সকল মেনু

ভালোবাসার যত্ন নেবেন যেভাবে

 লাইফস্টাইল ডেস্ক : ঘরের যত্নে নেন, রূপের যত্নও নেন, নেন স্বাস্থ্যের যত্নও। তবে কি কখনো ভালোবাসার যত্ন নিয়েছেন? অনেকেই বলবেন ভালোবাসার যত্ন নিতে হবে এটা আবার কেমন কথা? তবে যারা মানুষের মন নিয়ে ঘাটাঘাটি করেন, যাদের এ বিষয়ে রয়েছে নানা গবেষণা তারা বলছেন ভালোবাসারও যত্ন নিতে হয়। কেননা আপনার হাতের সেলফোনটির মতো অথবা আপনার ব্যবহৃত গাড়ির মতই ভালোবাসাও পুরনো হয়। ভালোবাসতে-বাসতে এক সময় মনের মানুষের আবেদনও কমে আসতে পারে আপনার কাছে। তাই বলছি কি মশাই আজ থেকেই ভালোবাসা নিয়ে একটু ভাবুন। আর তা যদি আপনার কাছে ম্লান হতে শুরু করে তবে আজ থেকেই তার যত্ন নিন। তা নাহলে, পাছে যখন বুঝবেন ভালোবাসা পালিয়েছে চিলেকোঠার জানলা দিয়ে তখন হা-হুতাশ ছাড়া কিছুই করার থাকবে না আর। প্রিয় পাঠক তাহলে আসুন জেনে নিন ভালোবাসার যত্ন নেওয়ার কিছু টিপস।

মিলেমিশে করুন ঘরের কাজ : প্রায়ই দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী দুজনে একসঙ্গে বাইরে থেকে ফিরলেন। কিন্তু খাবার তৈরি বা সংসারের অন্য কাজে লেগে গেলেন স্ত্রী। আর স্বামী টিভি চালিয়ে বসলেন সোফায়। এমনটা না করে বরং সংসারের কাজকর্ম দুজনে মিলেমিশে শেষ করে, পরে একসঙ্গে দুজন মিলে টিভি দেখুন বা গল্প করুন। সারাদিন কে কী করলেন একে অপরেকে জানান।

ভুল ধরা নয় বড় কথা : একসঙ্গে থাকতে গেলে অনেক সময় ছোটখাটো অভ্যাসগুলো অসুবিধার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। একজন হয়ত সব সময় মোজা খুলে বিছানায় রেখে দেন। অপরজন টুথপেস্টের ঢাকনা লাগাতে যান ভুলে। অনেক পরিবারে এ সব ছোটখানো বিষয় নিয়ে অযথা ঝগড়া হয়। তাই এই সব বিষয়গুলো এড়িয়ে চললে জীবন কিন্তু অনেক মধুর হতে পারে।

ভালোকে বলুন ভালো : সব মানুষই মাঝে মাঝে তার কাজের স্বীকৃতি চান, এমনকি সংসারের কাজের ক্ষেত্রেও। তাই মাঝে মধ্যে একে অপরকে সে কথা জানান। আরো রোমান্টিক হয়, যদি কথাটা জানানো যায় ছোট্ট একটি ‘নোট’ লিখে অথবা এসএমএস-এর মারফত। দেখবেন পরের দিন কাজের আগ্রহ তো বাড়বেই, তার সঙ্গে আপন মানুষটিকে মনে হবে আরো কাছের।

প্রশংসা ছোট হলেও প্রভাব দারুণ : অনেকদিন একসঙ্গে থাকার ফলে সব কিছুই কেমন যেনো সাধারণ ব্যাপার হয়ে যায়। তাই বিশেষজ্ঞরা বলেন, নতুন পোশাক বা হেয়ার স্টাইলে আপনার সঙ্গীকে সুন্দর লাগছে– এ কথা বলতে একদম সংকোচ করবেন না। আসলে এমন ছোটখাটো প্রশংসার প্রভাব কিন্তু অনেক বড় হয়। অর্থাৎ ‘প্রশংসা ছোট তবে তার ইফেক্ট বড়’।

যত্নে বাড়ে ভালোবাসা : ভালোবাসা গাছের মতো, যত যত্ন করা যাবে ততই বাড়বে। ভালোবাসার স্পর্শে ডালপালা ফলে-ফুলে ভরে যায়, আর অযত্নে যায় শুকিয়ে৷ অনেক দম্পতি মনে করেন, ‘ভালোই তো আছি, আবার ভালোবাসা দেখাতে হবে কেন? অথচ ভালোবাসা দেখালে দাম্পত্য জীবন হতে পারে মধুময়। ঠিক গাছের মতোই যত্ন নিন। হঠাৎ করেই ফুল বা ছোটখাটো উপহার দিয়ে আপনার প্রিয়া বা প্রিয়তমকে দিন চমকে!

