সকল মেনু

দাম্পত্যে সুখী ও সফল হবার ছোট্ট গোপন রহস্য

লাইফস্টাইল প্রতিবেদক, ৩১ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : বিয়ে… যতটা মানবিক অনুভূতির বন্ধন, ঠিক ততটাই সামাজিক সম্পর্কও। ভালোবেসে করা বিয়ে হোক, কিংবা হোক পারিবারিক সম্মতিতে- দাম্পত্য জীবনে সুখী হবার জন্য চাই অনেকটা চেষ্টা আর সত্যিকারের আগ্রহ। পরস্পরকে বোঝার চেষ্টা, পারস্পরিক সমঝোতা, নির্ভরতা ইত্যাদি অনেক ফর্মুলারই প্রয়োজন হয় একটি সুখী দাম্পত্য গড়তে। আসুন, আজ আলোচনা করি দাম্পত্যে সফল হবার সেই গোপন রহস্যগুলো সম্পর্কে, যা আপনাকে করে তোলে সুখী।

বিশ্বস্ততা

সুখী সংসার গঠনের পূর্বতম শর্ত হলো বিশ্বস্ততা। চেষ্টা করবেন নিজের জীবনসঙ্গীর সাথে মিথ্যাচার না করতে। নিজেদের যৌথ জীবন হোক কিংবা আপনাদের একান্ত ব্যক্তিগত কোনও বিষয়- যে কথাটি বলা যায়না, তা বলবেন না। কিন্তু মিথ্যাচার করবেন না। নীরব থাকা আর মিথ্যাচারের মাঝে কিন্তু আকাশ পাতাল তফাৎ। তবে চেষ্টা করবেন যেন কিছু গোপন করতে না হয়। এই জন্য এমন কোনও কাজ করা থেকেই নিজেকে নিবৃত করুন, যার ফলে কিনা মিথ্যাচার করতে হয় স্বামী বা স্ত্রীয়ের সাথে।

সুখী দাম্পত্য জীবন চাইলে দুজনার মধ্যে বিশ্বস্ততার বন্ধন মজবুত হতে হবে অবশ্যই। আর অবিশ্বাসের কারণ গুলো দূর করবার চেষ্টা করতে হবে পারস্পরিক সমঝোতা আর আলোচনার মাধ্যমেই।

ভালবাসার সাথে চাই শ্রদ্ধাবোধও

মানুষ মাত্রই অন্যের কাছ থেকে শ্রদ্ধা ও সম্মানের প্রত্যাশী। এবং এই প্রত্যাশা সব চাইতে বেশী থাকে নিজের স্বামী বা স্ত্রীর কাছ থেকেই। জীবনসঙ্গীর এই চাওয়াকে মূল্যায়ন করুন সবার আগে। কেবল স্বামী বা স্ত্রী হিশাবে নয়, তাঁকে সম্মান করুন একজন মানুষ হিশাবে। এবং আপনার সন্তানদের পিতা/মাতা রূপেও। পরস্পরের কাজেরও মূল্যায়ন করুন। এবং জীবন সঙ্গীর কাজ ও মতামতকে শ্রদ্ধা করতে শিখুন।

আনন্দময় যৌন সম্পর্ক

মানুষ বিয়ে কেন করে? অনেকেই বলবেন, নিরাপদ যৌন সম্পর্ক ও সন্তান উৎপাদনের জন্য। মানুষ কেবল যৌন সম্পর্কের জন্যই বিয়ে করে এটা খুবই ভুল একটি ধারণা। তবে এটাই ঠিক যে একটি সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য সুস্থ ও আনন্দময় যৌন সম্পর্ক থাকা অত্যন্ত জরুরী। শারীরিক বন্ধনের মাধ্যমে মানসিক বন্ধনও দৃঢ় হয় ও দাম্পত্যে প্রতারণা অনেক কমে যায়।

