সকল মেনু

ভোলার মনপুরায় ঝুপড়ি ঘরে চলছে ডাক বিভাগের কার্যক্রম

 এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা: ভোলার মনপুরা ডাক বিভাগের বেহাল দশা। কার্যক্রম চলছে ঝুপড়ি ঘরে, খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে। টিনের ঘরে ভাড়ায় পরিচালিত হচ্ছে ডাক বিভাগের কার্যক্রম। ঝুঁকিপূর্ণ টিনের ঘরে পরিচালিত সরকারের এই গুরুত্বপুর্ণ সেক্টরের যাবতীয় ডকুমেন্ট বর্তমানে অরক্ষিত। ফলে উৎকন্ঠার মধ্যে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এভাবে চলতে থাকলে ডাক বিভাগের সুনাম ও ঐতিহ্য হারানোর পাশা-পাশি বড় ধরণের দুর্ঘটনার আশংকা করছেন সচেতন মহল। সূত্রে জানা যায়, মনপুরা উপজেলার সদরে অবস্থিত হাজির হাট বাজারের দক্ষিণে ডাকবাংলা রোডে বিদ্যুত অফিসের পাশে একটি ছোট দেয়াল উপরে টিনের নির্মিত ঘরে পরিচালিত হচ্ছে উপজেলার প্রধান ডাক বিভাগের কার্যক্রম। ঘরটি এতই ছোট যে, এটিকে দেখলে বোঝাই যায় না যে এখানে সরকারের একটি গুরুত্বপুর্ণ কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ঘরের ভেতরে ঢুকে দেখা যায় অফিস সংশ্লিষ্টরা কাজে ব্যস্ত। কিন্তু ঘরের মেঝে স্যাঁত স্যাঁতে অবস্থা। এক রুমের এই ঘরটির টিন দিয়ে নির্মিত। ফলে ঝুঁকির মধ্যে পরিচালিত হচ্ছে এর কার্যক্রম। অফিস কর্তার সাথে আলাপ করে জানা যায়, এখানে সাধারণ চিঠি, জিইপি বিলি, পার্সেল, বিপি পার্সেল, ইএমপিএস ইস্যু ও বিলি, মানি অর্ডার ইস্যু-বিলি, ডাক জীবন বীমা, পোস্টাল অর্ডার, ডাকটিকেট বিক্রয় ও রাজস্ব টিকেট বিক্রয় করা হয়। ঝুঁকিপুর্ণ এই টিনের ঘরে বোর্ডের জেএসসি, জেডিসি, এসএসসি, এইচএসসি, দাখিল, আলিম, ডিগ্রী ও ফাজিল পরীক্ষার পেপার ও উত্তর পত্র সংরক্ষণ করে রাখা হয়। পরে এসব গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার পেপার ও উত্তরপত্র বোর্ডে প্রেরণ করা হয়। এসব কাজ পরিচালনা করতে গিয়ে সব সময় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হয় তাদের। অফিসের কাজ শেষ করলেও রাত্রি বেলায় দুশিন্তা থাকতে হয় সংশ্লিষ্টদের। এজন্য অফিস কর্তা নিজেই ঘরের পেছনের অংশে থাকেন। অন্যদিকে বর্তমান ভাড়ায় চালিত অফিসটি থেকে মাত্র ১শ’ গজ পশ্চিমে ডাক বিভাগের নিজস্ব দ্বিতল ভবন ছিল। মেঘনার ভাঙ্গণের অজুহাত দেখিয়ে তড়িঘড়ি করে নাম মাত্র মূল্যে দরপত্র আহব্বান করে মুহুর্তের মধ্যে কার্যাদেশ নিয়ে নতুন এই ভবনটি ভেঙে ফেলা হয়। অথচ, ভবনের স্থান থেকে মেঘনার দুরত্ব এখনও প্রায় ৫শ’ গজ। ব্লক ফেলায় মেঘনার ভাঙ্গন এখন মোটামুটি রোধ হয়েছে বলা যায়। পোস্ট অফিসের দ্বিতল ওই ভবনটি ভাঙ্গার ১০ বছর পার হলেও অদ্যাবধি নতুন আরেকটি ভবনের উদ্যোগ গ্রহণ করেনি সরকার। এ ব্যাপারে পোস্টমাস্টর প্রলয় কুমার দে বলেন, আমরা ঝুঁকির মধ্যে অফিসের কার্যক্রম পরিচালনা করছি। পাবলিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার সময় আমরা সবচেয়ে বেশি আতংকিত থাকি। পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সকল পরীক্ষার পেপার ও উত্তর পত্রগুলো এক রাত পোস্ট অফিসেই থাকে। পরের দিন যোগাযোগ ব্যবস্থা ভাল হলে আমরা প্রয়োজনীয় চিঠি পত্র, পেপার ও সরকারি ডাক ভোলা সদরের উদ্দেশ্যে পাঠিয়ে দেই। দ্রুত একটি ভবন নির্মাণের জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সার্বিক সহযোগীতা কামনা করছেন তিনি। এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্যাহ আল বাকী বলেন, এ বিষয়ে পোস্ট মাস্টার আমাকে কিছুই জানান নি। এখন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। উপজেলা পরিষদে আপাতত কোন রুম খালি নেই। চেষ্টা করব পোস্ট অফিসের জন্য একটি রুমের ব্যবস্থা করার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top