সকল মেনু

তরমুজ চাষ করে নারায়ন এখন কোটিপতি

 গৌরাঙ্গ লাল দাস , কোটালীপাড়া (গোপালগঞ্জ) প্রতিনিধি: পনের বছর আগে যে ছিল একজন বেকার যুবক।দৈনতা যাকে সার্বক্ষনিক ভাবে তাড়া করে বেরাতো।মাত্র পনের বছরের ব্যবধানে শারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে দৈনতাকে জয় করে আজ সে সাবলম্বী ।উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে মাত্র ২৬ শতক জমিতে তরমুজের চাষ শুরু করে পা রাখেন সাবলম্বী হবার সিড়িঁতে।ধাপে ধাপে তরমুজ চাষের বিভিন্ন সিড়িঁ পাড়ি দিয়ে তরমুজ চাষ করে আজ সে কোটিপতি।অসম্ভবকে সম্ভব করে এলাকার তরমুজ চাষিদের মাঝে আদর্শ চাষি হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে,গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার কলাবাড়ী ইউনিয়নের বরুয়া গ্রামের নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস। সরেজমিনে জানা গেছে,উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাসের পরামর্শে ২৬শতক জমিতে তরমুজ চাষ করে নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস।এই ২৬ শতক জমিতে তরমুজের বাম্পার ফলন হয়। এই তরমুজ স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে উৎপদন খরচের চেয়ে তিন গুন লাভ হয়। পরের বছর নারায়ন দু’একর জমিতে তরমুজ চাষ করে।এ বছরও তরমুজের বাম্পার ফলন হয়।ঘুরতে থাকে বেকার কৃষক নারায়নের ভাগ্যের চাকা।চতুর্থ বছরে এসে নারায়ন ১০ একর জমিতে তরমুজের চাষ করে।এ বছর তার দেখা দেখি কলাবাড়ী ইউনিয়নের চিতলীয়ার বিলে প্রায় অর্ধশত কৃষক তরমুজ চাষ করে।প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর নারায়ন প্রায় ৫০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিল।শুধু চিতলীয়ার বিল নয় বর্তমানে কলাবাড়ী ইউনিয়নের বুরুয়া,নলুয়া ,মাছপাড়া, তেতুলবাড়ী, কুমুরিয়া ,রুথিয়ার পাড়, হিজলবাড়ী, চকপুকুরিয়াসহ প্রায় ২০টি বিলে তরমুজের চাষ হয়।উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, অত্র উপজেলায় ৩শত ৫০ হেক্টর জমিতে এ বছর তরমুজের চাষ করা হয়। উৎপাদন হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার মেঃ টন তরমুজ।কালীগঞ্জ গ্রামের দীনেশ হালদার জানান- নারায়নের দেখাদেখি আমরা তরমুজ চাষ শুরু করেছি। তরমুজ ক্ষেতে কোন সমস্যা দেখা দিলে আমরা নারায়নের পরামর্শ গ্রহন করি।আমাদের এখানে উচ্চ ফলনশীল ফিল্ডকিং, সুগার, ফিল্ডমাস্টার, টফিল, জাম্বুম্যান, গোরিয়া, সুপ্রিম সুগার, চ্যাম্পিয়ন,এশিয়ান-টু(বাংলালিংক) জাতের তরমুজের চাষ হয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে ভাল ফলন হয়েছে এশিয়ান-টু(বাংলালিংক) জাতের তরমুজ। সফল তরমুজ চাষী নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস বলেন,এ বছর আমি ৫০ একর জমিতে তরমুজ চাষ করেছিলাম।খরচ হয়েছিল ৩০ লক্ষ টাকা।উৎপাদন খরচ ও লাভ মিলে ৯০ লক্ষ টাকার তরমুজ বিক্রি করেছি।সরকারি সহযোগীতা পেলে ভবিষ্যতে আমি ও এলাকার তরমুজ চাষীরা আরও ভাল করতে পারবো। উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মনোরঞ্জন বিশ্বাস বলেন,পনের বছর আগে নারায়ন ছিল একজন বেকার যুবক।আমার পরামর্শ নিয়ে ২৬ শতক জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করে।আজ সে একজন সফল তরমুজ চাষী ।যাকে অনুসরন করে উপজেলার অনেকেই তরমুজ চাষের দিকে ঝুকছে।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা রথীন্দ্রনাথ বিশ্বাস বলেন,দক্ষিন বাংলার সর্ববৃহত তরমুজ উৎপাদন ক্ষেত্র কোটালীপাড়া।এখান থেকে প্রতিদিন কোটি টাকার তরমুজ যায় দেশের বিভিন্ন এলাকায়।চৈত্রের মাঝামাঝি থেকে বৈশাখের শেষ পর্যন্ত চলে বিক্রি। সে হিসাব মতে প্রতি বছর ৫০ থেকে ৬০ কোটি টাকার তরমুজ এ এলাকায় উৎপাদন হয়।আর এর পিছনে যথেষ্ট অবদান রয়েছে নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাসের।সে এখন কোটালীপাড়ার তরমুজ চাষিদের কাছে রোলমডেল।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top