সকল মেনু

কমলগঞ্জে ধলাই নদীর ভাঙ্গনে আকস্মিক বন্যা ১৫টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ

  এম শাহজাহান আহমদ,মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জে গত দু’দিনের ভারী বর্ষন ও পাহাড়ি ঢলের পানিতে ধলাই নদীর প্রতিরক্ষা বাঁধের ২টি স্থানে ভাঙ্গনের ফলে আকস্মিক বন্যা দেখা দিয়েছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে ৫০টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ভানুগাছ বাজারের পাশে নতুন ব্রিজ এলাকায় ঝুঁকিপূর্ণ ফাটল দিয়ে পানি বের হতে শুরু করলে এলাকাবাসী বাঁধ মেরামত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। ভানুগাছ পৌর বাজার বণিক সমিতির পক্ষ থেকে মাইকিং করে লোকজনকে সতর্ক করে দিয়েছেন। কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ভানুগাছ বাজার হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়া ধলাই নদীর ১৫টি স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। বৃহষ্পতিবার এই দুইটি স্থানে ভাঙন দেখা দেয়।  জানা যায়, গত দুই দিনে ভারী বর্ষন ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কমলগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী ইসলামপুর ইউনিয়নের সরিষাবিল এলাকায় দুপুর ১টায় ও কমলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের উজিরপুর এলাকায় বিকেল সাড়ে ৩টায় ধলাই নদীর বাঁধে ভাঙ্গন দেখা দেয়। ফলে ইসলামপুর ইউনিয়নের দক্ষিন গুলের হাওর গ্রামের ৩৫টি পরিবার ও উজিরপুর এলাকার ১৫টি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। এদিকে ভানুগাছ বাজার সংলগ্ন ধলাই নদীর নতুন ব্রিজের পাশে বাঁধে ফাটল দিয়ে পানি বের হতে শুরু করে। খবর পেয়ে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা, পৌর মেয়র আবু ইব্রাহীম জমসেদ, ভানুগাছ পৌর বাজার বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মখলিচুর রহমানের নেতৃত্বে স্থানীয় এলাকাবাসী বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করেন। ধলাই নদীর প্রায় ১৫টি স্থান সম্পূর্ন ঝুঁকিপূর্ন থাকায় আরও ভাঙ্গনের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ভানুগাছ বাজার পৌর বণিক সমিতির পক্ষ থেকে মাইকিং করে ব্যবসায়ীবৃন্দকে বন্যার সম্ভাবনা জানিয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়। ইসলামপুর ইউপি চেয়ারম্যান সুলেমান মিয়া  নদী ভাঙ্গনের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, দক্ষিণ গোলের হাওর এলাকায় ৩৫টি পরিবার পানি বন্দি রয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে এসব পরিবার সমূহে চিড়া, গুড় বিতরণ করা হয়েছে। এদিকে কমলগঞ্জ পৌর এলাকার ভানুগাছ চৌমুহনা সংলগ্ন কুমড়াকাপন এলাকায় জলাবদ্ধতায় লোক চলাচল মারাতœভাবে ব্যাহত হচ্ছে। আলাপকালে আলেপুর গ্রামের নজমুল ইসলাম, আলমাছ মিয়া, সিরাজুল ইসলাম, খোকন মিয়া জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের গাফিলাতির কারণে ধলাই ব্রীজের বাঁধ মেরামতের কাজ যথাসময়ে শেষ হয়নি। যে কোন মুহুর্তে বাঁধ ভেঙ্গে একটি প্রাইমারী স্কুল সহ আলেপুর গ্রামটি নদীগর্ভে তলিয়ে যেতে পারে।
কমলগঞ্জ পৌর মেয়র আবু ইব্রাহিম জমশেদ ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ধলাই নদীর একাধিক স্থান ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে বার বার আবেদন জানানোর পরও কার্যকরী কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, কমলগঞ্জ উপজেলার সরিষাবিল ও উজিরপুর এলাকায় নদী ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এছাড়া পৌর এলাকার ধলাই নদীর নতুন ব্রিজের পাশে ফাটল দিয়ে পানি বের হচ্ছে। তিনি এসব এলাকা পরিদর্শন করছেন। মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আজিজ মোহাম্মদ চৌধুরী বলেন, ধলাই নদীর ১০টি পয়েন্ট সম্পূর্ন ঝুঁকিপূর্ণ। তিনি নদী ভাঙ্গনের খবর পেয়ে লোক পাঠিয়েছেন। তাছাড়া বৃহষ্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ধলাই নদীর পানি বিপদ সীমার এক ইঞ্চি নিচে রয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top