সকল মেনু

৫ বছরে রফতানি আয় হবে ৭৫ বিলিয়ন ডলার: অর্থমন্ত্রী

ঢাকা, ২২ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : আগামী ৫ বছর পর দেশের রফতানি আয় ৭৫ বিলিয়ন ডলার হবে বলে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত।

শনিবার রাজধানীর একটি হোটেলে ‘অর্থনৈতিক সম্ভাবনায় ফ্যাশন উদ্যোগ’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে এ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন।

ফ্যাশন এন্টারপ্রেনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ফ্যাশন উদ্যোগ) উদ্যোগে নতুন নির্বাচিত পরিষদের অভিষেক উপলক্ষ্যে এ আলোচনা সভায় আয়োজন করা হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ১৯৭০ সালে আমরা দেশের যে ভবিষ্যত দেখতাম তা খুবই উজ্জ্বল। কিন্তু ১৯৭১’র পর আমাদের সে স্বপ্ন ভেঙে যায়। তবে ১৯৭০ সালে যে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখতাম তা আবার ফিরে এসেছে।

তিনি বলেন, একটা সরকারের মেয়াদ ৫ বছর। কখন শেষ হবে তা অন্য কথা। তবে আমারা ৫ বছরের কথা ভেবে এগিয়ে যাচ্ছি। এবার আমাদের রাফতানি আয় ৩০ বিলিয়ন ডলার হবে বলে আশা করি। ৫ বছরে তা ৭৫ বিলিয়ন ডলার হবে বলে আমি মনে করি। এটি আপনাদের কাছে আমার চ্যালেঞ্জ। আমি আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) আগে ভাগেই চ্যালেঞ্জ দিচ্ছি আগামী ৫ বছরে কিভাবে রফতানি আয় ৭৫ বিলিয়নে পৌছাবে তা নিয়ে চিন্তা করুন।

মন্ত্রী বলেন, ভ্যাট নিয়ে অনেক কথা হয়েছে। ভ্যাট নিয়ে আমাদের নতুন যে পরিকল্পনা রয়েছে তা ২০১৫ সাল নাগাদ বাস্তবায়ন হবে। এতে ভ্যাটের শতাংশ পরির্বতন করা না হলেও ভ্যাটের পরিমাণ অনেক কমে যাবে। তাই ভ্যাটের নতুন যে হিসাব রাখার ব্যবস্থা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে আপনারা সেটি অনুসর করুন। এতে সবার জন্য ভালো হবে।

বাংলাদেশ উদ্যোক্তাদের দেশ, সম্ভবনার দেশ উল্লেখ করে এফবিসিসিআইএ’র সহ-সভাপতি হেলালউদ্দিন বলেন, ফ্যাশন হাউজ দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

ক্ষুদ্র পর্যায়ে ভ্যাট পরিহারের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা উৎস পর্যায়ে ভ্যাট দিচ্ছি, উৎপাদন পর্যায়ে ভ্যাট দিচ্ছি, খুচরা পর্যায়ে ভ্যাট দিচ্ছি, ক্ষুদ্র পর্যায়ে ভ্যাট দিচ্ছি। ক্ষুদ্র পর্যায়ে ভ্যাট ধার্য করায় তারা অসৎ কাজে জড়িয়ে পড়ছে।

বিদেশি পণ্য পরিহার করে দেশীয় পণ্য ব্যবহারের আহ্বান জানিয়ে বিজিএমইএ সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের গার্মেন্টের পণ্য যখন বিদেশে যায় তখন এতে লেখা থাকে মেড ইন বাংলাদেশ। এটি আমাদের অতি গর্ভের বিষয়।

তিনি বলেন, ফ্যাশন হাউজগুলোর সঙ্গে বিজিএমইএ এবং বিকেএমইএ এক সঙ্গে কাজ করলে রফতানি আয় আরো বাড়বে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বিজিএমইএ সভাপতি।

ফ্যাশন উদ্যোগ’র সভাপতি আজহারুল হক আজাদ বলেন, বিশ্ব অর্থনীতির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে দেশের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধির দিকে নিয়ে যেতে ফ্যাশন উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এছাড়া দেশের পরিবেশ সংরক্ষণ, শহরে অনাকাঙ্খিত অভিবাসন বন্ধে, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টি ও নারীর ক্ষমতায়নেও ফ্যাশন উদ্যোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

তিনি সরকারের কাছে দেশীয় ফ্যাশন শিল্পকে নির্দিষ্ট মন্ত্রণালয়ে এনে বিশেষ অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা, নতুন উদ্যোক্তা সৃষ্টির মাধ্যমে কর্মসংস্থানের জন্য কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত পরিবেশবান্ধব খাত হিসেবে দেশীয় ফ্যাশন শিল্পের জন্য ৫ থেকে ৭ শতাংশ সুদে ব্যাংক ঋণ, সমমূলধনী উদ্যোক্তা তহবিল চালু, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য কর অবকাশ সুবিধা, স্থানীয় সুতার একটি বিশেষ অংশ দেশীয় পোশাক শিল্পে ব্যবহারে বাধ্যবাধকতা আরোপ ও দেশীয় কাপড় পরিধানে একটি বিশেষ দিবস প্রবর্তনের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বর্তমানে বিভিন্ন পরিসরে দেশে চার হাজার ৫০০টির মতো ফ্যাশন হাউজ রয়েছে। এ ফ্যাশন হাউজগুলোতে ৫০ লাখ মানুষ কর্মরত রয়েছে। এরমধ্যে ৭০ শতাংশ নারী। শিল্পখাতটির (ফ্যাশন হাউজ) সঙ্গে ১০ লাখ তাঁতী জড়িত। তাঁত শিল্পের সঙ্গে জড়িত অন্য পেশায় আছে আরও ২০ লাখ।

ফ্যাশন উদ্যোগ’র সভাপতি আজহারুল হক আজাদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেশন অব উইমেন এন্টারপ্রেনার’র সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমান, বিকেএমইএ’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. হাতেম, বাংলাদেশ উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (বিডব্লিউসিসিআই) সভাপতি নাজ ফারহানা, বাংলা ক্রাফটের সভাপতি এস ইউ হায়দার, বাংলা ক্রাফটের সাবেক সভাপতি মালেকা খান, এনএএসসিআইবি’র সভাপতি শোভন, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার, কণ্ঠশিল্পী শাকিলা জাফর, বাপ্পা মজুমদার প্রমুখ।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top