সকল মেনু

পঞ্চম দিনের রোমাঞ্চের অপেক্ষায় খুলনা টেস্ট

 হেদায়েত মোল্লা, শেখ আবু নাসের স্টেডিয়াম থেকে : ঢাকা টেস্ট স্বাগতিক বাংলাদেশের সামনে দাঁড়াতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। তিন দিনে জয় পেয়েছে টাইগাররা।

বৃহস্পতিবার খুলনা টেস্টের চতুর্থ দিনের খেলা শেষেও বোঝা যাচ্ছে না কোন দলের পাল্লা ভারী। অলৌকিক কিছু না হলে বাংলাদেশের পরাজয়ের কোন সুযোগ নেই! ম্যাচ ড্র হবে অথবা জয়ের স্বাদ পাবে বাংলাদেশ!

কারণ চতুর্থ দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে ২৬৬ রানে এগিয়ে আছে বাংলাদেশ। শুক্রবার পঞ্চম দিনে দুই ঘন্টা ব্যাটিং করলেও জিম্বাবুয়ের সামনে তিন শতাধিক রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিবে বাংলাদেশ। আর টেস্টে দুই সেশনে তিন শতাধিক রান তুলে জয়ের রেকর্ড জিম্বাবুয়ের নেই বললেই চলে!

চতুর্থ ইনিংসে জিম্বাবুয়ের সর্বোচ্চ রান ৩৩১। ২০১১ সালে বুলাওয়েতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে চতুর্থ ইনিংসে ৩৩১ রান করে জিম্বাবুয়ে। তাও আবার চতুর্থ দিনের শেষ সেশন ও পঞ্চম দিন ব্যাটিং করে তারা। অবশ্য ৩৬৬ রানের জবাবে ৩৪ রানে হেরে যায় স্বাগতিকেরা।

এ ছাড়া হারারেতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ২০০২ সালে ৪৩০ রানের জবাবে ৩১০ রানের বেশি করতে পারেনি জিম্বাবুয়ে। সে হিসেবে শুক্রবার এক রোমাঞ্চকর ম্যাচ দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমিরা।

এদিকে ৬৫ রানে এগিয়ে থেকে ব্যার্টিংয়ে নেমে চতুর্থ দিন শেষে ৫ উইকেটে ২০১ রান তুলে নিয়েছে টাইগাররা। মাহমুদুল্লাহ ৬৩ ও শুভাগত হোম ২৩ রানে অপরাজিত থেকে দিন শেষ করেছেন। ষষ্ঠ উইকেটে এই জুটির সংগ্রহ ২৩ রান।

তবে দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতে ওপেনার তামিম ইকবালকে হারায় বাংলাদেশ। ২৫ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ২০ রান করে সাজঘরে ফিরেন তিনি। দ্বিতীয় উইকেটে ৪৭ রান যোগ করেন শামসুর রহমান শুভ ও মুমিনুল হক। দলীয় ৭৫ রানে ২৩ রান করা শামসুর রহমান সাজঘরের পথ ধরেন।
তৃতীয় উইকেটে আবারো দলের হাল ধরেন মুমিনুল। এবার তার নতুন সঙ্গী মাহমুদুল্লাহ। ৫৬ রান যোগ করেন তারা। এ সময়ে ক্যারিয়ারের সপ্তম অর্ধশতক তুলে নেন মুমিনুল। কিন্তু অর্ধশতকের পর আর টিকতে পারেননি তিনি। ৯৭ বলে ৬ বাউন্ডারিতে মুমিনুলের ৫৪ রানের ইনিংসটি শেষ হয় ওয়ালারের বলে।

দলীয় ১৩১ রানে মুমিনুলের বিদায়ের পর ১৪৫ রান পর্যন্ত যেতেই আরো ২ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।  প্রথম ইনিংসে শতক পাওয়া সাকিব ৬ ও মুশফিক শূন্য রানে বিদায় নেন। দ্রুত ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ।

