সকল মেনু

মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস আমরা ক্ষমতায় গিয়ে বন্ধ করেছি- প্রধানমন্ত্রী

অাছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা: আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মুক্তিযুদ্ধের বিকৃত ইতিহাস শেখানোর মাধ্যমে নতুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছিল, দেশকে পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়া হচ্ছিল। আমরা ক্ষমতায় গিয়ে সে ধারা বন্ধ করেছি। এখন শিশু-কিশোররা সঠিক ইতিহাস শিখছে। তাদেরকে বড় মানুষ হয়ে ওঠার জন্য সব উদ্যোগ নিয়েছি আমরা। শিশু অধিকার রক্ষায় কাজ করছি। মঙ্গলবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে শেখ রাসেল শিশু-কিশোর পরিষদ আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ পুত্র শেখ রাসেলের ৫১তম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে  তিনি এসব কথা বলেন। শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উন্নত, সুখী-সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে। তার সরকার এ লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে তিনি সোনার বাংলা গড়তে সোনার মানুষ হয়ে ওঠার আহবান জানান শিশু-কিশোরদের প্রতি। শেখ রাসেলের বড় বোন শেখ হাসিনা ছোট ভাইয়ের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। রাসেলবিহীন ৩৯ বছরের বেদনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এখন নতুন প্রজন্মের মাঝেই আমি আমার রাসেলকে খুঁজে পাই।  একদিন তোমরাই দেশের নেতৃত্ব দেবে উল্লেখ করে নতুন প্রজন্মকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় যোগ্য মানুষ হয়ে গড়ে ওঠার আহবান জানান তিনি। তিনি বলেন, তার বাবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব বারট্রান্ড রাসেলের ভক্ত ছিলেন। তার বইয়ের অনুবাদ বাবা মাকে পড়ে শোনাতেন। এ অনুপ্রেরণা থেকে মা তার ছোট সন্তানের নাম রাসেল রাখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার বাবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারা জীবন দেশের জন্য দেশের মানুষের জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি রাজনৈতিক কারণে বার বার জেল খেটেছেন, আর আমরা ভাই-বোনেরা পিতৃস্নেহ বঞ্চিত হয়েছি। বিশেষ করে ছোট্ট শেখ রাসেল বার বার আব্বাকে খুঁজতো। জেলখানায় মাসহ আমরা বাবার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েও ছোট্ট শিশুটিকে কষ্ট পেতে দেখেছি।  ১৯৬৬ সালের ৮ মে বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। ছোট্ট রাসেল তখন কিছুই বুঝতো না। গ্রেফতার হওয়ার পর রাসেল শুধু বাবাকে খুঁজতো। আমরা যখন বাবাকে জেলখানায় দেখতে যেতাম, রাসেলও আমাদের সঙ্গে যেতো। সেখানে রাসেল বাবাকে না নিয়ে ফিরে আসতে চাইতো না। তখন আমার মা তাকে শান্ত্বনা দিয়ে বলতেন, আমিই তোমার বাবা, আমিই তোমার মা। অবুঝ রাসেল একবার আব্বাকে আর একবার আম্মাকে বাবা বলে ডেকেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংগ্রামের মধ্যেই ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধু গ্রেফতার হন। পরবর্তীতে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে পুরো পাকিস্তানে আওয়ামী লীগ জয়লাভ করে। এর আগে ১৯৬৯ সালে আইয়ুব খানের পতন হয়। তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকরা আমার বাবা-মা, ছোট ভাই রাসেলসহ পরিবারের সদস্যদের হত্যা করলো। বঙ্গবন্ধুর কোনো চিহ্ন যে না থাকে সেজন্যই ছোট্ট রাসেলকেও বাঁচিয়ে রাখেনি ঘাতকরা। রাসেল বেঁচে থাকলে আজ তার ৫০ বছর হতো। কিন্তু বুলেট তাকে বেঁচে থাকতে দেয়নি।  শেখ হাসিনা বলেন, ১৬ ডিসেম্বর দেশ স্বাধীন হয়। আমাদের পরিবারকে পাকিস্তানিরা মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময়টা ধানমণ্ডিতে বন্দি করে রেখেছিল। সে সময়ও রাসেল কিছু বুঝতো না। শুধু কষ্ট পেতো, বাবাকে খুঁজতো, খেলতে পারতো না বলেও কষ্ট পেতো। ১৭ ডিসেম্বর আমরা বন্দিদশা থেকে মুক্ত হই। এরপর রাসেল যখন গ্রামে যেতো তখন ঢাকা থেকে জামা-কাপড় নিয়ে যেত। সেগুলো গ্রামের শিশুদের দিয়ে দিতো। গরিব শিশুদের কখনও রাসেল অবহেলা করতো না। সবাইকে নিয়ে ঘুরে বেড়াতো, খেলতো। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ, ছোট্ট রাসেলের জীবনবোধ থেকে শিক্ষা নিতেও শিশুদের প্রতি আহবান জানান প্রধানমন্ত্রী।  অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি প্রধানমন্ত্রী আলোচনা সভা শেষে কৃতী ছাত্র-ছাত্রী এবং দাবা, চিত্রাঙ্কন ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top