সকল মেনু

হাইল হাওর প্রভাবশালীদের দখলে;মৎস্য ও জলাভূমি সংকটাপন্ন

 মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: সরকারের নিয়ন্ত্রনে থাকা মৌলভীবাজারের ঐতিহ্যবাহী হাইল হাওর দখল করে চলছে ফিসারী নির্মান। প্রভাবশালী মহলের আর্শীবাদপুষ্ট একটি মহল অবৈধভাবে হাওরে এক্সিভেটর মেশিন লাগিয়ে চালিয়ে যাচ্ছে ফিসারী ও পুকুর খননে কাজ। ইতিমধ্যেই দখল হয়ে গেছে বিশাল এই হাওরের ৭০০ একর ভ’মি। সরকারের বিপুল পরিমাণ রাজস্ব ক্ষতি ছাড়াও হাইল হাওরটি স্বমুলে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পথে বসেছে। হাওরটিকে রক্ষার জন্য সভা সমাবেস মানববন্ধনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেও কোন কাজ হচ্ছে না উদ্ধারে। বরং প্রভাবশালীদের হাতে ভ’মি হারানোর আতংকে রয়েছেন সরকার কর্তৃক বন্দোবস্ত পাওয়া হাওর পাড়ের কয়েক’শ পরিবার। এতে করে অভয়াশ্রম সংলগ্ন হাইল হাওরের মৎস্য ও জলাভূমি সংকটাপন্ন হয়ে পড়ায় পরিবেশ ও প্রতিবেশ হুমকির মূখে দাড়িয়েছে। পাশাপাশি হাইল হাওরের সাথে সংযুক্ত থাকা স্থায়ী অভয়াশ্রম হিসাবে সীকৃত বাইক্কাবিলটি ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে দাড়িয়েছে।
মৌলভীবাজার সদর ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার ১৪ হাজার এক্টর আয়তনের হাইল হাওরটি বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্ব¡পূর্ণ জলাশয়ের অন্যতম। অর্থনৈতিক উন্নয়ন, প্রাকৃতিক ভারসাম্য আর জীববৈচিত্র্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এই হাইল হাওর। জলাভূমির বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণীর আবাসস্থলের জন্য প্রয়োজনীয় এবং উৎপাদনশীল প্রতিবেশ প্রদান করে এই হাইল হাওর। সরকার হাইল হাওরে মধ্যে গরীব জনগোষ্ঠীদের মাঝে বন্দোবস্ত দেয়া জমি প্রভাবশালীরা সিন্ডিকেট তৈরি করে অল্প মূল্যে ক্রয় করে জমির শ্রেণী পরিবর্তন করে মৎস্য খামারে রূপান্তরিত করছে বলে অভিযোগে রয়েছে। যা হাওরের মৎস্য সম্পদ ও জীববৈচিত্রকে ধ্বংস করার শামিল। সরকার কর্তৃক ভূমিহীন চাষীদের নিকট বরাদ্ধকৃত জমি কোন অবস্থাতেই ভূমিহীনরা কারও নিকট বিক্রয় কিংবা হস্থান্তর করা আইনত অপরাধ হলেও চলছে দখলের লুটপাট। এলাকাবাসীর অভিযোগ খাসজমি দখলের মূল হোতা হাজীপুর গ্রামের হাজী মনির মিয়া। হাওরে গরীব জেলেদের জাল চুরি ও অন্যের খেতের পাকা ধান চুরি করে তা বিক্রি করে পুজি সংগ্রহ করে দরিদ্র লোকদের মাঝে চড়া সুদে টাকা লগ্নি করে রাতারাতি অনেক টাকার মালিক হয়ে যান মনির মিয়া। সিমানা পিলার বিক্রি করে অনেক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে জেল হাজতে যেতে হয় তাকে। খাসজমি দখল করে পুকুর তৈরী করে ৫০ বিঘা জমি জনৈক হাবিবুর রহমানের কাছে ৩০ লক্ষ টাকায় বিক্রি করে।  এছাড়াও ৬০ বিঘা ভুমি জনৈক সাজুর নিকট ৫০ লক্ষ টাকা, হাজী জসিমের নিকট ২০০ বিঘা, শামীম গাজীর নিকট ১০০ বিঘা, যার মূল্য ৪০ লক্ষ টাকা। হাজী মনির মিয়া আরও ৬০ বিঘা ভুমি দখল করে পুকুর খনন করেছে। তার সাথে দখল বাণিজ্যের সিন্ডিকেটে রয়েছেন সানু মিয়া,খয়ছর মিয়া।
সরকারীভাবে জলমহাল পাহাড়া দেবার কোন ব্যব¯’া না থাকায় এরই সুযোগে প্রভাবশালী মহলের আর্শীবাদপুষ্ট কিছু মহল অবৈধভাবে উক্ত জলমহাল হতে অবাধে মৎস্য সম্পদ লোটপাট করে চলেছে। নামে বেনামে অনেক মৎস্যজীবি সমিতি আংশিক জলমহাল সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী ইজারা বন্দোবস্ত নিয়ে অবৈধ্যভাবে তার চেয়ে বেশী ভুমি দখল করে ফিশারী বা নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। এরই মধ্যে হাওরের ৭০০ একর ভ’মি দখল হয়ে গেছে। এছাড়াও দখল আতংকে রয়েছেন হাওর পারের বন্দোবস্ত পাওয়া কয়েক’শ পরিবার।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে শ্রীমঙ্গল সহকারী কমিশনার ভ’মি মো. নুরুল হুদা বলেন, ভুমিকেখোদের বিরুদ্ধে মামলা ও তাদের হাত থেকে মোবাইল কোর্ট এর মাধ্যমে হাওরের দখলকৃত ভুমি উদ্ধারে ব্যবস্থা গ্রহন করবেন। হাইল হাওর দখলের প্রভাব বাইক্কাবিল অভয়াশ্রমে পরবে বলে জানালেন তিনি।
সরকার কর্তৃক ভূমিহীনদের মধ্যে বরাদ্ধকৃত জমি প্রভাবশালীদেও কাছে বিক্রি করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা না নেয়ায় সরকারের কোটি কোটি টাকার সম্পদ হাত ছাড়া হচ্ছে। ভুমিহীনরা বেআইনি ভাবে স্বল্প মূল্যে বিক্রয় করেছেন তাহা পুন:রায় সরকারের আওতায় এনে রক্ষা প্রয়োজন। বৃহত্তম ঐতিহ্যবাহী হাইল হাওরের ভুমি অবৈধভাবে দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করে হাওরের ঐহিত্য ও সরকারেরর কোটি কোটি টাকার সম্পদ রক্ষায় সরকার এগ্রিয়ে আসবেন এমনটাই প্রত্যাশা সাধারন মানুষের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top