সকল মেনু

বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ কম

ঢাকা, ৩০ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : বাংলাদেশ ভারতের  নিকটতম  দেশ হওয়ার পরও এ দেশে ভারতের বিনিয়োগের পরিমাণ তুলনামূলক ভাবে অনেক কম। বাংলাদেশে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ভারতের মাত্র ২৮৮ কোটি ডলারের বিনিয়োগ নিবন্ধিত হয়েছে। যার মধ্যে ৮৬টি ভারতীয় বিনিয়োগ প্রকল্প  আর যৌথ বিনিয়োগ প্রকল্প ১৯৮টি।

ভারতীয় ব্যবসায়ী ও সরকারি কর্মকর্তারা বলছেন,  ভারতের  ব্যবসায়ীরা বিনিয়োগের জন্য নিরাপদ জায়গা খুঁজছেন। বাংলাদেশ হতে পারে সেই গন্তব্যস্থল। তবে এ জন্য বিদ্যমান কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে একটি সামগ্রিক বিনিয়োগ পরিবেশ তৈরি করতে হবে।

বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ: সুযোগ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারে এমন সব মন্তব্য উঠে এসেছে। রাজধানীর একটি হোটেলে গতকাল শনিবার এ সেমিনারের আয়োজন করে যৌথভাবে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এবং বাংলাদেশে ভারতীয় হাইকমিশন।

সেমিনারের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের অতিথি পঙ্কজ সরন বলেন, বাংলাদেশ ভারতের একেবারে নিকটতম প্রতিবেশী দেশ হলেও দুই দেশের মধ্যে অনেক তথ্যের ঘাটতি, ভুল ধারণা, ভুল তথ্যের পরিমাণ অনেক বেশি। বিনিয়োগ বাড়াতে হলে এটা দূর করতে হবে। তিনি বলেন, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক বাড়াতে ভারতীয় হাইকমিশন এ দেশের ব্যবসায়ীদের বহু ব্যবহার্য (মাল্টিপল) ভিসা দিয়ে আসছে।

অনুষ্ঠানে এ দেশে বিদেশি বিনিয়োগ আসার ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জ তুলে ধরেন বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান এস এ সামাদও। এগুলো হলো বিনিয়োগ পরিবেশ, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, রাজনৈতিক অবস্থা ও অস্থিরতা, আমলাতন্ত্র, যথাযথ প্রণোদনার অভাব, তথ্যঘাটতি এবং রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সুশাসন।

তবে সস্তা শ্রম, প্রতিযোগিতা সক্ষম ব্যবসার পরিবেশ, ভৌগোলিকভাবে ভালো অবস্থানে থাকা, চীনের সঙ্গে সংযোগ (কানেকটিভিটি), বিনিয়োগের ভালো প্যাকেজ ও প্রণোদনার কারণে বাংলাদেশ এখন বিশ্বের কাছে ভালো বিনিয়োগ গন্তব্য বলেও মন্তব্য করেন বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী চেয়ারম্যান।

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব মনোয়ার ইসলাম বলেন, গত পাঁচ-ছয় বছর দেশে বিদ্যুৎ খাতের অনেক উন্নতি হয়েছে। ইতিমধ্যে সাত হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের মাইলফলক অতিক্রম হয়েছে। পাঁচ মাস ধরে চাহিদা অনুযায়ী নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ হচ্ছে। যদিও বিতরণব্যবস্থায় কোথাও কোথাও সামান্য সমস্যা আছে। অদূর ভবিষ্যতে সেটাও থাকবে না।

মনোয়ার ইসলাম বলেন, এখনকার উৎপাদিত বিদ্যুতের ৪০ শতাংশই আসছে বেসরকারি খাত থেকে। সরকারের যে পরিকল্পনা তাতে বেসরকারি খাতের অংশগ্রহণের হার আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে।

ভারতীয় হাইকমিশনারের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-বাংলাদেশ চেম্বারের বিশেষ উপদেষ্টা মাতলুব আহমাদ বলেন, মাত্র ৩০ মিনিটে এখন ভারতে যাওয়া যায়। কিন্তু অনেক তথ্যই সেখানে যেতে ৩০ বছর লেগে যায়।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন চেম্বারের বর্তমান সভাপতি মোহাম্মদ আলী।

প্রবন্ধ: উদ্বোধনের পর অনুষ্ঠিত কার্য অধিবেশনে বিনিয়োগ বোর্ডের নির্বাহী সদস্য নাভাস চন্দ্র মণ্ডল এক প্রবন্ধে জানান, ২০০৯ সালে এ দেশে ভারতীয় বিনিয়োগ এসেছে তিন কোটি ৮৯ লাখ ডলার, ২০১০ সালে দুই কোটি সাত লাখ ডলার, ২০১১ সালে সাড়ে তিন কোটি ডলার, ২০১২ সালে দুই কোটি ৭৮ লাখ ডলার। আর ২০১৩ সালে বিনিয়োগ এসেছে চার কোটি ২০ লাখ ডলারের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের উপপরিচালক মোহাম্মদ মনসুরের উপস্থাপিত প্রবন্ধ অনুযায়ী, ২০১৩ সালে এ দেশে মোট ১৭০ কোটি ডলারের বিনিয়োগ এসেছে। এটা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

মোহাম্মদ মনসুর জানান, যুক্তরাজ্য, মালয়েশিয়া, জাপান, সিঙ্গাপুর থেকে বাংলাদেশে বেশি বিনিয়োগ আসছে।

স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবরার আনোয়ার তাঁর প্রবন্ধে বলেন, স্থানীয় বড় বিনিয়োগ প্রকল্পগুলোতে অনেক সময় ঋণ পাওয়া যায় না। ফলে এসব প্রকল্পের জন্য বিদেশি উৎস থেকে ঋণ নেওয়া হয়। বিদেশি অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে পারে।

সেমিনারে পিপিপি কার্যালয়ের প্রধান নির্বাহী আফসার এইচ উদ্দিন, এশিয়ান পেইন্টসের মহাব্যবস্থাপক অরূপ চ্যাটার্জি, এবিবির এ দেশীয় ব্যবস্থাপক রাজর্ষি ব্যানার্জি এবং সিইএটি বাংলাদেশের রাজীব কুমার জৈন একটি করে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেছেন। ওএম

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top