কোন শ্রমিক থাকবে না। উদাহরন হিসাবে বলা যায়, তৈরী পোষাক কারখানায় হেলপার এর কাজ অপারেটর নিয়ন্ত্রন করেন এবং সেইমতে, অগঞঙই এর প্রস্তাবনা গৃহীত হলে তৈরী পোষাক কারখানার অপারেটরগন শ্রমিক সংজ্ঞার বহির্ভূত হবেন। একই সূত্র অন্যান্য কারখানার ক্ষেত্রেও সমভাবে প্রযোজ্য হবে।
এমটব এর প্রস্তাবনা গ্রহন করা হলে এই দেশের শ্রমিকরা বাংলাদেশের  সংবিধানের ৩৪, ৩৭, ৩৮, ৩৯, ৪০ নং অনুচ্ছেদে নিশ্চয়তা দেয়া মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে। একই সাথে উক্ত প্রস্তাবনা সংবিধানের ১৪, ১৫ ও ২০ নং অনুচ্ছেদে বর্নিত রাষ্ট্রপরিচালনার মূলনীতির পরিপন্থী। সুতরাং, আমরা গ্রামীণফোন এমপ্লয়ীজ ইউনিয়ন (এচঊট) দেশের প্রাতিষ্ঠানিক- অপ্রাতিষ্ঠানিক মেহনতি মানুষের পক্ষে অগঞঙই এর প্রস্তাবনা গ্রহন না করার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবী জানাচ্ছি।
আজ ১৪ নভেম্বর ২০১৪ জাতীয় প্রেসক্লাব এর সামনে (এচঊট) সহ ০৮ টি সংগঠনের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে প্রস্তাব করা হয় যে,

‘প্রশাসনিক, তদারকি কর্মকর্তা বা ব্যবস্থাপনামূলক কাজে নিয়োজিত কোন ব্যক্তি বলিতে বুঝাইবে’ মালিক বা ব্যবস্থাপনা বোর্ড কর্তৃক লিখিতভাবে কারখানা/প্রতিষ্ঠানের বিষয়াদির উপর চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা প্রদান করা হইয়াছে- এমন কোন ব্যক্তি যিনি প্রাপ্ত ক্ষমতাবলে কারখানা/প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক/কর্মচারীদের নিয়োগ, বরখাস্ত, অপসারণ এবং চূড়ান্ত পাওনাদি পরিশোধ বা কারখানা/প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন / সেবা নিয়ন্ত্রণমূলক কাজে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট প্রধানতম ব্যক্তি;

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল কৃষক, শ্রমিক ও মেহনতি মানুষের মুক্তি, যাহা আমাদের মহান সংবিধানের প্রস্তাবনাতে সুষ্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। অথচ এমটব এর এই প্রস্তাবনার উদ্দেশ্যই হচ্ছে শ্রমিক ও মহেনতি মানুষকে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা; যাহা সামগ্রিকভাবেই রাষ্ট্র ও সংবিধানের উদ্দেশ্যের পরিপন্থী। বক্তারা মনে করেন, শ্রমিকবান্ধব শ্রমবিধিমালা শ্রমিক মালিক সম্পর্কের ভারসাম্য তথা টেকসই শিল্পোন্নয়ন নিশ্চিত করতে পারে।

ফজলুল হক এর সভাপতিত্বে এবং সুব্রত কুমার দাস এর সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সাধারন সম্পাদক মিয়া মাসুদ, আসিফ ইকবাল, কল্পনা আক্তার, বাবুল আক্তার, মোস্তফা কামাল, ইব্রাহিম হোসেন, আহমেদ মঞ্জুরুদৌলা, মামুন চৌধুরী, আসিফ ইকবাল প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top