সকল মেনু

আজ শুভ নববর্ষ

 আছাদুজ্জামান,ঢাকা, ১৪ এপ্রিল : পহেলা বৈশাখ আজ। বাঙালির প্রাণের উৎসব, নববর্ষ। বাংলা ১৪২১ সনের প্রথম দিন। বাঙালির চিরন্তন ঐতিহ্যের উৎসব-আনন্দে অবগাহন করার দিন। জরা-জীর্ণকে পেছনে ফেলে নতুন বছরকে বরণ করে নেওয়ার দিন আজ। কবি তাই বৈশাখকে স্বাগত জানিয়ে গেয়েছেন-‘এসো হে বৈশাখ এসো এসো…………।’

বর্ষবরণের সার্বজনীন উৎসবে বাংলার চিরায়ত সংস্কৃতিকে হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে প্রস্তুত সারাদেশ। নববর্ষ আজ বাঙালি ঐতিহ্যের অহঙ্কার। নববর্ষ উদযাপনে রাজধানীসহ সারাদেশ এখন উৎসবে মাতোয়ারা। সবার প্রাণে যেন বেজে উঠেছে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুলের সেই দৃপ্ত আকাঙ্ক্ষা-`তোরা সব জয়ধ্বনি কর/তোরা সব জয়ধ্বনি কর/ঐ নূতনের কেতন ওড়ে কালবোশেখির ঝড় … তোরা সব জয়ধ্বনি কর।`

এই সুরধ্বনির ভেতর দিয়েই সব অপ্রাপ্তি আর ব্যর্থতার গ্লানি ভুলে সমৃদ্ধি কামনায় উদযাপিত হচ্ছে নববর্ষ। চৈত্রের শেষ দিনে গ্রাম ও শহরে ব্যবসায়ীরা গত বছরের বিক্রিবাট্টার হিসাব-নিকাশ চুকিয়ে খুলবেন নতুন খাতা, হালখাতা।

রাজধানীতে বরাবরের মতো নববর্ষ আবাহনের প্রধান আকর্ষণ রমনা বটমূলে ছায়ানটের প্রভাতি অনুষ্ঠান। পহেলা বৈশাখে প্রাণের জোয়ারে জেগে ওঠা মহানগরীর আরো আয়োজনের মধ্যে রয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের মঙ্গল শোভাযাত্রাসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান। কয়েকদিন ধরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে চলছিল উৎসবের আমেজ। প্রতি বছরের মতো এবারও পহেলা বৈশাখে সকাল ৯টায় মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হবে। শোভাযাত্রায় থাকবে কৃত্রিম বিড়াল, প্যাঁচা, ইঁদুর, ফুল, প্রজাপতি, পাখি, কাকতাড়ুয়া।

শুধু রাজধানী নয়, সারা দেশে বসবে বৈশাখী মেলা। মৃৎশিল্পে হরেক রকম পশরার সঙ্গে থাকবে খেলনা পুতুল, ঘুড়ি, বাশের বাঁশি। থাকবে মুড়ি, মুড়কি, বাতাসা, নাড়ু, সন্দেশ, জিলাপী, মুরলী, কদমা। আর নাগরদোলা তো আছেই। বৈশাখী মেলায় রকমারি পণ্য কেনার দুর্নিবার আকর্ষণে ছেলে-বুড়ো সবাই আজ মেলামুখী।

নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বাণীতে বলেছেন, ‘অতীতের সব গ্লানি ও বিভেদ ভুলে বাংলা নববর্ষ জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে আমাদের ঐক্য আরও সুদৃঢ় করবে এবং বয়ে আনবে অফুরন্ত আনন্দের বারতা।’ তিনি বলেন, ‘বাঙালির জীবনে বাংলা নববর্ষের আবেদন চিরন্তন ও সর্বজনীন।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণীতে বলেছেন, ‘নববর্ষ সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মান্ধতা ও দেশবিরোধী অপশক্তির বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার শক্তি যোগাবে।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলা নববর্ষ জরা ও গ্লানি মুছে দিয়ে বাঙালির জীবনে ১৪২১ সনে সুখ, সমৃদ্ধি ও অনাবিল আনন্দ বয়ে আনবে।

সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ বাংলা নববর্ষ উপলক্ষে দেশে ও প্রবাসে বসবাসরত বাঙালিদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বাণীতে রওশন এরশাদ নতুন বছরে পুরাতন ও জরাজীর্ণকে বিসর্জন দিয়ে নতুন উৎসাহ-উদ্দীপনায় দেশ গঠনে সবাইকে ঐকমত্যে পৌঁছাতে কাজ করার আহ্বান জানান।

আজ সরকারি ছুটির দিন। জাতীয় দৈনিকগুলো প্রকাশ করেছে নববর্ষের বিশেষ সংখ্যা। রেডিও-টেলিভিশনে প্রচারিত হচ্ছে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। বাংলা একাডেমিসহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top