বয়স

আমাদের দেশে সাধারণ স্বামীর বয়স স্ত্রীর বয়সের তুলনায় অনেক বেশি থাকে আর তাই স্ত্রীর আচরণে কিছু ছেলেমানুষি দেখা যায়, তা স্বামীকে বুঝতে হবে এবং তার পজিটিভ ছেলেমানুষিগুলো মেনে নিতে হবে এবং নেগেটিভগুলোকে বুঝিয়ে সংশোধন করতে হবে। অন্যদিকে স্বামীর বয়স যেহেতু একটু বেশি তাই অনেকক্ষেত্রেই সে একটু সিরিয়াস আচরণের হয়ে থাকে, এটা স্ত্রীকে বুঝতে হবে এবং ছেলেমানুষি যথাসম্ভব কম করতে হবে। মূল কথাটা হচ্ছে অপছন্দের কাজগুলো পরস্পরের সাথে না করাই ভালো। সর্বোপরি দুজনের ভালো মত বিনিময়ই সুখী সংসার, তাই না?

স্বাধীনতা দিন নিজেকে ও অন্যকে

স্বাধীনতা হলো মানুষের মৌলিক অধিকার। এই অধিকার খর্ব হলে সম্পর্কের প্রতি মানুষের বিতৃষ্ণা দেখা যায় এবং আচরণে অসঙ্গতি দেখা যায়, কমে যায় শ্রদ্ধাবোধ। মনে রাখবেন, আপনার স্বামী বা স্ত্রী একজন মানুষ, কোনও পোষা পাখি নয় যে তাঁকে খাঁচার মাঝে আটকে রাখা যায়। জীবনসঙ্গীকে তাঁর ব্যক্তিগত স্বাধীনতার স্থান গুলো অবশ্যই উপভোগ করতে দিন। তাতে আপনার প্রতি তাঁর ভালবাসা বাড়বে বই কমবে না।

থাকুক একটু দূরত্ব

সংসার জীবনে দুজনের মধ্যে থাকবে ছোট একটু ফাঁক, এর মানে বিচ্ছন্নতা নয়। শুধু একটু শ্বাস ফেলার স্থান। এর অর্থ পরস্পর থেকে বিছিন্ন থাকা নয়, বরং পরস্পরকে একটু নিজেকে উপভোগের সময় দেয়া। এবং ইচ্ছার বিরুদ্ধে কিছু করতে বাধ্য না করা।

থাকুক না একটু খানি দূরত্ব! সংসার জীবনে একটু ছাড় দিতেই হয়, এবং তা দিলেই ভালো। তাতে আকর্ষণও বাড়ে বৈকি।

ঝগড়া দীর্ঘ না করা

দাম্পত্যে ঝগড়া কার হয়না বলুন? কিন্তু ঝগড়া হলেই গাল ফুলিয়ে বসে থাকবেন না, কিংবা মানুষটির কাছ থেকে নিজেকে আলাদা করে নিবেন না। বরং রাগ কমে গেলে ঠাণ্ডা মাথায় চিন্তা করুন ব্যাপারটি নিয়ে। যদি নিজের দোষ বেশী মনে হয়, তাহলে নিজেই উদ্যোগী হয়ে ক্ষমা প্রাথনা করুন। যদি অন্য মানুষটির দোষ হয়ে থাকে, তাহলের তাকেও সময় দিন চিন্তা করবার এবং ক্ষমা চাইতে উদ্যোগী হবার। তাঁর সাথে অহেতুক খাবার ব্যবহার করবেন না। তাতে মানুষটি কখনও আপনার কাছে ক্ষমা চাইতে পারবে না।

ক্ষমা প্রবণ মানসিকতা

দাম্পত্যে কঠোর হলে হবে না, বরং দুজনের মাঝে একে অন্যকে ক্ষমা করবার মানসিকতা থাকতে হবে। জীবনের পথে চলতে গেলে যেমন ভুল ত্রুটি হয়, তেমনি সংসার জীবনেও হতে পারে। কোনও ভুল বা অপরাধকেই এত বড় করে দেখা যাবে না, যাতে তা পরস্পরের মাঝে তিক্ততা তৈরি করতে পারে।

 

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top