সকল মেনু

নওগাঁয় আমন খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক

  নওগাঁ প্রতিনিধি : দীর্ঘদিন পর ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় আমন খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন নওগাঁর কৃষকরা। এখন প্রতিটি আমন খেত কৃষকের পদাচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে। মাঠে মাঠে কৃষকরা ধান খেতের আগাছা নিধন করছেন। কেউবা আবার আমন খেতে উপরি ভাগে ইউরিয়া প্রয়োগ করছে। আবার যারা পানির অভাবে দীর্ঘদিন ধরে জমিতে আমন চারা রোপণ করতে পারেননি তারাও চারা রোপণে কোমর বেঁধে মাঠে নেমে পড়েছেন। নওগাঁ কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারে নওগাঁ জেলায় ২ লাখ ৩ হাজার ৮৭৯ হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয় কিন্তু এ পর্যন্ত অর্জিত হয়েছে ১ লাখ ৮৬ হাজার ৩১০ হেক্টর তবে পরে কৃষকেরা বিলম্বে আরো আমন চাষ করার সম্ভাবনা থাকায় লক্ষ মাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে ২ লাখ ৬ হাজার হেক্টরে দাঁড়াবে বলে জানা গেছে। আমন চাষে কৃষকরা সাধারণত বৃষ্টির ওপরে পুরোপুরি নির্ভর করেন। জমিতে আমন চারা রোপণ করা হয় মধ্য জুলাই থেকে মধ্য আগস্ট পর্যন্ত।

এবারে কম ও অনিয়মিত বৃষ্টিপাতের কারণে কৃষকরা জমিতে আমন চারা রোপণে হাঁপিয়ে উঠেন। কেননা শীলাবৃষ্টিতে বোরোর ক্ষতি হওয়ায় ও ধানের বাজার মূল্য আশানুরূপ না পাওয়ায় কৃষকরা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন।

তাই বলে তো আর কৃষকরা ঘরে বসে থাকতে পারেন না। এ কারণে তারা সংসারের সবকিছু বিকিয়ে আমন আবাদে মনোনিবেশ করেন।

জমিতে কৃত্রিম সেচ দিয়ে কিছু কৃষক আমন চারা রোপণ করলেও বেশিরভাগ কৃষকই সেচ সুবিধা না পাওয়ায় আমন চারা রোপণ করতে পারেননি। ফলে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হবে কী-না এ নিয়ে কৃষি অফিস ও কৃষকরা সংশয় প্রকাশ করেন।

বর্ষা শেষে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় কৃষি অফিস ও কৃষকের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার হয়। এলাকা পরিদর্শনকালে দেখা গেছে যেসব কৃষক জমিতে আগাম আমন চারা রোপণ করেছেন তাদের কেউ কেউ আগাছা পরিষ্কার করছেন।

কেউবা আবার আমন খেতে ইউরিয়া প্রয়োগ করছেন। কথা হয় বদলগাছী উপজেলার বিলাশবাড়ী ইউনিয়নের শর্মাপুর গ্রামের বাদেশ আলীর সঙ্গে, তিনি ৪ বিঘা জমি বর্গা নিয়েছেন। তিনি পানির অভাবে জমিতে চারা রোপণ করতে পারেননি। ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ায় তিনি এরই মধ্যে জমিতে আমন চারা রোপণের কাজ শেষ করেছেন।

আমন চারা রোপণের কাজ শেষ করতে পেরে তিনি বেজায় খুশি হয়েছেন। একই এলাকার কৃষক আহাদ বলেন, সময়মতো আমন চারা রোপণ করতে গিয়ে বিঘা প্রতি ৫০০ টাকা করে অতিরিক্ত গুনতে হয়েছে।

শুধু তাই নয়, জমিতে রোপণকৃত চারা বাঁচাতে আরো দুবার অতিরিক্ত সেচ দেওয়া হয়েছে। এর জন্যও বিঘা প্রতি ৪০০ টাকা হারে দুবারে মোট ৮০০ টাকা করে গুনতে হয়েছে।

তিনি বলেন, যদিও উৎপাদন ব্যয় বাড়বে তারপরেও আমি খুশি। কারণ জমিতে আমন চাষ হচ্ছে।

এ বিষয়ে নওগাঁ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরেরর উপপরিচালক এস এম নুরুজ্জামান মন্ডল জানান, জেলায় কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে সার সরবরাহ ও বাজার দর সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, যেভাবে বৃষ্টিপাত হচ্ছে তা যদি আরো দু-একদিন অব্যাহত থাকে তাহলে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা পুরোপুরি অর্জিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top