সকল মেনু

টহলে থাকবে হেলিকপ্টার,ঈদে লঞ্চ ভাড়া কমল

 নিজস্ব প্রতিবেদক : ঈদ উপলক্ষে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে অভ্যন্তরীণ নৌপথের লঞ্চ মালিকেরা। যেখানে বাস, ট্রেন, এমনকি উড়োজাহাজের ভাড়া বাড়ানো হয়েছে, সেখানে লঞ্চের ভাড়া কমানো হয়েছে ২৫ টাকা। আর ঈদে নদীপথের দেখভালে আকাশে টহল দেবে চারটি হেলিকপ্টার। সরকারি তালিকা অনুযায়ী ডেকের যাত্রীদের জনপ্রতি ভাড়া ধার্য ছিল ২৫৫ টাকা। সেখানে ২৫ টাকা কমিয়ে ২৩০ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে কিঞ্চিৎ ভাড়া কমানোর ইতিবাচক এই সিদ্ধান্তকে যাত্রীরা ‘রংচটা বিজ্ঞাপন’ বলে সমালোচনা করেছেন। বুধবার বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এবং অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল (যাত্রী পরিবহণ) সংস্থার নেতাদের সঙ্গে আলোচনা সভায় লঞ্চ মালিকেরা ভাড়া কমানোর সিদ্ধান্ত নেন। আগামী ২৫ জুলাই থেকে এ ভাড়া কার্যকর হবে। এ ছাড়া ঈদে নতুন ১৮টি লঞ্চ নামানো হচ্ছে। ফলে ১০ হাজারেরও বেশি অতিরিক্ত যাত্রী বহন করা যাবে এই ঈদে। সভায় জানানো হয়, আগামী ২৪ জুলাই থেকে স্পেশাল লঞ্চ সার্ভিস চালু হয়ে ৫ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। সভায় নৌচলাচল সুষ্ঠু ও নিরাপদ করার জন্য ঈদের সময় রাজধানীর কাছাকাছি অবস্থানে থাকা নৌপথের আকাশে উড়বে চারটি হেলিকপ্টার। এ ছাড়া আগামী ২৩ জুলাই থেকে মুন্সীগঞ্জে চর ইজারাদারদের বালু উত্তোলন বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামছুদ্দোহা খন্দকারের সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল সংস্থার চেয়ারম্যান মাহবুব উদ্দিন আহমদ, নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী আশিকুল আলমসহ বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি, পুলিশ, র‌্যাব, কোস্টগার্ডের কর্মকর্তা ও লঞ্চ মালিক সমিতির নেতারা।

এদিকে লঞ্চ মালিকদের ভাড়া কমানোর ঘোষণাকে একটি ‘রংচটা বিজ্ঞাপন’ বলেই মনে করছেন যাত্রীরা। সরকারের বাহাবা পেতে লঞ্চ মালিকেরা এই ঘোষণা দিয়েছেন বলে তারা মনে করছেন।

সরেজমিন সদরঘাট টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেছে, ইতিমধ্যে লঞ্চের ডাবল ডেকের সব কেবিন অগ্রিম ভাড়া হয়ে গেছে। এর ৮০ শতাংশ টিকিট চলে গেছে কালোবাজারে। কাউন্টারে গেলে টিকিট নেই বলে জানানো হলেও দালালদের মাধ্যমে মিলছে টিকিট।

ওই রুটের যাত্রী শহিদুল হক জানান, ২০ জুলাই থেকে লঞ্চের অগ্রিম টিকিট বিক্রি হওয়ার কথা। অথচ এখনই মিলছে না কেবিনের টিকিট। সিঙ্গেল ও ডাবল কেবিনের ভাড়া বেড়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা।

তিনি আরো জানান, ডেকের ভাড়া ২৫ টাকা কমানো একটি ঘোষণা মাত্র। ২০ তারিখেই দেখা যাবে ভাড়া ৩০ থেকে ৫০ টাকা বেড়ে গেছে। এই ঘোষণা বাস্তবায়িত হবে না।

একই মত দিয়েছেন বরিশালের তৌহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ঈদে যাত্রীরা লঞ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে জিম্মি হয়ে যাবে। ভাড়া কার্যকর করতে হলে র‌্যাবের মতো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়োগ জরুরি।

বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান ড. শামছুদ্দোহা খন্দকার বলেন, এবারের ঈদে সদরঘাট নৌপথ দিয়ে কয়েক লাখ মানুষ যাতায়াত করবে। মাওয়া-বরিশাল, পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ও কিশোরগঞ্জে একটি করে চারটি উদ্ধারকারী জাহাজ রাখা হয়েছে। একই সঙ্গে বিআইডব্লিটিএর কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

স্পেশাল সার্ভিসে প্রতিদিন ঢাকা-বরিশাল রুটে চলাচল করবে ১২টি লঞ্চ। ঈদের ১০ দিন আগে থেকে স্টিমারের স্পেশাল সার্ভিস শুরু করা হবে বলে জানিয়েছে বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষ।

সরকারের সর্বশেষ নির্ধারিত লঞ্চভাড়া অনুযায়ী ডেকের ভাড়া ২৫৫ টাকা, সিঙ্গেল কেবিন ৮৫০ টাকা এবং ডাবল কেবিন ১ হাজার ৬৪০ টাকা। সরকার-নির্ধারিত ভাড়ার ক্ষেত্রে ভিআইপি কেবিনের ভাড়া নির্ধারণ করা নেই।

লঞ্চ মালিক সমিতির সিনিয়র সহসভাপতি গোলাম কিবরিয়া টিপু সাংবাদিকদের জানান, সরকার-নির্ধারিত রেটের মধ্যে থেকেই এবারের ঈদে ডেক ২৩০ টাকা, সিঙ্গেল (সাধারণ) কেবিন ১ হাজার টাকা, সিঙ্গেল (এসি) কেবিন ১ হাজার ১০০ টাকা এবং ডাবল (সাধারণ) কেবিন ২ হাজার, ডাবল (এসি) ২ হাজার ২০০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ঈদ উপলক্ষে ৪ হাজার টাকার ভিআইপি কেবিনের ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৫ হাজার থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা।

২৬ ও ২৭ জুলাই ঢাকা থেকে প্রতিদিন নয়টি লঞ্চ বরিশালে রওনা হবে। ২৮ জুলাই থেকে লঞ্চের রোটেশন সিডিউল স্থগিত করে মালিকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তখন মালিকরা ইচ্ছে করলে নির্ধারিত নয়টির বেশি লঞ্চ যেকোনো রুটে চালাতে পারবেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top