সকল মেনু

অডিও রেকর্ডটি আমার নিজেরই-শামীম ওসমান

 জেলা প্রতিনিধি,নারায়ণগঞ্জ,হটনিউজ২৪বিডি.কম: নারায়ণগঞ্জে সাত খুনের মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনের সঙ্গে কথোপকথনের অডিওটি নিজের বলে স্বীকার করেছেন সরকার দলীয় সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। শুক্রবার রাতে গুলশানে নিজের বাসায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘ওটা আমারই কণ্ঠ। অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই। নূর হোসেনই আমাকে ফোন করেছিলেন।’

নারায়ণগঞ্জের সাত খুন মামলার প্রধান আসামি নূর হোসেনকে ভারতে পালিয়ে যেতে শামীম ওসমান সহযোগিতা করেছেন বলে শুক্রবার গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হয়েছে। একই সঙ্গে প্রকাশিত হয়েছে নূর হোসেনের সঙ্গে শামীম ওসমানের কথোপকথনের একটি অডিও।

গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলামসহ সাতজনকে অপহরণ করা হয়। এর দুদিন পর ২৯ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে শামীম ওসমানকে ফোন করেন নূর হোসেন। ১০৩ সেকেন্ড তাদের মধ্যে কথা হয়। শামীম ওসমানকে ফোন করার সময় ধানমন্ডি ৪ নম্বর সড়কের আশপাশে অবস্থান করছিলেন নূর হোসেন।

অডিওর শুরুতে শামীম ওসমানকে সালাম দেন নূর হোসেন। তখন শামীম ওসমান বলেন, ‘খবরটা পৌঁছাই দিছিলাম, পাইছিলা?’ জবাবে নূর হোসেন বলেন, ‘পাইছি, ভাই।’ শামীম ওসমান বলেন, ‘তুমি চিন্তা করো না।’ নূর হোসেন এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ভাই, আমি লেখাপড়া করিনি। আমার অনেক ভুল আছে। আপনি আমার বাপ লাগেন। আপনারে আমি অনেক ভালোবাসি, ভাই। আপনি আমারে একটু যাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন।’

জবাবে শামীম ওসমান বলেন, ‘একটু সময় দাও। এখন আর কোনো সমস্যা হবে না।’ শামীম ওসমান ‘গৌর দা’ বলে এক লোকের সঙ্গে নূর হোসেনকে দেখা করতে বলেন।

নূর হোসেনের কাছে শামীম ওসমান জানতে চান, ‘কোনো সিল আছে কি না। সিল থাকার কথা জানিয়ে নূর হোসেন বলেন, ‘আছে আছে, সিল আছে, কিন্তু যামু ক্যামনে? রেড অ্যালার্ট যে। শামীম ওসমান বলেন, ‘না কিছু নেই। মনে হয় না। তুমি আগাইতে থাক।’ নূর হোসেন তখন বলেন, ‘ভাই, তাহলে একটু খবর নেন। আমি আবার ফোন দেই।’

কথাবার্তার একপর্যায়ে শামীম ওসমান নূর হোসেনকে বলেন, ‘তুমি কোনো অপরাধ করো নাই। আমি জানি, ঘটনা অন্য কেউ ঘটাইয়া এক ঢিলে দুই পাখি মারতেছে।’

উল্লেখ্য, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের প্যানেল মেয়র নজরুল ইসলাম ও আইনজীবী চন্দন সরকারসহ সাতজনকে অপহরণের পর শীতলক্ষ্যা নদী থেকে তাদের লাশ উদ্ধার হয়। এ ঘটনায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ ওঠার পর র‌্যাব-১১ এর তৎকালীন অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তারেক সাঈদ মাহমুদ ও মেজর আরিফ হোসেন ও নৌবাহিনীর লেফটেন্যান্ট কমান্ডার এমএম রানাকে ২৮ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করা হয়। গত ৩০ এপ্রিল তিন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়।

সাত খুনের মামলায় প্রধান আসামি করা হয় সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগ নেতা নূর হোসেনকে। তার দেয়া ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে র‌্যাবের ওই তিন কর্মকর্তাসহ অন্যরা সাতজনকে হত্যা করেছেন এমন অভিযোগ করেন নিহত নজরুল ইসলামের পরিবার।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top