সকল মেনু

ভোলার মনপুরায় বনাঞ্চলের হরিণ লোকালয়ে

 এম. শরীফ হোসাইন, ভোলা: ভোলা মনপুরা উপজেলায় বিভিন্ন বনাঞ্চল থেকে লোকালয়ে আসছে  হরিণ। দক্ষিণাঞ্চলের উপজেলাগুলোতে মাত্রাতিরিক্ত লবণাক্ততা ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্রমাণয়ে ধ্বংস হচ্ছে গাছ-পালা ও বনের পশুপাখি। বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে পরিবেশ, যার বিরুপ প্রভাব দেখা দিয়েছে ক্ষতিকারক ভাইরাস ও মরণ ঘাতক জীবানু। দিনের পর দিন উজাড় হতে বসেছে বনাঞ্চল। আবাসস্থলে খাদ্য-মিঠা পানির সংকট, নির্বিচারে গাছ কাটা ও জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে এসব হরিণ সংরক্ষিত বন থেকে লোকালয়ে চলে আসছে। বিগত বছরের তুলনায় এ বছরের অর্ধশতাধিক হরিণ ভোলার মনপুরা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে আসে। লোকালয়ে আসা এসব হরিণকে লক্ষ্য কওে চোরা শিকারীরাও তৎপর হয়ে ওঠে। আর বন থেকে আসা  হরিণ গোপনে স্থানীয়রা শিকার করে নিচ্ছে। গত এক মাসে বন বিভাগের কর্মকর্তারা লোকালয়ে আসা ১০টি হরিণ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করে।সূত্রে জানা যায়, লোনা পানি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের কারণে নিঝুম দ্বীপসহ বিভিন্ন বন থেকে দল বেধে হরিণ মনুপরা ও তজুমদ্দিনসহ বিভিন্ন স্থানে ভাসতে ভাসতে লোকালয়ে চলে আসছে। এর মধ্যে কিছু আসছে খাদ্যের সন্ধানে এবং কিছু মিঠা পানির সন্ধানে। হরিণ দেখে আবার স্থানীয়রা ধাওয়া করছে। আবার কখনো স্থানীয়দের খাবার হয়ে উঠছে।
মাদ্রাসা শিক্ষক ঈসমাইল হোসেন জানায়, অনেক সময় লোকালয়ে আসা এসব হরিণকে আটক করে স্থানীয়রা। তবে বন বিভাগের উদাসীনতার কারণে প্রায়ই শিকারীরা হরিণ শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে। বন বিভাগ সঠিক নজরদারি করলে এসব হরিণ নিরাপদে রাখা সম্ভব। হরিণ রক্ষার জন্য জনগনের মধ্যে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা চললেও চলতি বছরে তা করা হয়নি, ফলে মানুষ হরিণ দেখেই ধাওয়া করছে। এলাকাবাসীর ধাওয়া খেয়ে অনেক সময় হরিণ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে, মাঝে মধ্যে আবার মারাও যাচ্ছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, জাল পেতে ও বন্দুক দিয়ে দিয়ে এক শ্রেণীর শিকারী হরিণ শিকারে বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। তারা পুলিশ ও বন বিভাগের চোখের আড়ালে জঙ্গল থেকে হরিণ ধরে মাংস ও চামড়া বিভিন্ন স্থানে বিক্রি করছে। এদের সঙ্গে জড়িত রয়েছে কিছু অসাধু জেলে চক্র।

বন বিভাগ  জানায়, ভোলার চর কুকরী-মুকরী, ঢালচর, কলাতলীর চর, চর পাতালিয়া, চর সামসুদ্দিন, জনতা বাজার, চর উড়িল, বদনার চর, সাকুচিয়া, হাজিরহাটে রয়েছে সংরক্ষিত বনাঞ্চল। সেখানে বিভিন্ন প্রজাতির বৃক্ষের পাশা-পাশি প্রায় ১৫ হাজার চিত্রা হরিণ রয়েছে।
বন বিভাগের রেঞ্চ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, আমরা এ পর্যন্ত ১০টি হরিণ উদ্ধার করে বনে অবমুক্ত করে দিয়েছি। বনে মিঠা পানির সংকট থাকায় পানি ও খাদ্যের সন্ধানে হরিণ চলে আসছে লোকালয়ে। বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনপুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল বাকীর সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আইনশৃঙ্খলা কমিটির মিটিং এ বিষয়টি উত্থাপিত হয়েছে। চোরা শিকারিরা যাতে হরিণ শিকার করতে না পারে সে দিকে লক্ষ্য রাখার জন্য পুলিশকে কঠোর নজরদারী রাখতে বলা হয়েছে। ইতোমধ্যে কিছু হরিণ উদ্ধার করাও হয়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top