সকল মেনু

রংপুরে স্কুল শিক্ষকের প্রতারনায় অনার্স পড়ুয়া শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

 ইকবাল হোসেন,রংপুর অফিস: রংপুরে স্কুল শিক্ষকের প্রতারনায় ক্ষোভে ও দুঃখে আত্মহত্যা করেছে অনার্স পড়–য়া শিক্ষার্থী। ঘটনার পরপরই ওই শিক্ষক পালিয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার নগরীর চওয়াহাট এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। আত্মহত্যার জন্য দায়ি ওই শিক্ষক বলে মেয়েটি চিরকুটে লিখে যান।
রংপুর নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের চওয়াহাট বেনুঘাট গ্রামের আবদুল আজিজের মেয়ে রাজেনা খাতুন। তিনি রংপুর সরকারি কলেজে ইতিহাস বিভাগের অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে লেখাপড়া করতেন। তিন মাস আগে ওই এলাকার বেনুঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক শফিউল আলম প্রিন্স সাথে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুত্র ধরে শফিউল মেয়েটির বাড়িতে যাতায়াত করত এবং সে নিজেকে অবিবাহিত বলে জানায়। এরপর মেয়েটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়। পরবর্তীতে বিয়ে করার প্রতিশ্র“তি দিয়ে মেয়েটির সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। দুমাস আগে মেয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে অন্য ছেলের সাথে বিয়ে ঠিক করা হয়। বিয়ের একদিন আগেই শিক্ষক মেয়েটিকে তুলে নিয়ে যায় দিনাজপুরে। এরপর ভূয়া বিয়ের কাবিন রেজিস্ট্রি দেখিয়ে সেখানে বাড়ি ভাড়া নিয়ে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করে। এ খবর জানতে পেয়ে ১৪ জুন শিক্ষক শফিউল আলম প্রিন্স’র আগের স্ত্রী জমিলা দিনাজপুরে গিয়ে তাদের হাতেনাতে ধরে ফেলেন। সেখানে প্রিন্স তার আগের স্ত্রীর কাছে স্বীকার করে সে রাজেনা খাতুনকে বিয়ে করেনি। বিয়ের রেজিস্ট্রি ও কাবিননামা সব ভুয়া। এসব জানতে পেরে রাজেনা খাতুন মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েন। খবর পেয়ে রাজেনার পরিবারের লোকজন গিয়ে তাকে বাড়িতে নিয়ে আসেন। এরপর সকলের অজান্তে বৃহস্পতিবার ভোরে ঘরের দরজা বন্ধ করে বিষপান করে রাজেনা বেগম। সকাল ১০ টার দিকে মেয়ে দরজা খুলছে না দেখে মেয়ের মা জরিনা বেগম ও বাবা আবদুল আজিজ দরজা ভেঙ্গে দেখেন মেয়ে মেঝেতে পড়ে আছে। খবর পেয়ে এসআই মশিউর রহমান গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
আত্মহত্যার আগে মেয়েটি নিজ হাতে একটি চিরকুট লিখে যায়। সেখানে লেখা ছিল আমার মৃত্যুর জন্য প্রতারক শিক্ষক শফিউল আলম প্রিন্স দায়ি। তার এসব প্রতারনার কারণে আমার আর বেচে থেকে কি লাভ, তাই আমি আত্মহত্যা করতে বাধ্য হলাম।  নিহত রাজেনা খাতুনের বাবা আবদুল আজিজ সাংবাদিকদের জানান, শিক্ষক নামের কলংক প্রতারক শফিউল আলম প্রিন্স প্রতারনা করে আমার মেয়েকে সে তুলে নিয়ে যায়। সে আমার মেয়ের মৃত্যুর জন্য দায়ি। আমি তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করব। এরআগেও সে চারটি বিয়ে করেছে প্রতারনার মাধ্যমে। শিক্ষকের বাড়ি লালমনিরহাট জেলায়।  রাজেনা খাতুনের মা জরিনা খাতুন জানান, আমি শয়তান, ভন্ড ও প্রতারক ওই শিক্ষকের ফাঁসি চাই। সে আমার ফুলের মত মেয়েটার জীবনটা নিভিয়ে দিল।  কোতয়ালি থানার ওসি আবদুল কাদের জিলানী জানান, এব্যাপারে আবদুল আজিজ বাদি হয়ে একটি মামলা করেছেন। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top