সকল মেনু

রহস্যময় চার খুনের নেপথ্যে…

   নিজস্ব প্রতিবেদক : কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাহপুর কদমপুর গ্রামে রহস্যময় চার খুনের ঘটনার নেপথ্যের কারণ খুঁজে পেয়েছে পুলিশ। ডাকাতির মালামাল ও টাকার ভাগ-বাটোয়ারা এবং সহকারিদের স্ত্রীকে ধর্ষণের কারণে অন্তঃদ্বন্দ্বের জেরে নির্মমভাবে খুন হন একই পরিবারের দুই শিশুসহ চারজন। নিহত পরিবারের প্রধান সাজু এই ডাকাত দলের দলনেতা বলে জানা গেছে। শুক্রবার দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে ঢাকা জেলা পুলিশ আয়োজিত গ্রেফতার পরবর্তী এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান হাবিব এসব তথ্য জানান। গ্রেফতারকৃতরা হলো জনি (৩০), সিএনজি চালক সুমন (৩০), জুতা দোকানদার মজিদ (২৫), সিএনজি চালক রফিক (৩২), সুমনের স্ত্রী রানি বেগম (২৫), সুমনের বোন মুক্তা বেগম (২৫) ও জনির মা শাহেদা আক্তার আম্বিয়া (৩৬)।

এ সময় পুলিশ সুপার জানান, নিহত সাজু অপরাধী চক্রের দলনেতা। এই চক্রটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি করত। এদের বেশ কয়েকজন সদস্য রয়েছে। মাদক ব্যবসার সঙ্গেও এরা জড়িত। তারা কিছুদিন আগে নবাবগঞ্জের চুরাইন বাজারে একটি সোনার দোকানে ডাকাতি করে। সেই মালামাল ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে সমস্যা হয়। তা ছাড়া সুমনের স্ত্রী ও রফিকের স্ত্রীর সঙ্গে পরকিয়া ও অবৈধ মেলামেশার ঘটনায় শত্রুতা আরো বাড়ে।

তিনি আরো জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর রাতে পরিকল্পিতভাবে তারা কয়েকজন মিলে কদমপুরের ওই ভাড়া বাসায় আসে। তারা সেখানে সবাই মিলে ইয়াবা সেবন করে। এক পর্যায়ে মাতাল হয়ে যায়। প্রথমে সাজু আহমেদকে কয়েকজন মিলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।

জনি ও তার মা শাহিদা আক্তার আম্বিয়াকে শুক্রবার ভোরে মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগর থেকে, প্রায় একই সময়ে সুমন ও তার স্ত্রীকে গাজীপুরের জয়দেবপুরের মির্জাপুর থেকে, মজিদকে কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাপুর থেকে, রফিককে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থেকে ও সুমনের বোন মুক্তা বেগমকে যাত্রাবাড়ী থেকে আটক করা হয়।

ঢাকা জেলা পুলিশের একটি দল ঘটনার পর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রাখে। শুক্রবার ভোরে পুলিশের কয়েকটি দল আসামিদের বিভিন্ন জেলা থেকে আটক করতে সক্ষম হয়। কেরানীগঞ্জ থানায় নিহত সাজুর ভাই বশির উদ্দিনের করা মামলায় তাদেরকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। আদালতে পাঠিয়ে তাদের জিঞ্জাসাবাদের জন্য রিমান্ড চাওয়া হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য, গত ২৪ সেপ্টেম্বর কেরানীগঞ্জের কদমপুর গ্রামের একটি বাসা থেকে একই পরিবারের চারজনের লাশ হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। ওই দিন নিহতদের পরিচয় পাওয়া না গেলেও পরের দিন তাদের সবার পরিচয় নিশ্চিত করে পুলিশ। এরা হলো ডাকাত সাজু (৩৫), তার স্ত্রী রঞ্জু বেগম (২৮), ছেলে ইমরান (৭) ও মেয়ে সানজিদা (২)। তাদের বাসা পঞ্চগড় জেলার দেবীগঞ্জ থানার সারিকান্দি গ্রামে।

ডাকাতির টাকা ও মালামাল ভাগাভাগি নিয়ে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের সময় বাড়ির কেয়ারটেকার সোহেল ও রিকশাচালক আক্কাসকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্য মতে পুলিশ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কয়েকজনকে আটক করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top