সেখান থেকে দলকে টেনে তুলেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও শুভাগত। ফর্মে থাকা মাহমুদুল্লাহ ঠান্ডা মাথায় ক্যারিয়ারের ১১তম অর্ধশতক তুলে নেন। সর্বশেষ সাত ইনিংসে এটি মাহমুদুল্লাহর পঞ্চম অর্ধশতক।

অপরপ্রান্তে থাকা শুভাগত স্বাগতিক দর্শকদের হতাশ করেননি। মাহমুদুল্লাকে সঙ্গী করে দিনের শেষ প্রান্তে ৫৬ রানের জুটি গড়ে বাংলাদেশকে খাদের কিনারা থেকে রক্ষা করেন।

এর আগে সাকিবের পাঁচ উইকেটে ৩৬৮ রানে গুটিয়ে যায় জিম্বাবুয়ে। চতুর্থ দিনের পঞ্চম ওভারেই জিম্বাবুয়ে শিবিরে আঘাত করেন সাকিব। ওভারের প্রথম বলেই সরাসরি বোল্ড হন হ্যামিলটন মাসাকাদজা। আগের দিন ক্যারিয়ারের চতুর্থ শতকের স্বাদ পাওয়া মাসাকাদজা ১৫৮ রানে সাজঘরে ফিরেন। ৩২৬ বলে ১৭ চার ও ২ ছক্কায় ১৫৮ রান করেন। ক্যারিয়ারের এটি তার সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

একই ওভারের শেষ বলে আরেকটি উইকেট নেওয়ার সুযোগ পান সাকিব।  মাসাকাদাজার পরিবর্তে ব্যাটিংয়ে আসা ওয়ালার পঞ্চম বলে শর্ট ফাইন লেগে ক্যাচ তুলে দেন। সহজ ক্যাচ হাতছাড়া করেন পেসার শাহাদাত হোসেন।   তবে ওয়ালারকে বেশিক্ষণ টিকতে দেননি সাকিব। ব্যাক্তিগত ৬ রানে সাকিবের বলে মুশফিকের হাতে ক্যাচ দেন ওয়ালার। ম্যাচে এটি ছিল সাকিবের পঞ্চম উইকেট। এ নিয়ে ১৩ বার পাঁচ উইকেট পেলেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। জিম্বুাবুয়ের বিপক্ষে এটি তার দ্বিতীয় পঞ্চম উইকেট শিকার।

সাকিবের পর সকালে দ্যুতি ছড়ান পেসার রুবেল হোসেন। আগের দিন ভালো বোলিং করেও উইকেট না পাওয়ার আক্ষেপে রুবেল ১২৪তম ওভারে ২ উইকেট তুলে নেন। দ্বিতীয় বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফিরেন চাতারা (০)। পঞ্চম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন নাতসাই এমশ্যাংউই (০)।

উইকেটের একপ্রান্তে আসা-যাওয়ার মিছিল লেগে থাকলেও অন্যপ্রান্তে অবিচল থাকেন চাকাবা। ক্যারিয়ারের প্রথম শতক তুলে নেন তিনি। শতকের পর ইনিংসটি আর বড় করতে পারেনি চাকাবা। ঢাকা টেস্টের নায়ক তাইজুলের বলে এলবিডাব্লিউর শিকার হন চাকাবা। ২৩২ বলে ১৩ বাউন্ডারিতে ১০১ রান আসে ডানহাতি এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানের ব্যাট থেকে।

শেষ পর্যন্ত ৩৬৮ রানে শেষ হয় জিম্বাবুয়ের ইনিংস। ৬৫ রানের লিড পায় বাংলাদেশ। এর আগে টসে জিতে বাংলাদেশ ৪৩৩ রান করে। শতক হাঁকান তামিম ইকবাল (১০৯) ও সাকিব আল হাসান (১৩৭)। ৫৬ রান আসে মাহমুদউল্লাহর ব্যাট থেকে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top