সকল মেনু

চাঁদপুরে চরে এক সহস্রাধিক যাত্রী নিয়ে লঞ্চ আটকা;লঞ্চ ও কর্মচারীদের আটক

 শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে ডুবো চরে আটকা পড়া যাত্রীদের ১৪ ঘন্টা পর উদ্ধার করে ‘এমভি আঁচল’ নামের একটি লঞ্চযোগে চাঁদপুর থেকে শনিবার বিকেল গন্তব্যস্থল পটুয়াখালীতে পাঠানো হয়। এছাড়া অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে আটকা পড়া লঞ্চ ‘এমভি সাত্তার খান-১’ এর কাগজপত্র জব্দসহ লঞ্চ ও কর্মচারীদের আটক করেছে স্থানীয় প্রশাসন। শনিবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধার করে চাঁদপুর লঞ্চ ঘাটে নিয়ে  আসা হয়। এমভি সাত্তার খান-১ নামের লঞ্চটি শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে প্রায় এক সহ¯্র যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়। লঞ্চটি রাত সাড়ে ১১ টার দিকে চাঁদপুরের মেঘনা নদী অতিক্রমকালে হাইমচর উপজেলার গাজীপুর এলাকার চরমনিপুর এলাকার মধ্যচরের  মেঘনার ডুবোচরে আটকা পড়ে। চাঁদপুরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. রাকিবুল হাসান বলেন, অতিরিক্ত যাত্রী বহনের দায়ে লঞ্চ ও কাগজপত্র জব্দ এবং সকল কর্মচারীকে আটক করা হয়েছে। লঞ্চ ও এর কর্মচারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। তিনি জানান, আটকাপড়া লঞ্চ যাত্রীদের শনিবার বেলা সোয়া ১ টায় চাঁদপুর থেকে যাওয়া এম ভি রফ রফ-২ নামের একটি লঞ্চ যোগে চাঁদপুর ঘাটে নিয়ে আসা হয়।  তবে উদ্ধারের জন্য যাওয়া লঞ্চটি ডুবোচরের কারণে দুর্ঘটনা কবলিত লঞ্চের কাছে যেতে পারেনি। চারটি ট্রলারযোগে ওই লঞ্চ থেকে যাত্রীদের এনে এমভি রফরফ লঞ্চে উঠানো হয়। আটকাপড়া লঞ্চটি জোয়ারের সময় উদ্ধার করা হবে।
বিআইডব্লিউটিএ চাঁদপুরের উপ-পরিচালক মো. মোবারক হোসেন জানান, এমভি সাত্তার খান-১ নামের লঞ্চ শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা থেকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে প্রায় এক হাজার যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়। লঞ্চটি রাত সাড়ে ১১টায় চাঁদপুরের মেঘনা নদী অতিক্রমকালে হাইমচর উপজেলার গাজীপুর এলাকার চরমনিপুর এলাকায় ডুবোচরে আটকা পড়ে।  চরে লঞ্চটি রাতে আটকা পড়লেও চাঁদপুরের প্রশাসন জানতে পারে সকালে। এতে দীর্ঘ সময় লঞ্চে আটকাপড়া যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়। লঞ্চে থাকা সব খাবার ও পানি শেষ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা খাদ্য সংকটে পড়ে। এছাড়া রাতে অন্ধকারের কারণে নৌ পুলিশ লঞ্চটিতে খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়নি। সকালে ভোরের আলোয় পুলিশ আটকে পড়া লঞ্চটির সন্ধান পায় বলে জানান, চাঁদপুরের পুলিশ সুপার আমীর জাফর। সকাল পোনে ১১টায় বিআইডব্লিটিএ কতৃপক্ষ চাঁদপুর ঘাট থেকে এম ভি রফ রফ নামের একটি লঞ্চ নিয়ে যাত্রীদেও উদ্ধার করতে যায়।
আটকে পড়া লঞ্চের যাত্রী পটুয়াখীলীর কলেজ ছাত্র সালাম অভিযোগ করেন অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে লঞ্চটি ঢাকা থেকে ছেড়ে আসে। তিনি জানান, লঞ্চটির চালক অর্থাৎ মাস্টার না চালিয়ে সহকারীকে দিয়ে চালানো হচ্ছিল। ওই লঞ্চের আরেক যাত্রী কন্ঠ শিল্পী বনি আমিন জানান, লঞ্চটি রাতে হঠাৎ করেই চরে আটকে যায়। পরবর্তীতে চালক বেপরোয়াভাবে প্রচন্ড শব্দে কিছু সময় চলতে থাকে। এ সময় আমরা প্রচন্ড ভয় পেয়ে যাই। পরে দেখা যায় লঞ্চটি চরের শুকনো জমিতে উঠে গেছে। স্কুল শিক্ষিকা মাহমুদা জানান, লঞ্চ চরে আটকা পড়ায় ক্যান্টিনের সব খাবার শেষ হয়ে যায়। এতে লঞ্চের যাত্রীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয়। তিনি জানান, লঞ্চের খাবার পানি পর্যন্ত শেষ হয়ে যায়।
রাতের প্রথম ভাগেই লঞ্চটি চরে আটকা পড়লেও  লঞ্চ কর্তৃপক্ষ ভোর রাত পর্যন্ত উদ্ধারে প্রশাসনের কোন সহায়তা চায় নি। বার বার বলেছে জোয়ার এলে লঞ্চ চলাচল শুরু হবে। কিন্তু দুপুর ১২টা পর্যন্ত লঞ্চ আর চলেনি। বিকেল ৪টা পর্যন্ত আটকে পড়া লঞ্চটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন বিআইডব্লিটিএ কর্মকর্তা মোবারক হোসন। তিনি জানান, ধারণ ক্ষমতার দুই গুণ বেশি যাত্রী পরিবহনের দায়ে লঞ্চটির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। ঢাকা থেকে আচল নামের একটি স্পেশাল লঞ্চ এনে আটকে পড়া যাত্রীদের বিকেল ৪ টার দিকে পটুয়াখালীর উদ্দেশ্যে পাঠানো হয়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top