সকল মেনু

ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাসে পুড়ে গেছে ১০০ একর বোরো ধান

 ডাঃ জি এম ক্যাপ্টেন, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধিঃ কুড়িগ্রামে ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাস নির্গমন জনিত ত্রুটির কারনে ১০০ একরেরও অধিক বোরো ধান সম্পুর্ণ রুপে পুড়ে গেছে। বিরুপ প্রভাব পড়েছে গাছ পালায়। এ পরিস্থিতিতে বিপুল পরিমান ক্ষতির মুখে পড়া কৃষকদের মধ্যে শুরু হয়েছে আহাজারী। কুড়িগ্রাম সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের পরম আলী গ্রামে কৃষি জমির উপর গড়ে ওঠা সিএইচবি ইট ভাটা। এ ভাটা থেকে নির্গত গ্যাস পাশ্ববর্তী উঠতি বোরো ধান ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ায় শতাধিক একর জমির ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯ জাতের ধান সম্পুর্ণ রুপে নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়েছে পার্শ্ববর্তী এলাকার গাছপালা। ক্ষতিগ্রস্থ বোরো ক্ষেতের মালিকরা জানান, ধান ঘরে ওঠার পুর্ব মুহুর্তে এসে এই অনাকাংখিত বিপর্যয়ে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে। ধার-দেনা করে উৎপাদন খরচ মেটালেও এ মৌসুমে এক ছটাক দানাও উঠবে না কোন কৃষকের গোলায়। ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকরা আবাসিক এলাকায় ফসলি জমিতে ইট ভাটা বন্ধের দাবী জানিয়ে আসলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগ কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় তারা চরম ক্ষতির মুখে পড়েছে।পরমআলী গ্রামের কৃষক আবেদ আলী জানান, আমি ৫ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করেছি। যা পুজি ছিল তার সবটুকুই শেষ করে কিছু ধার দেনা করে আবাদের পিছনে খরচ করেছি। এখন ধান ঘরে তোলায় অপেক্ষায় ছিলাম। এর মধ্যেই ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় সব পুড়ে ছাই হয়ে গেলো। এ অবস্থায় আমি পরিবার পরিজন নিয়ে খাবো কি আর চলবোই বা কিভাবে। আমার পথে বসা ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আমরা ক্ষতি পুরনের পাশাপাশি ইট ভাটা বন্ধের দাবী জানাই।  সিএইচবি ইট ভাটা মালিক, শাহীন চৌধুরী জানান, ভাটায় গ্যাস নির্গমন জনিত ত্রুটির কথা স্বীকার করে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের ক্ষতিপুরনের আশ্বাস দিন তিনি।কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক প্রতিপ কুমার মন্ডল সরেজমিনে পরিদর্শন করে জানান, ইট ভাটার বিষাক্ত গ্যাস বাতাসের মাধ্যমে এসব ক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ায় সদরের ভোগডাঙ্গা ইউনিয়নের পরমআলী গ্রামে প্রায় ১০০ একরেরও বেশি জমির ফসল নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকাসহ জমির সঠিক পরিমান নির্ধারনের নির্দেশ দিয়েছি। এ লক্ষে আমাদের কৃষি বিভাগের লোকজন কাজ করছে। সরেজমিন ঘুরে এসে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সাথে আলোচনা করা হয়েছে। ইট ভাটার মালিকের নিকট ক্ষতিপুরন আদায়ের কথাও জানান তিনি। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক, এ বি এম আজাদ ইট ভাটার বিষাক্ত ধোয়ায় ফসল পুড়িয়ে যাওয়ার কথা স্বীকার করে জানান, ক্ষতি পুরনের পাশাপাশি ইটভাটা পরিবেশ সম্মত উপায়ে গড়ে উঠেছে কিনা ক্ষতিয়ে দেখা হবে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কৃষকদের ক্ষতির পরিমান নিরুপনে জেলা কৃষি কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়ার কথাও জানান তিনি। একদিকে কৃষি জমি নষ্ট করে ইট ভাটা তৈরি, অন্যদিকে পরিবেশ সম্মত উপায়ে ইট পোড়ানোর প্রশাসনিক নজরদারী না থাকায় কৃষি ও কৃষকের ক্ষতি ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ব্যাপারে দ্রুত পদক্ষেপ নেবে সংশ্লিষ্ট বিভাগ এমনটাই প্রত্যাশা এখানকার মানুষের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top