সকল মেনু

সুজন হত্যার জবানবন্দি দিলেন মা শাহিদা

 আদালত প্রতিবেদক: ঝুট ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান সুজনকে ধরে এনে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালাহউদ্দিনসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে নিহতের মা শাহিদা বেগমসহ ৫ জন আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। তারা ঢাকার মহানগর হাকিম এস এম আশিকুর রহমানের কাছে এ জবান বন্দি দেন। জবানবন্দি দেয়া অন্যান্যরা হলেন, নিহত সুজনের বড় ভাই নজরুল ইসলাম শামীম এবং আত্মীয় মিনহাজ, সাইফুল আলম ও মাহবুবুল আলম।  দুপুর সাড়ে ১২ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত একটানা জবানবন্দি গ্রহন করা হয়।  এরা আগে একই আদালতে নিহত সুজনের স্ত্রী মমতাজ সুলতানা লুসি জবানবন্দি প্রদান করেন। এরআগে গত ২০ জুলাই ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে নিহত সুজনের স্ত্রী মমতাজ সুলতানা লুসি এ মামলাটি দায়ের করেছিলেন। নির্যাতন ও হেফাজতে মৃত্যু (নিবারণ) আইন-২০১৩ এর ১৫ ধারায় তিনি এ মামলাটি দায়ের করেন। ওইদিন বিচারক মো. জহুরুল হক সুজন হত্যার বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দেন। পরে ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) বিকাশ কুমার সাহা বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য মহানগর হাকিম এস এম আশিকুর রহমানকে নিয়োগ দেন। মামলায় অভিযোগ করা হয়, এক নম্বর আসামি এস আই জাহিদ ও ছয় নম্বর আসামি ওসি সালাউদ্দিন ক্ষমতার অপব্যবহার করে অন্য আসামিদের যোগসাজশে সুজনকে ধরে নিয়ে ‘বেধরক পিটিয়ে’ হত্যা করে। এরআগে আসামীরা বদাীর স্বামীর কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। টাকা না দেয়া হলে বিভিন্ন মামলায় আসামী করে হয়রানী করা হবে বলে হুমাকি দেয়। একারণে ভয়ে মিরপুরের বাসা ছেড়ে দিয়ে হাজারীবাগে বাসা ভাড়া করে থাকেন। সেখানে গিয়ে গত ৭ জুলাই বাড়িওয়ালার ছেলেকে দিয়ে বিদুৎ বিলের কথা বলে কলিংবেল বাজিয়ে দরজা খোলান। পরে আসামি বাসার ভিতরে প্রবেশ করে আসামি জাহিদের পকেট থেকে একাটি পিস্তল ও দুটি ম্যাগজিন বের করে খাটের উপরে রাখে বলে এই লস্ত্র ও গুলি দিয়ে তোদের মামলায় ফাসিয়ে দেয়া হবে। এরই মধ্যে পুলিশের কথা শুনে সুজন ভয়ে রান্না ঘরের সানসেটে পালিয়ে থাকেন। পরে আসামিরা সেখান থেকে সুজনকে জোর পূর্বক ধরে এনে লাল-হলুদ গামছা দিয়ে চোখ-মুখ বাধে। এরপরে দুই হাত পিছনে দিয়ে হ্যান্ডকাপ লাগিয়ে রশি দিয়ে পিঠমোড়া করে বেধে বাথ রুমের বালতি ভরা পানিতে মাথা ডুবিয়ে এবং লোহার রড দিয়ে বেদম প্রহার করে। পরে বাদী ও তার স্বামী এবং শিশুপুত্র মোশারফকে নিয়ে রাত দুই টার দিকে আসামীরা থানায় যায়। এরপর বাদী ও তার শিশুপুত্রকে একটি কক্ষে আটক রেখে তার স্বামীকে আলাদা কক্ষে নিয়ে নির্যাতন করতে থাকে। এসময় বাদী তার স্বামীর আর্তচিৎকার শুনতে পায় এবং স্বামীর জন্য কান্নাকাটি করতে থাকেন। এর কিছু সময় পর বাদী আর তার স্বামীর কোনো সাড়া শব্দ শুনতে পাননি। এরপর সকাল অনুমান ৯টার সময় বাদী ও তার শিশুপুত্রকে ওসি সালাউদ্দিনের রুমে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে বাদীকে জানানো হয, তার স্বামী গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বাদী হাসপাতালে যেতে চাইলে ওসি সালাউদ্দিন তাকে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন। সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে অস্বীকার করলে ওসি সালাউদ্দিন বাদীকে এক গ¬াস পানি পান করান। পানি পানের পর বাদী অস্বস্তি বোধ করতে থাকেন এবং এক পর্যায়ে ওই সাদা কাগজে স্বাক্ষর করেন। এরপর ওসি স্লাাউদ্দিনের নির্দেশে একজন মহিলা পুলিশসহ মোট চারজন পুলিশ বাদী ও তার শিশুপুত্রকে একটি গাড়িতে তুলে বাদীর বাসায় নিয়ে যায়।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top