সকল মেনু

তিনি নেই তবুও আছেন

 আছাদুজ্জামান,হটনিউজ২৪বিডি.কম,ঢাকা, ১০ এপ্রিল : তিনি নেই, তবুও তাকে নিয়ে হই চই। তুমুল আলোচনা-সমালোচনায় মুখর সংসদ। প্রাণবন্ত, সরব সংসদ সদস্যরা। এমন কোনো সংসদ সদস্য নেই, যিনি তাকে নিয়ে দুকথা বলেননি। সবাই তাকে স্মরণ করেছেন!

যেন তার কথা না বললেই নয়। না বললে কোনো বক্তার বক্তব্য পূর্ণতা পায় না। এককথায় তাকে ছাড়া সংসদ জমেইনি। অথচ দশম জাতীয় সংসদে তিনি নেই, থাকবেনও না। কারণ তিনি তো এই নির্বাচনে অংশই নেননি।

বলছিলাম বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার কথা। দশম সংসদের প্রথম অধিবেশনের পুরোটা জুড়ে আলোচনা-সমালোচনায় ছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। এই সংসদের সব সদস্যই কোনো-না-কোনোভাবে তার সমালোচনায় মুখর ছিলেন।

সরকারদলীয় সংসদ সদস্যদের ভাষায়, বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় দশম সংসদে আসার অধিকার হারিয়েছেন। তিনি এখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও সাবেক বিরোধীদলীয় নেতা। সংসদের বাইরে থেকে তিনি ও তার জ্যেষ্ঠ ছেলে তারেক রহমান একের পর এক নানা বিতর্কিত বক্তব্য দিচ্ছেন। তাদের ওই বিতর্কিত বক্তব্য নিয়েই সংসদে ওঠে আলোচনার ঝড়।

সাংসদের প্রাত্যাহিক কার্যক্রমের মধ্যেও আলোচনায় চলে আসে বেগম খালেদা জিয়ার নাম। এমনিতেই দেশের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরতে গিয়েও সরকারি দলের এমপি-মন্ত্রীরা তুলনামূলক চিত্রে বেগম খালেদা জিয়ার সমালোচনা করতে ছাড়েন না। এখন উন্নয়ন-অনুন্নয়নের সঙ্গে আরো কিছু বিতর্কিত আলোচনায় ঠাঁই পেয়েছেন তিনি ও তার পরিবারের সদস্যরাও।

নানান বিতর্কিত বিশেষণে বেগম খালেদা জিয়াকে কখনো ষড়যন্ত্রকারী, কখনো অশিক্ষিত, কখনো লেডি লাদেন, কখনো জামায়াতে ইসলামীর আমির, কখনো শয়তানের মা, ধ্বংসের রানি, জঙ্গি-সন্ত্রাসীদের মদদদাতা,পাকিস্তানপ্রেমী আখ্যায়িত করে সংসদে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে।

সাম্প্রতিক সময়ে তারেক রহমান ও খালেদা জিয়া ‘জিয়াউর রহমানকে প্রথম রাষ্ট্রপতি’ বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ব্যাপকভাবে বিতর্ক সৃষ্টি করে। এরপরই বুধবার লন্ডনে বসে তারেক রহমান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ‘অবৈধ প্রধানমন্ত্রী’ বলে বিতর্ক আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। এর আগে অর্থের অভাবে খালেদা জিয়া বাড়ি ভাড়া দিতে পারছেন না বলে পত্রিকায় খবর প্রকাশের পর এ নিয়ে সংসদে তীব্র সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এ ছাড়া শুরু থেকে সরকারকে অবৈধ আখ্যা দিয়ে সংসদের বাইরে থেকেও বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন প্রাক্তন এই বিরোধীদলীয় নেতা। একই সঙ্গে বিরোধী দল জাতীয় পার্টিকে নানাভাবে কটাক্ষ করেও খালেদা জিয়া আলোচনায় ‘জীবন্ত’ ছিলেন।

বৃহস্পতিবার রাতেই শেষ হলো দশম জাতীয় সংসদের প্রথম অধিবেশন। এদিন অধিবেশনের শুরু থেকে মাগরিবের নামাজের বিরতির আগ পর্যন্ত বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান ছিলেন তীব্র সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে।

আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম, তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু, রাশেদ খান মেনন, মতিয়া চৌধুরী, রেলমন্ত্রী মজিবুল হক, সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এরই মধ্যে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানকে নিয়ে অনেক শব্দ উচ্চারণ করেছেন। এসব শব্দের মধ্যে ‘শয়তানের মা’, ‘ধ্বংসের রানি’ ছিল উল্লেখযোগ্য।

অধিবেশনের শেষ দিনটিতেও বেগম খালেদা জিয়া আলোচনার প্রধান কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হলেও তবুও তিনি ছিলেন না। তিনি সংসদের বাইরে!

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top