সকল মেনু

সংসদ নির্বাচনের ব্যয় বিবরণী ব্যবস্থা নেয়া হতে পারে এরশাদসহ ৩৩ প্রার্থীর বিরুদ্ধে

image_91142_0নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী জমা না দেয়ায় ৯ সংসদ সদস্যসহ ৩৩ জন প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারদের সম্মতি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জাতীয় সংসদের ডিপুটি স্পিকার ও প্রধান হুইপ রয়েছেন।

এর আগে  নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীরা নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনী ব্যয় জমা দিয়েছেন কি না, তা জানতে চেয়ে নির্বাচন কমিশন রির্টার্নিং অফিসার বরাবর  চিঠি দেয়। এ চিঠির জবাবে রির্টার্নিং অফিসাররা নির্বাচনী ব্যয়ের তথ্য কমিশনে পাঠান এবং যারা নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনী ব্যয় জমা দেয়নি এবং যারা দুদিন পরে জমা দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে, এ বিষয়ে কমিশনের মতামত চান । এর ভিত্তিতে কমিশন অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সম্মতি দেয়।

জানা যায়. জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ লালমনিহারট-১ আসন থেকে নির্বাচনের অংশ নেন। কিন্তু তার গেজেট প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনী ব্যয় জমা দেয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত জমা দেননি। ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া গাইবান্ধা-৫ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তার ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়ার আইনি বাধ্যবাধকতা থাকলেও তিনি জমা দেন ১৭ ফেব্রুয়ারি। এছাড়া সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদের নির্ধারিত সময়ে নির্বাচনী ব্যয় জমা দেননি।

এছাড়া জাতীয় সংসদের প্রধান হুইপ আ স ম ফিরোজ পটুয়াখালী-২ থেকে নির্বাচনে অংশ নেন। তিনিও যথাসময়ে ব্যয়ের হিসাব জমা দেননি। তিনি ব্যয়ের হিসাব জমা দেন ৯ ফেব্রুয়ারি।

নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, গেজেটে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের ব্যয়ের হিসাবে নিজ নিজ রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেয়ার আইনি বিধান রয়েছে এবং এর অনুলিপি ইসি সচিবালয়েও পাঠানোর কথা রয়েছে।

সরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করে ৮ জানুয়ারি গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সে মোতাবেক ৭ ফেব্রুয়ারি ব্যয় বিবরণী জমা দেয়ার শেষ দিন ছিল।

এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক সাংবাদিকদের জানান, নির্বাচন আইন অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে ব্যয়ের হিসাব জমা দিতে হবে। সুতরাং নির্ধারিত সময়ের একদিন পরেও কেউ নির্বাচনের ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়, সেটাও আইনের লঙ্ঘন।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব পর্যায়ের এক কর্মকর্তা বাংলামেইলকে বলেন, ‘যথাসময়ে ব্যয় রিটার্ন দাখিলে ব্যর্থ হলে রিটার্নিং অফিসাররা সংশ্লিষ্ট প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করতে পারবেন। এতে তাদের দুই থেকে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।’

যারা এখনো রিটার্ন জমা দেননি
লালমনিহাট-১ আসন থেকে নির্বাচনে অংশ নেয়া জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী (জেপি) শেখ মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন, টাঙ্গাইল-৮ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী শওকত মোমেন শাহাজান, শেরপুর-৩ আসনে জাসদের মনোনীত প্রার্থী এসএম আবদুর রাজ্জাক, একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হেদায়েত ইসলাম,সুনামগঞ্জ-৫ আসনে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্টের (বিএনএফ) মনোনিত প্রার্থী মোহাম্মদ আশরাফ হোসেন,কুমিল্লা-৫ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমান, লক্ষ্মীপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী মোহাম্মদ মাহমুদুর রহমান মাহমুদ,লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী ও জাতীয় যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক মো. বেলাল হোসেন এবং একই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী একেএম শরিফ উদ্দিন।

তবে এর মধ্যে টাঙ্গাইল-৮ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনিত প্রার্থী শওকত মোমেন শাহাজান মারা গেছেন। তার আসনে ইতোমধ্যে উপ-নির্বাচনও সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া কুমিল্লা-৫ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনীত প্রার্থী শফিকুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন রিটার্নিং অফিসার।

নির্ধারিত সময়ের পরে যারা জমা দিয়েছেন
বিজয়ী প্রার্থীরা হলেন: গাইবান্ধা-৫ আসনের ডেপুটি স্পিকার মো. ফজলে রাব্বী মিয়া। প্রধান হুইপ পটুয়াখালী-২ আসনের আ স ম ফিরোজ। ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের ইয়াসিন আলী, ভোলা-২ আলী আজম,সুনামগঞ্জ-১ মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, কুমিল্লা-৩ ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, খুলনা-১ ননী গোপাল মন্ডল, চট্টগ্রাম-২ আসনে তরিকত ফেডারেশনের নজিবুল বশর মাইজভান্ডারি ও চট্টগ্রাম-১১ এম আবদুল লতিফ।

পরাজিত প্রার্থীরা হলেন : লালমনিরহাট-১ আসনে ছাদেকুল ইসলাম, লালমনিরহাট-৩ গোলাম মোহাম্মদ কাদের, ঝিনাইদহ-৩ কামরুজ্জামান স্বাধীন, ভোলা-২ মো. ছালাউদ্দিন, ময়মনসিংহ-৭ হাফেজ রুহুল আমিন, মুন্সিগঞ্জ-২ মো. আবদুল ওয়াদুদ, সুনামগঞ্জ-৩ আজিজুস সামাদ আজাদ, কুমিল্লা-১ আবু জায়েদ আল মাহমুদ, চট্টগ্রাম-২ নাজিম উদ্দিন, দিদারুল আলম চৌধুরী, চট্টগ্রাম-৯ আলী আহমদ নজির, আবু হানিফ, চট্টগ্রাম-১৩ তপন চত্রবর্তী এবং চট্টগ্রাম-৪ ও চট্টগ্রাম- ১৬ আসনের আ আ ম হায়দার আলী চৌধুরী।

প্রসঙ্গত, গত ৮ জানুয়ারি নির্বাচিত ২৯৮ জনের গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। আচরণবিধি লঙ্ঘনের কারণে যশোর-১ ও ২ আসনের গেজেট স্থগিত করা হয়। সে মোতাবেক ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়ার সময়সীমা শেষ হয়েছে গত ৭ ফেব্রুয়ারি। মোট ৫৪৩ জন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top