সকল মেনু

গরমে ফ্রিজের চাহিদা বৃদ্ধি;দেশীয় পণ্যের প্রতি বেড়েছে ক্রেতা আকর্ষণ

 অর্থনৈতিক প্রতিবেদক: গরম পড়েছে। বেড়েছে ফ্রিজের বিক্রি। বিশেষ করে দেশে তৈরি ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফ্রিজের প্রতি ক্রেতা আকর্ষণ সবচেয়ে বেশি। বিক্রি এবং উৎপাদন দুই-ই বেড়েছে ওয়ালটনের। তবে উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় কমেছে উৎপাদন ব্যয়, কমেছে ফ্রিজের দাম। অবশ্য দাম কমলেও বেড়েছে পণ্যের গুনগত মান। ক্রমবর্ধমান চাহিদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে উৎপাদন আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা নিয়েছে ওয়ালটন।
রাজধানীর বিভিন্ন শোরুম ঘুরে বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ফেব্রুয়ারির তুলনায় মার্চে ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে প্রায় দ্বিগুন। এপ্রিলে বিক্রি আরো বাড়বে বলে তাদের ধারণা। সেইসঙ্গে বেড়েছে দেশে তৈরি ফ্রিজের চাহিদা। ক্রেতাদের আস্থা এখন দেশে তৈরি ফ্রিজের প্রতি। চৈত্রের গরম, রাজনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি এবং ক্রেতাদের হাতে অর্থের যোগান ভালো হওয়ায় ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে বলে জানালেন বিক্রেতারা।
বাজার সংশ্লিষ্টদের মতে, মাথাপিছু আয় বৃদ্ধিসহ অর্থনীতির সব সূচকে ভালো করেছে বাংলাদেশ। মানুষের ক্রয় ক্ষমতা বেড়েছে। ফলে বাড়ছে ফ্রিজের মতো গৃহস্থালি পণ্যের চাহিদা। গত বছরের শেষ দিকে হরতাল-অবরোধের কারণে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি খারাপ ছিল। এখন পরিস্থিতি স্থিতিশীল ও স্বাভাবিক। এ কারণে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড আবার বেগবান হয়েছে। ফলে ফ্রিজের বিক্রি বেড়েছে।
ওয়ালটনের মালিবাগ প্লাজা ম্যানেজার আব্দুল বাতেন বলেন, গরম শুরু হওয়ার পর থেকেই প্রচুর ফ্রিজ বিক্রি হচ্ছে। বলা চলে অন্যান্য বছরের এই সময়ের তুলনায় এবার বিক্রি বেশি। তিনি জানান, বাজারে এখন ফ্রিজের কথা চিন্তা করলেই ক্রেতারা আগে ওয়ালটনের কথা ভাবেন। এর কারন পণ্যের মান, অসংখ্য মডেল। তাছাড়া বাংলাদেশে একমাত্র ওয়ালটনেরই রয়েছে আইএসও সনদপ্রাপ্ত বিক্রয়োত্তর সেবা।
ওয়ালটনের বিপণন বিভাগের নির্বাহী পরিচালক এমদাদুল হক সরকার জানান, তাদের কারখানায় বছরে ১৪ লাখ ফ্রিজ উৎপাদনের ক্ষমতা রয়েছে। উৎপাদন ক্ষমতা আরো ১০ লাখ বৃদ্ধির জন্য কাজ চলছে। ফলে দেশের চাহিদা মিটিয়েও বিপুল পরিমান ফ্রিজ বিদেশে রপ্তানির পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে ওয়ালটন। উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় ইউনিট প্রতি উৎপাদন ব্যয় কমে গেছে। এছাড়া উৎপাদন প্রক্রিয়া আধুনিকায়নের ফলে পণ্যের মানও বেড়েছে।
তিনি আরো জানান, সব শ্রেনীর ক্রেতাদের কথা চিন্তা করে ওয়ালটন ফ্রিজের দাম কিছুটা কমানো হয়েছে। তবে ফ্রস্টের তুলনায় নন ফ্রস্ট ফ্রিজের দাম বেশি কমেছে। ওয়ালটন প্লাজা থেকে আগের যে কোন সময়ের চেয়ে আরো সহজ শর্তে সর্বোচ্চ ২৫ মাসের কিস্তিতে ওয়ালটন ফ্রিজ কেনার সুযোগ রয়েছে।
ওয়ালটনের উন্নয়ন ও গবেষণা বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বাংলাদেশের আবহাওয়া উপযোগী করে টেকসই উন্নত প্রযুক্তিতে তৈরি হচ্ছে তাদের ফ্রিজ। বিশেষ করে এদেশের মানুষের খাদ্যাভাস, বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে তাড়াতাড়ি খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়া ইত্যাদি বিষয় মাথায় রেখে ওয়ালটন ফ্রিজ তৈরি হয়। বিদেশীরা কেবল আইচের জণ্য ডিপ ব্যবহার করেন। কিন্তু আমাদের দেশে মাছ, মাংস সংরক্ষণের জন্য ডিপ প্রয়োজন হয়। ফলে ওয়ালটন ফ্রিজে নরমাল এবং ডিপ সমান রাখা হয়েছে। ব্যবহৃত হচ্ছে অত্যাধুনিক ন্যানো টেকনোলজি। তাছাড়া অন্য ফ্রিজের তুলনায় ওয়ালটন অনেক বেশি মূল্য সাশ্রয়ী।
জানা গেছে, দেশের সিংহভাগ চাহিদা মিটিয়েও বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হচ্ছে ওয়ালটনের ফ্রিজ। আগে আমদানিকৃত ফ্রিজ দিয়ে দেশের চাহিদা মেটানো হলেও এখন দেশে তৈরি ফ্রিজের প্রতিই ক্রেতাদের আকর্ষণ বেশি। আমদানিকৃত ফ্রিজ অধিকাংশ ক্ষেত্রে নি¤œমানের হলেও দাম অনেক বেশি। তবে দেশীয় পণ্যের প্রতি ক্রেতাদের এই আস্থাকে সংশ্লিষ্টরা দেশের জন্য শুভ লক্ষ্মণ বলেই মনে করছেন।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top