স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, বুলেটিনে হাসপাতালগুলোতে রোগীর মৃত্যুর কারণ বিভিন্নভাবে পর্যালোচনা করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ও শিশুদের মৃত্যুর কারণে ভিন্নতা আছে। শিশুদের শ্বাসকষ্ট আর বড়দের শ্বাসকষ্টের ধরনেও পার্থক্য রয়েছে। তবে গড় হিসাবে উভয় বয়সের মধ্যেই শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায় মৃত্যুর ঘটনা প্রকট হয়ে উঠেছে।
হেলথ বুলেটিনের তথ্য অনুসারে, দেশের উপজেলা পর্যায়ের ৩৪৫টি হাসপাতালে ৩৮ হাজার ৫৮ জনের মৃত্যুর প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে প্রধান পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করা গেছে। এর মধ্যে ১.৪ শতাংশ অ্যাজমা, ১.৩ শতাংশ নিউমোনিয়া, ০.৯ শতাংশ দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট, ০.৮ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক ও ০.৭ শতাংশ নবজাতকের জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত ছিল। একই প্রক্রিয়ায় ৪৯টি জেলা হাসপাতালে ১৮ হাজার ৩৫৯ জন রোগীর মৃত্যুর প্রধান পাঁচটি কারণ খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে, ১০ শতাংশ নবজাতকের জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট, ৪.৪ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক, ৪.১ শতাংশ নিউমোনিয়া, ২.৫ শতাংশ অপরিণত গর্ভাবস্থায় ও অল্প ওজন নিয়ে জন্মসংক্রান্ত জটিলতা ও ২.৩ শতাংশ সেপটিসেমিয়ায় আক্রান্ত ছিল।
অন্যদিকে ১২টি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ৩৯ হাজার ৪৪ জনের মৃত্যুর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ৩.৫ শতাংশ হার্ট অ্যাটাক, ৩.১ শতাংশ সেপটিসেমিয়া, ২.৭ শতাংশ নবজাতকের জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট, ০.৯ শতাংশ দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট ও ২.৫ শতাংশ আঘাতবিহীন ব্রেইন হ্যামারেজের কারণে মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া অন্য আঙ্গিকে সারা দেশের সরকারি হাসপাতালগুলোতে অনূর্ধ্ব পাঁচ বছর বয়সী শিশুদের মৃত্যুর প্রধান পাঁচটি কারণের মধ্যেও সবার ওপরে ৩২ শতাংশ ছিল নবজাতকের জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট। এ ছাড়া জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ৮৯৭ জনের মৃত্যুর কারণ খুঁজে দেখা যায়, সর্বোচ্চ ২৭ শতাংশ ছিল দীর্ঘস্থায়ী শ্বাসকষ্ট, ২৩ শতাংশ যক্ষ্মা ও ১৩ শতাংশ ব্রংকিয়াকটেসিসে আক্রান্ত। আবার শিশু ও মাতৃস্বাস্থ্য হাসপাতালের ৪৬০ জনের মৃত্যুর কারণ হিসেবে সর্বোচ্চ ৩২ শতাংশ পাওয়া যায় নবজাতকের জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট।
জাতীয় বক্ষব্যাধি ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. রাশেদুল হাসান বলেন, নবজাতকের জন্ম-পরবর্তী শ্বাসকষ্ট সাধারণত প্রসূতি মায়ের বিভিন্ন জটিলতা বা ভাইরাস থেকে হয়ে থাকে। তবে অন্য ক্ষেত্রগুলোতে শ্বাসজনিত সমস্যার মূল কারণগুলো হচ্ছে চুলার ধোঁয়া, ধূমপানের ধোঁয়া, পথের ধুলাবালি, পরিবহন ও কলকারখানার নানা ধরনের ধোঁয়া ও ধুলা। ডা. রাশেদুল হাসান বলেন, শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার দিক মাথায় রেখে মানুষের নিরাপত্তার স্বার্থেই পরিবেশদূষণ রোধে সবাইকে আরো সচেতন হতে হবে। এ ছাড়া ধুমপানমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলা খুবই জরুরি। (দৈনিক কালের কণ্ঠ)
মন্তব্য করুন
খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।