সকল মেনু

চামড়া পাচার হয়ে যাচ্ছে!

  আনিসুর রহমান : দেশের বিভিন্ন সীমান্তবর্তী এলাকায় চামড়া পাচারের অভিযোগ করেছেন আড়তদাররা। প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে কোরবানির পর দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে চামড়া ঢাকায় আসতে পারেনি। এখন পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে চামড়া এসে ঢাকায় পৌঁছায়নি। আড়তদারদের অভিযোগ, সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে চামড়া পাচার হয়ে যাচ্ছে।   আড়তদাররা বলছেন, কোরবানির পর তাদের সঙ্গে দেশের বিভিন্ন জেলার চামড়া ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা হয়েছিল। মৌসুমি ব্যবসায়ীদের বলে দিয়েছিলেন, এই মুহূর্তে ঢাকায় চামড়া নিয়ে আসতে না পারলে সংরক্ষণ করতে। এ ছাড়া চড়া দামের কারণে ট্যানারি মালিকরাও এই মুহূর্তে চামড়া কিনছেন না। ফলে জেলার অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী লোকসানের আশঙ্কায় প্রতিবেশী দেশে চামরা পাচার করে দিচ্ছেন। লালবাগের পোস্তার আড়তদার এম ডি এন্টারপ্রাইজের মো. শাবু বলেন, ‘প্রতিকূল আবহাওয়ার কারণে মফস্বল এলাকা থেকে চামড়া আসতে পারেনি। এ ছাড়া অনেক মৌসুমি ব্যবসায়ী চড়া দামে চামড়া কিনেছেন। কিন্তু ট্যানারি মালিকরা এখনো সংগ্রহ না করায় মৌসুমি ব্যবসায়ীরা চামড়া পাচার করে দিচ্ছেন। আমরা খবর পেয়েছি, বিশেষ করে সিলেট, রংপুর বিভাগের সীমান্ত এলাকায় চামড়া পাচার হচ্ছে। তাই এ ব্যাপারে সরকারকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘আমরা এবং মৌসুমি ব্যবসায়ীরা বেশি দামে চামড়া কিনলে তো সমস্যা নেই। আমরা ব্যবসা করতে নেমেছি। ট্যানারি মালিকরাও ব্যবসা করতে নেমেছে। তাই তাদের চামড়া কিনতেই হবে।’ তিনি আরো বলেন, প্রতিবছরই বেঁধে দেওয়া দরের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনতে হয়। এবারও বেঁধে দেওয়া দরের চেয়ে প্রতি বর্গফুটে ২০-২৫ টাকায় বেশি কিনেছি। আশা করছি, কাল-পরশু থেকে চামড়া বেচাকেনা শুরু হবে। এদিকে বাংলাদেশ হাইড অ্যান্ড স্কিন মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলী হোসেন বলেন, ‘আমরা জেলা চামড়া ব্যবসায়ীদের বলে দিয়েছি যে ঢাকায় চামড়া নিয়ে আসতে দেরি হলে কোরবানির ৫-৬ ঘণ্টার ভেতরে তারা যেন চামড়া সংরক্ষণ করে। তারা সে অনুযায়ী কাজ করছে। চামড়া পাচার হচ্ছে না। আড়তদাররা ঢাকায় চামড়া আসতে দেরি দেখেই এমন অভিযোগ করছেন।’

তিনি বলেন, ‘গত বছর ২০ থেকে ২৫ শতাংশ চামড়া পচে গেছে। তাই এ বছর ঢাকায় কোনো চামড়া পচবে না। জেলা ব্যবসায়ীদেরও আমরা বলে দিয়েছি চামড়ায় যাতে পচন ধরতে না পারে, সে অনুযায়ী কাজ করতে। তবু ১০ থেকে ১৫ শতাংশ চামড়া পচনের আশঙ্কা আছে।’

ট্যানারি মালিকরা বেশি দামে চামড়া কিনবেন কি না, সে সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মৌসুমি ব্যবসায়ীদের কারণে আড়তদাররা বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে বেশি দামে চামড়া কিনতে বাধ্য হয়েছে। এখন কাল-পরশু বোঝা যাবে, ট্যানারি মালিকরা চামড়া চড়া দামে কিনতে রাজি হয় কি না। তবে আমরা আশা করছি, বাজারদর অনুযায়ী তারাও চামড়া সংগ্রহ করবে।’

এদিকে হটনিউজ২৪বিডি.কম’র পঞ্চগড়, দিনাজপুর, নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর ও সিলেট এলাকার প্রতিনিধিদের কাছ থেকে জানা গেছে, অত্র এলাকার সীমান্তে কড়া নিরাপত্তা। সীমান্তে এখন এত কড়া নিরাপত্তা বসিয়েছে যে একটি পাখি ঢোকারও সুযোগ নেই। বেশিরভাগ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। ফলে এখন কোনো কিছু পাচারের সুযোগ নেই।

হটনিউজ২৪বিডি.কম’র রাজশাহী জানিয়েছেন, চামড়া পাচারের আশঙ্কায় বৃহত্তর রাজশাহী অঞ্চলের সীমান্ত সিলগালা করা হয়েছে। পাচার প্রতিরোধে ঈদুল আজহার আগেই সীমান্ত এলাকাগুলোতে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আর এ কারণে চলতি কোরবানি মৌসুমে রাজশাহী অঞ্চল দিয়ে চামড়া পাচারের কোনো ঘটনা ঘটেনি।

সীমান্ত দিয়ে চামড়া পাচার প্রতিরোধে ঈদের আগেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে রাজশাহী জেলা প্রশাসন বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়। রাজশাহীর গোদাগাড়ী, চারঘাট, বাঘা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ, ভোলাহাট, নওগাঁর সাপাহার, ধামইরহাট ও পোরশা উপজেলার সীমান্ত এলাকাগুলো ঈদের আগে থেকেই সিলগালা করা হয়েছে। সীমান্ত বিওপিগুলোতে বিজিবি সদস্যের সংখ্যা বাড়ানো হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top