সকল মেনু

আয়কর মেলা : লক্ষ্য ১৫০০ কোটি টাকা

 অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর আয়কর দিবস। এর এক দিন পর ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের সকল বিভাগীয় ও জেলা শহরে শুরু হবে আয়কর মেলা ২০১৪। সপ্তাহব্যাপী এই মেলাকে সামনে রেখে প্রায় ১৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আহরণেরও পরিকল্পনা নিয়েছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এরই মধ্যে মেলার আয়োজনকে সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি। মেলাকে ঘিরে রাজস্ব আদায়ে বিভাগ বা জেলা পর্যায়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দেওয়া হবে না। তবে এনবিআর মনে করছে, এবার অন্তত ১৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সম্ভব হবে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রাজস্ব বোর্ডের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘গত বছর মেলা থেকে প্রায় ১১০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় সম্ভব হয়েছে। সে হিসেবে এবার আমরা আশা করছি ১৫০০ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হবে। আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর প্রেস ব্রিফিং করে আনুষ্ঠানিকভাবে আয়কর দিবস ও মেলা সম্পর্কে সাংবাদিকদের সকল বিষয় জানানো হবে।’

এনবিআর সূত্রে জানা যায়, আয়কর দিবস উপলক্ষে ঢাকা ও অন্যান্য বিভাগীয় শহরে ১৫ সেপ্টেম্বর বর্ণাঢ্য র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। আয়কর বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে ওই র‌্যালিতে বিভিন্ন স্লোগানসংবলিত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন, ব্যানার ও পোস্টার প্রদর্শন করা হবে। তাই র‌্যালিতে অংশগ্রহণকারীদের সংশ্লিষ্ট স্লোগানসংবলিত পোশাক ও ছাতা ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কর প্রদানকে উৎসাহিত করতে প্রতিবছরের মতো এবারও সেরা করদাতাদের পুরস্কার দেওয়া হবে। আয়কর দিবসের দিনে দীর্ঘমেয়াদি ও সর্বোচ্চ করদাতা ক্যাটাগরিতে এবার মোট ৩৬৫ জনকে সম্মাননা পুরস্কার ও ট্যাক্স কার্ড আনুষ্ঠানিকভাবে প্রদান করা হবে। আয়কর দিবসের পাশাপাশি ১৬ থেকে ২২ সেপ্টেম্বর সাত দিনব্যাপী রাজধানী ঢাকাসহ সারা দেশে আয়কর মেলার আয়োজন করা হয়েছে। তবে বিভাগীয় শহর ছাড়া অন্যান্য জেলায় মেলা চলবে চার দিন। এর বাইরে আয়কর সপ্তাহ উদ্‌যাপনকালে ভ্রাম্যমাণ মেলারও আয়োজন করা হবে।

এবার আয়কর মেলার মূল প্রতিপাদ্য বিষয়- ‘কর সেবার কর বিভাগের আশ্বাস, নিশ্চিত হোক করদাতাদের আস্থা ও বিশ্বাস’।

আর মেলার মূল স্লোগান ঠিক করা হয়েছে- আয়করে প্রবৃদ্ধি, দেশ ও দশের সমৃদ্ধি।

বড় অঙ্কের রাজস্ব আহরণের জন্য থাকবে কর তথ্য ও সেবা, ই-টিআইএন রেজিস্ট্রেশন করার ব্যবস্থা। রিটার্ন দাখিল করতে থাকবে ই-পেমেন্টের জন্য পৃথক বুথ। এগুলো স্থাপন করবে সোনালী ব্যাংক ও জনতা ব্যাংক। এ ছাড়া কর সহায়ক পরিবেশের প্রতি বিশেষ নজর দেওয়া হবে।

পুরো আয়োজনকে সফলভাবে সম্পন্ন করতে একটি কমিটি গঠিত হয়েছে। এনবিআরের সিনিয়র তথ্য অফিসার সৈয়দ এ মু’মেনকে তথ্য প্রচারসংক্রান্ত আহ্বায়ক করা হয়েছে। এ ছাড়া কাজ করছে ১০ উপকমিটি।

এনবিআর সূত্র জানায়, চলতি বছর রাজস্ব আদায়ে আয়কর খাতে রেকর্ড ৫৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে। তাই আয়কর মেলা উপলক্ষে এ খাত থেকে বিশাল অঙ্কের রাজস্ব  আহরণের পরিকল্পনা নিয়েছে এনবিআর। এ বিষয়ে কর্মকৌশল নির্ধারণে এনবিআরের ঊর্ধ্বতন মহলে কয়েকবার বৈঠকও হয়েছে।

বৈঠকে উপরোক্ত সেবা ছাড়াও করদাতারা যাতে কোনো ধরনের হয়রানি না হন ও নির্বিঘ্নে কর পরিশোধ করতে পারেন সে জন্য সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। মেলায় করদাতাদের জন্য সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন নির্দেশ দিয়েছেন।

বিভিন্ন বৈঠক সূত্রে জানা যায়, এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন প্রতিটি জেলা ও বিভাগীয় শহরের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাকে গুরুত্বসহকারে সর্বোচ্চ পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের দিকে নজর দিতে বলেছেন। শুধু তাই নয়, এ ক্ষেত্রে কোনো ধরনের গাফিলতির প্রমাণ পেলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। একই সঙ্গে এ সময়ে নতুন করদাতার সংখ্যা কোন এলাকায় বেশি হবে, সে হিসাব করে সংশ্লিষ্ট এনবিআর কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top