সকল মেনু

ভোলার মনপুরায় শত শত একর জমি পতিত থাকার আশংকা

 এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা: ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় এবারের মৌসূমে আমন ধানের চারা বীজের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কৃষকের নিজস্ব বীজ তলায় উৎপাদিত চারা বীজ পচে যাওয়ায় তারা এখন মহা সংকটে পড়েছেন। যাদের কাছে চারা বীজ রয়েছে তারাই এখন মহা শাহেন শাহ। কৃষক’রা বর্তমানে তাদের কাছে ভীড় করেছেন চারা বীজ কেনার জন্য। এ সুযোগে চারা বীজ মালিক’রা এর দাম ৬/৭ গুন বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কিন্তু করার কিছুই না থাকায় বাধ্য হয়েই চড়া দামে চারা বীজ কিনে জমিতে রোপন করছেন। তারপরও বহু কৃষক চারা বীজ পাচ্ছেন না। ফলে এ বছর চাষের উপযোগী করে তোলা হলেও একমাত্র চারা বীজের অভাবে শত শত একর জমি পতিত থাকার আশংকা দেখা দিয়েছে। সূত্রে জানা যায়, ৩ বছর পূর্বে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের তালতলা এবং সূর্যমূখী এলাকার ভাঙা বেড়ীবাঁধ, হাজীর হাট ইউনিয়নের চরযতিনের পূর্বপাশের বেড়ী বাঁধ, সোনার চরের পশ্চিম পাশের বেড়ীবাঁধ, মনপুরা ইউনিয়নের ঈশ্বরগঞ্জের পূর্বপাশের বেড়ী বাঁধ এবং আন্দির পাড় এলাকার ভাঙা বেড়ীবাঁধ দিয়ে অমাবষ্যা ও পূর্ণিমার প্রভাবে জোয়ারের পানি ঢুকে উপজেলার ৪টি ইউনিয়নের প্রায় ৮০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। গত জুন ও জুলাই মাসে কয়েক ধাপে উপজেলার ১৫ টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে থৈ-থৈ করে । ফলে মানুষের ঘর বাড়ী, ফসলী জমি, আউস ধানসহ আমন ধানের বীজতলার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এতে করে চাষীরা পড়েছে মহা বিপাকে। যাদের বীজ তলা একটু উচু জমিতে ছিল তারা তাদের কিছু চারা বীজ রক্ষা করতে পেরেছেন। তারাই বর্তমানে মহারাজা। কৃষক’রা তাদের কাছে চারা বীজের জন্য ধরনা দেওয়ায় তারা চারা বীজের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। উপজেলার দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের চাষীদের সাথে আলাপ করলে তারা তাদের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে গেছেন। ভাঙ্গা বেড়ী বাঁধ দিয়ে আনবরত পানি প্রবেশ করায় তারা ধানের চারা বীজ রক্ষা করতে পারেননি। হাজীর হাট ইউনিয়নের দাসের হাটের জহির, আঃ শহীদ, ইলিয়াস কাঞ্চন জানান, জালা (চারা বীজ) সব নষ্ট হয়ে গেছে। এজন্য (৮ শতাংশ ) জমির চারা বীজ ৩ হাজার টাকা দরে কিনে এনেছি। কুলাগাজীর তালুক এলাকার কৃষক মোঃ রুবেল বলেন, ৮ কোচা (১ কোচা সমান ৩ মুঠি) ১ শ’ ৫০ টাকা দরে কথা হয়েছে। এখন মালিক দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। সে বলেছে ২শ’ টাকা ছাড়া দিবে না। এদিকে উপজেলার মেঠো পথ ধরে হাটলে দেখা যায় কেউ মাথায়, কেউ ভ্যান গাড়ি, কেউ নৌকায় করে চারা বীজ কিনে জমিতে রোপনের জন্য নিয়ে যাচ্ছেন। কৃষকের মুখে হাসি নেই। তাদের মধ্যে কেবলই ব্যস্ততা। সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। এজন্য তাড়াতাড়ি রোপন করতে পারলেই যেন তারা বেঁচে যান। আবার অনেকে টাকা থাকা সত্বেও চারা বীজ সংগ্রহ করতে পারছেনা। এজন্য তারা মহা বিপাকে পড়েছেন। হন্যে হয়েও কোথাও ধানের চারা বীজ না পাওয়ায় এবার আমন মৌসূমে শত শত একর জমি পতিত থাকার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top