সকল মেনু

আমরা এ বিল্ডিংয়ে আর থাকতে চাই না

 আছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম,৩০মে,ঢাকা : রাজধানীর কল্যাণপুরে অবস্থিত মিজান টাওয়ারের নিচে বুধবারের বিস্ফোরণের ঘটনায় দুর্ভোগে দিন পার করছেন সেখানকার বাসিন্দারা। গত তিন দিন ধরে তারা বাইরে অবস্থান করছেন। সেদিন তাড়াহুড়ো করে নামতে গিয়ে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র সঙ্গে নিয়ে বের হতে পারেননি অনেকে। কেউ কেউ সকাল বেলা অফিসে গিয়ে আর ভেতরে ঢুকতে পারেননি। ফলে ঝড়-বৃষ্টির দিনে তারা যাযাবরের মত জীবনযাপন করছেন। ভবনের বাসিন্দাদের ভাষ্য, ‘আরেকটি রানা প্লাজা চাই না। মালপত্র কিভাবে বের করা যাবে সে সিদ্ধান্ত চাই। আমরা এ বিল্ডিংয়ে আর থাকতে চাই না।’

শুক্রবার সকালে মিজান টাওয়ারের সামনে ওই ভবনের বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করে হটনিউজ২৪বিডি.কমকে এসব কথা বলেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মিজান টাওয়ারের নিচে বিস্ফোরণে যেভাবে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তাতে বিল্ডিংয়ের কোনো বাসিন্দাই সেখানে থাকতে চাইবেন না।
বিস্ফোরণে দুমড়ে-মুছড়ে গেছে ভবনের নিচের অংশ। চুরমার হয়েছে নিচতলার অনেক দোকান। আটকা পড়েছে কোটি কোটি টাকার মালামাল। এ অবস্থায় ভবনের বাসিন্দা ও স্থানীয়দের মধ্যে দেখা দিয়েছে আতঙ্ক। সবাই অপেক্ষায় রয়েছেন কী সিদ্ধান্ত হয়। তবে মালিকপক্ষ, রাজউক, প্রশাসনসহ বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল এ আতঙ্ক প্রশমনে কাজ করছেন।
ওই ভবনের ছয় তলায় ভাড়া থাকেন সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতালে কর্মরত ডা. আকরাম উদ্দিন। বিস্ফোরণের দিন সকালে বেড়িয়ে আর ভেতরে ঢুকতে পারেননি তিনি। ছেলেমেয়েদের নিয়ে অন্যের বাসায় থাকতে হচ্ছে তাদের।
একই অবস্থা মেডিক্যাল শিক্ষার্থী হোমায়রা জাহান লিজার। তিনি বলেন, ‘ বাইরে অনেক কষ্টে দিন পার করছি। আর কতোদিন এভাবে চলতে হবে। এ বিল্ডিং ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করলেও থাকব না এখানে।’

নয় তলার বাসিন্দা আরজু মিয়া, আট তলার বাসিন্দা পলাশ হালদারও একইভাবে দুঃখ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এ বিষয়ে মালিকপক্ষ থেকে বিল্ডিংয়ের ম্যানেজার গোলাম কিবরিয়া বলেন, ‘রাজউক সবসময় তদারকি করছে। তারা বলেছেন, ভবনে কোনো সমস্যা নেই। আরো বিশেষজ্ঞ দল আসবে। তারপর জানা যাবে এ ভবনে লোক বাস করতে পারবেন কি না।’
রাজউকের সদস্য (পরিকল্পনা) আব্দুল মান্নান বলেন, ‘এ ভবনের দায়দায়িত্ব রাজউক নেবে না। তারা দীর্ঘদিন ধরে সেপটিক ট্যাংক পরিস্কার করেননি, এটা তাদের দোষ। এজন্য কোনো ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হলে এর দায় ভবন কর্তৃপক্ষকেই নিতে হবে। তবে আমরা চাই না যে আরেকটা রানা প্লাজা হোক। সে কারণে সমস্ত ট্যাংক পরিস্কার করার পরই কেবলমাত্র লোক ওঠানোর অতুমতি দিতে পারি। আর ভবনের ব্যাপারে বিকেল পাঁচটার দিকে বুয়েটের টিম আসবে। তারাই সিদ্ধান্ত দেবেন ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ কি না।’
এদিকে, মিরপুর মডেল থানার এসআই আবুল খায়ের (ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত) হটনিউজ২৪বিডি.কমকে বলেন, ‘বিকেলে যে বিশেষজ্ঞ দল আসবেন, তাদের সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তারা ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করলে, আমরা ভবনের বাসিন্দাদের মালপত্র কিভাবে বের করা যায় সে সিদ্ধান্ত নেব। আর ঝুঁকিমুক্ত ঘোষণা করলে বাসিন্দাদের ভবনে ওঠার ব্যবস্থা করা হবে।’

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top