সকল মেনু

চাঁদপুরের নানুপুর-দোকানঘর সড়ক মরন ফাঁদে পরিনত

 শাহ মোহাম্মদ মাকসুদুল আলম, চাঁদপুর: চাঁদপুর শহর লাগোয়া নানুপুর থেকে দোকানঘর পর্যন্ত পাঁচ কিলোমিটার সড়ক মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। এই সড়কটির অবস্থা এতই খারাপ যে, কোন সুস্থ্য মানুষও যদি ওই সড়কে যানবাহন নিয়ে চলাচল করে তবে সে মুহূর্তেই অসুস্থ্য হয়ে পড়বে। এই পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে মাত্র দুই কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজের জন্য দরপত্র আহ্বান করে কার্যাদেশ দেয়া হলেও তিন মাসেও সড়কের মাটির কাজেরও অর্ধেক করা হয়নি। ফলে সড়কে চলাচলকারী মানুষ বিক্ষুব্দ হয়ে উঠেছে।
নানুপুর টু দোকানঘর সড়কটি একাংশ সদর উপজেলার বাগাদি ইউনিয়ন এবং আরেকাংশ চাঁদপুর পৌরসভার সম্প্রসারিত এলাকার মধ্যে পড়েছে। সড়কটির অবস্থান চাঁদপুর সেচ প্রকল্পের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের উপর। সড়কটি নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এটি প্রতিষ্ঠার পর এবারই প্রথম সংস্কারের উদ্যোগ নেয় সড়ক ও জনপথ কর্তৃপক্ষ। পাঁচ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে মাত্র ২ কিলোমিটার সড়কের উন্নয়নের জন্য ২ কোটি ৫৮ লাখ টাকা প্রাক্কলন ব্যায় ধরে দরপত্র আহ্বান করা হলেও কুমিল্লার এভিএসডিএসবি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মাত্র ২ কোটি টাকায় প্রায় ২৩ ভাগ কম দামে কাজটি করার অনুমতি লাভ করে। চলতি বছরের গত ২৬ জানুয়ারি ওই প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশ দেয়া হয়। কিন্তু এর পর তিন মাস অতিবাহিত হতে চললেও তারা এখনো সড়কের দু’পাশে মাটি ফেলার কাজই শেষ করতে পারেনি। অথচ বর্ষা সমাগত। ফলে এলাকাবাসী ক্ষেপে উঠেছে ।
ওই সড়কটির অবস্থা এমনিতেই বেহাল। তার উপর সড়কের স্থানে স্থানে কেটে ড্রেজারের পাইপ বসিয়ে এটিকে আরো বিপজ্জনক করে তোলা হয়েছে। এলাকার লোকজনের অভিযোগ, ভ’মিদস্যু একদল লোক দীর্ঘদিন দরে এভাবে সড়ক কেটে অবৈধ মাটির ব্যবসা চালিয়ে আসছে।
এলাকার লোকজন অভিযোগ করেছে , নিয়মানুযায়ী বাইরে থেকে মাটি এনে সড়কের পাশে ফেলার কথা। অথচ ঠিকাদারের লোকজন তা মানছে না। অবশ্য ঠিকাদারের মাটি সরবরহকারী প্রতিনিধি তা অস্বীকার করলেন।
বর্তমানে যে দুই কিলোমিটার সড়কের উন্নয়ন কাজ হবার কথা তার সবটুকু এলাকাই পড়েছে বাগাদী ইউনিয়নে। অথচ এই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলী পাঠান সড়কের উন্নয়ন কাজের ব্যাপারে কিছুই জানেন না। তিনি জানালেন, তাকে সড়ক বিভাগ থেকে কিছুই অবহিত করা হয়নি। তবে তিনি দেখেছেন, মাটি ফেলার কাজ হচ্ছে।
কাজের দীর্ঘসূত্রিতা, অনিয়ম, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হবার আশংকা উড়িয়ে দিলেন চাঁদপুর সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ জাহেদ হোসেন। তিনি জানান, চলতি বছরের ২৫ জুলাই কাজ শেষ হবার নির্ধারিত তারিখের ভেতরই ওই দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ শেষ করা হবে। বাতি তিন কিলোমিটারের কাজ অর্থ প্রাপ্তি সাপেক্ষে ২০১৫ সালের ৩০ জুন তারিখের মধ্যে শেষ হবে।
দিন দিন যেখানে জিনিষ পত্রের দাম বাড়ছে সেখানে ৫৮ লাখ টাকা ছাড় দিয়ে ঠিকাদার যে কাজ শুরু করেছে তার নমুনা জনসাধারণ এখনি দেখতে পাচ্ছে। তারপর ৫ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে তিন কিলোমিটার সড়কের কাজ না করানোর বর্তমান সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে যে দুই কিলোমিটার সড়কের কাজ শুরু করা হয়েছে তা কত দিন স্থায়ী হয় সে নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এলাকাবাসী। এই অবস্থায় এলাকাবাসীর দাবি চলমান দুই কিলোমিটারসহ বাকি আরো তিন কিলোমিটারের কাজ একযোগে এবং দ্রুত শেষ করা হোক। নইলে তাদের দুর্ভোগ থেকেই যাবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top