সকল মেনু

ত্বকের যত্নে ডায়েট

 শানজানা জামান :  মানুষ হলো তিন মহলা বাড়ি। লালন তো এমন তত্ত্বই দিয়ে গেছেন। এখন এ বাড়ি যদি ঠিক না থাকে, তবে সব কিছুই অসহ্য হয়ে যায়। কর্মে চলে আসে মন্থর গতি। তাই শরীরকে ঠিক রাখতে দরকার উপযুক্ত ব্যালান্সড ডায়েট। ভারসাম্যের কমবেশি হলেই কিন্তু হাজারো সমস্যা। আপনার এই ত্বকের ম্লানতা নিয়ে ঘুম আসছে না আবার একটু পরেই চুল পড়া নিয়ে আপনার মাথা ব্যথার অন্তঃ নেই। জেনে রাখুন প্রতি মহূর্তে আমাদের ত্বকের পুরনো কোষগুলি মরে গিয়ে নতুন কোষের সৃষ্টি হয়। এজন্যই আমাদের ত্বক এত তরতাজা থাকে। অবিরামে এ পদ্ধতিটি যাতে বাধাহীনভাবে চলতে পারে, তার জন্য আমাদের কোষগুলোর দরকার সঠিক পরিমাণে পুষ্টি। সেজন্যই ডায়েট আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 

ডায়েটে ফল ও সবজি রাখুন
দিনের অনেকটা সময় আমাদের বাইরে থাকতে হয়। যার ফলে আমাদের ত্বকে রোদ, ধুলোবালি, দূষণ প্রভৃতির চাপ পড়ে। যার কারণে ত্বকে ফ্রি র‌্যডিক্যালের প্রভাব পড়ে। এজন্য ত্বক তাড়াতাড়ি বুড়িয়ে যেতে পারে। তার চেয়েও বড় কথা স্কিনে ক্যানসারের মতো মারাত্বক রোগও হতে পারে। এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে রোজকার ডায়েটে, কুমড়া, পাকা পেঁপে, গাজর, ও সবুজ শাক সবজি রাখুন। এগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা ফ্রি র‌্যডিক্যালের হাত থেকে আপনার ত্বককে রক্ষা করবে। তাই ভারি খাবারের তালিকায় এই ধরনের সবজি রাখা জরুরি। আর মিলের মাঝে মাঝে স্ন্যাক খেতে হলে ফল বা ফ্রুট খেতে পারেন।

ভিটামিন সি
ভিটামিন সি যুক্ত ফলে প্রচুর অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে। তাছাড়া এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বিদ্যমান। পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন সি ত্বকের ঔজ্জ্বলতা ফিরিয়ে আনে। তাছাড়া দাগছোপ, হীন ত্বকের জন্যও ভিটামিন সি খুব জরুরি। তাই প্রতিদিনের ডায়েটে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে, ব্রকোলি, কিউয়ি, স্ট্রবেরি, কমলা লেবু, রাঙালু, পাকা পেঁপে, ব্লুবেরির মতো ফল ও সবজি রাখুন। এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে। রোজকার খাবারে পাতি লেবুর রস ব্যবহার করার চেষ্টা করুন। পাতি লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি রয়েছে।

ভিটামিন ই
আমন্ড, অ্যাভোক্যাডো, আখরোট, সূর্যমুখী তেল প্রভৃতি খাবারে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ই। ভিটামিন ই আমাদের ত্বকের কোষগুলোকে পুষ্টি যোগায় এবং ত্বককে বাইরে দূষণ থেকে ক্ষতি হওয়ার হাত থেকে বাঁচায়।

সান বার্ন থেকে বাঁচতে
সান বার্ন ও বিভিন্ন বয়সজনিত দাগছোপের হাত থেকে বাঁচতে আমাদের শরীরে সেলেনিয়াম নামক অ্যান্টি অক্সিডেন্টের দরকার। সেলেনিয়াম ভিটামিন সি ও ই কে শরীরে ভালোভাবে কাজ করতেও সাহায্য করে। নানা ধরনের মাছ, ডিম, আটা, টমেটোর মতো খাবারে সেলেনিয়াম আছে। তাই প্রত্যহ ডায়েটে এ খাবারগুলো অবশ্যই রাখা জরুরি।

ফ্যাট খেতে ভয় নেই
সব ফ্যাট জাতীয় খাবারই খারাপ নয়। স্যাচুরেটেড ফ্যাট স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর কিন্তু ত্বককে পেলব ও আর্দ্র রাখার জন্য ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া দরকার। যে সমস্ত খাবারে ওমেগা থ্রি ও ওমেগা সিক্সের মতো ফ্যাটি অ্যাসিড রয়েছে সেগুলো খাওয়া খুবই দরকার। যেমন- সামুদ্রিক মাছ, তিসির তেল, বাদাম তেলে প্রচুর পরিমাণে এই ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে।

অবশ্যই কার্বোহাইড্রেট খাবেন
ফ্যাটের মতো কার্বোহাইড্রেটও আমাদের শরীরের জন্য খুব জরুরি। তবে লো কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ খাবার খান। যেমন- বিভিন্ন ডাল, বিনস, পরিজ প্রভৃতি। এই খাবারগুলো শরীরে চিনির পরিমাণ ধীরে ধীরে সরবরাহ করে। এর ফলে ত্বকের কোষগুলোতে অনবরত এনার্জি সরবরাহ হতে থাকে। যার ফলে ত্বক থাকে প্রাণবন্ত ও সজিব।

জিঙ্ক
জিঙ্ক ত্বকে সেবেশিয়াস গ্রন্থিকে স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। শুধু তাই নয় স্কিন ড্যামেজের হাত থেকেও বাঁচায়। ত্বকে আনে মসৃন ভাব। তাই মাছ, লিন রেড মিট, চিকেন, বাদাম, হোল গ্রেনের মতো খাবার খেতে পারেন।

যা ভুলে যাবেন না
ডায়েটের সঙ্গে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। পানি শরীরকে আর্দ্র রাখে ও শরীর থেকে টক্সিন বের করে দেয়।
ত্বক ভালো রাখতে হলে কোনোভাবেই ক্র্যাশ ডায়েট করা চলবে না। এর ফলে আমাদের ত্বকে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top