সখের তোলা আশি টাকা : মাঝে মাঝে কখনো নিজেরা একসঙ্গে এমন কিছু করুন, যাতে অন্য ধরণের গল্প বা আলোচনা হতে পারে। একসঙ্গে সাইকেল চালাতে বা হাঁটতে যেতে পারেন। খোলা আকাশের নীচে প্রাণ খুলে হাসুন বা কথা বলুন। একে অপরের সঙ্গে সব কিছু ভাগাভাগি করার নামই যে বন্ধুত্ব, আর সেটাই তো দীর্ঘ ও সুখি দাম্পত্যের আসল কথা।

কি লাভ রাগ পুষে রেখে : রাগ, অভিমান ছাড়া কি দাম্পত্য জীবন মধুর হয়? রাগ, দুঃখ, অভিমান তো থাকবেই। কিন্তু তাই বলে রাগ যেন বেশিক্ষণ না থাকে। দিনের শেষে রাগ ভুলে অপরের কাছে এগিযে যান। রাগ বা মান ভাঙানোর উত্তম সময় সেটা। তা না হলে দুজনকেই হয়ত না ঘুমিয়ে সারাটা রাত কাটাতে হবে, যার প্রভাব পড়বে পরবর্তীতেও।

কিছুটা দূরত্ব কাছে আনবে সঙ্গীকে : মাঝে মধ্যে দাম্পত্য জীবনের সব কিছুই একঘেয়েমি মনে হতে পারে। তাই স্বামী তার সহকর্মী বা পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে কখনো আড্ডায় যেতে পারেন। স্ত্রী তার ছেলেবেলার বন্ধু-বান্ধবী বা কাছের কোনো মানুষের সঙ্গে শপিং বা সিনেমা দেখতে যেতে পারেন। এতে নিজেদের অনেকটা হালকা মনে হবে। মাঝে মাঝে একটু দূরত্ব কিন্তু স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একে-অপরকে কাছে পাওয়ার আনন্দ বাড়িয়ে দেয়।

বিবাহিত জীবনের জন্য পুরস্কার : দীর্ঘ বিবাহিত জীবনের জন্য বেশ কয়েকটি দেশে পুরস্কার দেওয়ার রীতি রয়েছে। পোল্যান্ডের কোনো দম্পতির ৫০ বছর পূর্ণ হলে তাদের প্রেসিডেন্ট পদক দেওয়া হয়। অামেরিকায় ৫০ বছর হলে হোয়াইট হাউস থেকে শুভেচ্ছা বার্তা পাঠানো হয়। আর ইংল্যান্ডে ৬০ বছরের বিবাহবার্ষিকী পালন করা কোনো দম্পতিকে রানির কাছ থেকে বার্তা পাঠানো হয়।

ঝগড়াটেদের থাকে মৃত্যু ঝুঁকি : ঝগড়া অকালমৃত্যুর কারণ হতে পারে। ডেনমার্কের কোপেনহাগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে বের করেছেন যে, যারা খুব বেশি ঝগড়া করেন তাদের অকালমৃত্যুর ঝুঁকি অন্যদের তুলনায় দুই থেকে তিনগুণ বেশি। কাজেই ঝগড়া এড়িয়ে চলুন!

গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা পরে : খাওয়ার আগে কখনো কোনো গুরুত্বপূর্ণ আলোচনায় যাবেন না। পারলে মিষ্টি কিছু খেয়ে নেবেন৷ কারণ ওহাইয়ো স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞনীরা গবেষণা করে দেখেছেন যে, শরীরে শর্করার পরিমাণ কম হলে একে-অপরের প্রতি রাগ, ক্রোধ কেমন যেনো আক্রমণাত্বক হয়ে ওঠে। বলা বাহুল্য, গ্লুকোজ বা শর্করা মানুষের শরীরে জ্বালানির মতো কাজ করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top