সকল মেনু

সাগরের হাতে প্ল্যাকার্ড !

 সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল থেকে,মেহেদি হাসান: যাত্রা পথে সতর্ক হউন; ঈদের আনন্দ যেন বেদনা না হয়। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে উঠবেন না। সাবধানের মার নেই; একটি দুর্ঘটনা সারা জীবনের কান্না। জনসচেতনতামূলক এমন কিছু প্ল্যাকার্ড হাতে ও গলায় জড়িয়ে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে লঞ্চের ওপর দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেলো এক যুবককে।রাজধানীর সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল সরেজমিনে ঘুরে দেখার সময় একটি লঞ্চের ওপর এক যুবককে  দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। কথা হলো তার সাথে। তিনি জানালেন তার নাম মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান সাগর । ঢাকার লালমাটিয়ায় থাকলেও তার নিজ জেলা কিশোরগঞ্জ। থানা ভৈরব, গ্রাম জামালপুর।প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকার বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে  মোহাম্মদ মোখলেছুর রহমান সাগর  বলেন, প্রতিবছর বাস, ট্রেন, লঞ্চ দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। কারণগুলো যদি খুঁজতে যান তাহলে দেখবেন অতিরিক্ত যাত্রী এবং যাত্রীদের অসাবধানতার কারণেই দুর্ঘটনাগুলো হচ্ছে। একটু সবুর করে অতিরিক্ত যাত্রী না হলেই আমার মনে হয় দুর্ঘটনা অনেকটা এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব। কিন্তু আমরা সচেতন হচ্ছি না। প্রশাসন যতই চেষ্টা করুক মানুষ যদি সচেতন না হয় তাহলে কখনোই সফলতা আসবে না। তিনি বলেন, মানুষ কিন্তু এখন অনেক সচেতন। তবে সমস্যাটা হলো সবাই চায় আমি আগে যাবো। আর এই আগে যাবার প্রতিযোগিতার কারণেই অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। নাগর বলেন, মানুষকে  আমি স্মরণ করিয়ে দিতে চাই যে, তার জীবনটা অনেক মূল্যবান, শুধু তার জন্য নয়, তার পরিবারের জন্যও। আমার এই লেখাগুলো পড়ে যদি একজন মানুষও  সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে  লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী হবে না তাহলেই আমার কষ্ট স্বার্থক হবে।
Shador_Ghat_bg
কথার এক পর্যায়ে সাগর বাংলানিউজকে জানান, তিনি তেজগাঁও কলেজে হিসাববিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স ১ম বর্ষের ছাত্র।

কবে থেকে তিনি এই কাজ করছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুদিন আগে মাওয়ায় অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে পিনাক-৬ লঞ্চ  ডুবে যায়। তখন থেকেই আমার বারবার মনে হয়েছে আমি  যেহেতু একজন সচেতন মানুষ সুতরাং অন্যকেও সতর্ক করা আমার দায়িত্ব। আমি আমার দিক থেকে দায়িত্ব পালন করার জন্যই এই পথ বেছে নিয়েছি।  আমি চাই একজন মানুষও যেনো আর অতিরিক্ত যাত্রী হয়ে চলাচল না করে।

কোনো ধরনের বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিড়ম্বনা একটু আছেই। অনেকে মনে করে আমি কোনো কোম্পানির হয়ে  কাজ করছি। লোকজন এসে জিজ্ঞেস করে ভাই আপনি কোন কোম্পানির লোক। আমার অনেক সহপাঠী আমকে নিয়ে হাসাহাসি করে। অনেকে আবার পাগল বলেও হেসে উড়িয়ে দেয়। তবে আমি কিছু মনে করি না। মনে করলে কাজটা করতে পারতাম না।

তিনি আরও বলেন, সবাই যে একরকম তা কিন্তু নয়। অনেকে আবার আমাকে ওয়েলকামও জানায়। বলে ভাই চালিয়ে যান। তবে কারো বাহবা পাবার আশায় আমি এই কাজ করছি না। শুধুমাত্র নিজের বিবেকের তাড়নায় কাজটা করে যাচ্ছি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top