সকল মেনু

নতুন মেরুকরণ রাজনীতিতে !

 আছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম: নতুন মেরুকরণের পথে দেশের রাজনীতি। দীর্ঘদিন পর রাজনৈতিক দল এবং জোটগুলো ক্ষমতায় যাওয়ার প্রশ্নে নড়ে-চড়ে বসতে শুরু করেছে। সেই সঙ্গে চলছে দল গঠন ও ভাঙার খেলা। ৫ জানুয়ারির সাধারণ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার ঠিক আগ মুহূর্তে ১৪ দল থেকে বেরিয়ে যায় জাতীয় পার্টি। পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ঘটনাবহুল ডিগবাজির পরও রওশন এরশাদ জোটকে সমর্থন দিয়ে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় থাকতে সহায়তা করে। পাল্টে যায় দলটির অভ্যন্তরীণ চিত্রপট। রুহুল আমিন হাওলাদারকে সরিয়ে মহাসচিব করা হয় জিয়া উদ্দিন বাবলুকে। সংসদের বিরোধী দলের ভূমিকাকে আরো গঠনমূলক করতে সরকার থেকেও বেরুতে চাইছে জাতীয় পার্টি। এজন্য তাজুল ইসলাম এবং মশিউর রহমানের দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্যের পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া এবং মন্ত্রিসভায় থাকা-না থাকা নিয়ে নাটকও হয়ে গেল শোরগোল করে। তবে এর সবই হয়েছে জাতীয় পার্টিকে এককভাবে শক্তিশালী করতে- এমনই দাবি করেছেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ। দলকে আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আনতে দলের মধ্যে এই মেরুকরণ চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

শুধু জাতীয় পার্টি নয়, দেশের রাজনীতিতে একটি নতুন ধারা সূচনা করতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে পাঁচটি দল। ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে গণফোরাম, সিপিবি, বাসদ, জেএসডি এবং নাগরিক ঐক্য।

সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন জোটের বাইরে একটি বিকল্প রাজনৈতিক শক্তি গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন তারা। শুধু ক্ষমতার লক্ষ্য নয়, তারা চায় রাষ্ট্র পরিচালনায় গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া জোরদার করতে।

এই গণতন্ত্রের কথা বলে ভেঙে যেতে বসেছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটও। জোটের দলগুলোর চাওয়া-পাওয়ার হিসেবে অমিল হওয়ায় ভেঙে যাচ্ছে জোট।

ইতিমধ্যে বিএনপিকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এনডিপি) একাংশ। জোটে রাজনৈতিক স্বচ্ছতা নেই- এমন অভিযোগ এনডিপির নতুন চেয়ারম্যান আলমগীর মজুমদারের। জোটের মধ্যে অধিকতর গণতান্ত্রিক চর্চাসহ পাঁচ দফা দাবি করেছেন তিনি। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই দাবি না মানলে ২০ দলীয় জোটে আর থাকছে না এনডিপি। গত ২৪ আগস্ট এই জোট থেকেই বেরিয়ে গেছে শওকত হোসেন নিলুর ন্যাশনালিস্ট পিপলস পার্টি (এনপিপি)।

অন্যদিকে, ২০ দলের অন্যতম বৃহৎ শক্তি জামায়াতের সঙ্গে নানা ইস্যূতে অবিশ্বাস আর রাজনৈতিক দূরত্ব তৈরি হয়েছে বিএনপির।

আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় জোটেও চলছে নতুন হিসাব- নিকাশ। সরকারে আসার পর ফের জোটকে শক্তিশালী করার চিন্তাভাবনা করছে আওয়ামীলীগ। ঈদের পরেই জোটের নেতারা বসে একটি কর্মকৌশল নির্ধারণ করবে বলে জানা গেছে।

১৪ দলের অন্যতম নেতা বেসামরিক বিমান ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলনসহ যে কোনো রাজনৈতিক কৌশল মোকাবেলায় ১৪ দলীয় জোট আরো শক্তিশালী ভূমিকা নেবে। এজন্য জোটকে শক্তিশালী করা হবে বলে জানান তিনি।

রাজনৈতিক বিশ্লেষক সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেছেন, এই মুহূর্তে দেশে একটি রাজনৈতিক মেরুকরণ চলছে। সব দল এবং জোটগুলো নিজেদের গুছিয়ে নিচ্ছে। এ জন্যই শুরু হয়েছে ভাঙা-গড়ার রাজনৈতিক খেলা।

একাদশ সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এখনই বিএনপি, জাতীয়পার্টি এবং জামায়াতসহ অন্য রাজনৈতিক দলগুলো সাংগঠনিকভাবে নিজেদের ঐক্যবদ্ধ রাখার চেষ্টা করছে। ঈদের পর অনেক রাজনৈতিক দলই তাদের দল গোছানোর কাজ শুরু করবে। অভিশংসন বিলকে ঘিরে গত একমাসে যে রাজনৈতিক তৎপরতা চোখে পড়েছে, তার ওপর ভিত্তি করে এমন ধারণা করছেন সৈয়দ মাহবুবুল আলম।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top