সকল মেনু

বিনিয়োগ মন্থরে ব্যাংক ঋণ হ্রাস

ঢাকা, ২২ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : বিনিয়োগ মন্থরে ব্যাংক ঋণ হ্রাস হচ্ছে। এর জন্য বিনিয়োগ পরিবেশ না থাকাকে দায়ী করছেন বিশ্লেষকরা। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২ সালে ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানত গড় অনুপাত (সিডিআর) ছিল ৭৬.১৩%। যা ’১৩ সালে হয় ৭১.১৮%। সর্বশেষ ’১৪ সালের ৬ই ফেব্রুয়ারিতে হয় ৭০.৮৩%। এ সময় ব্যাংক ব্যবস্থায় ৬ লাখ ২৪৬৪৮ কোটি ৭০ হাজার টাকা আমানত সংগৃহীত হয়। আর ঋণ বিতরণ হয়েছে ৪ লাখ ৬০ হাজার ৪৫৫ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এ সময় গড় আমানত বেড়েছে ১৬.১৬%। অপরদিকে ঋণ বেড়েছে মাত্র ৭.৭৫%। এদিকে বিনিয়োগ বোর্ড বলছে, গত ৫ মাসে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ কমেছে ১৩৭১৫ কোটি টাকা। শুধু ফেব্রুয়ারিতেই কমেছে ৩ হাজার কোটি টাকা। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম মানবজমিনকে জানান, অনিশ্চয়তা আগেও ছিল, তবে এখন নতুন মাত্রা পেয়েছে। উপজেলা নির্বাচনের পর বৃহৎ জোট আন্দোলনের আভাস দিয়েছে। তিনি বলেন, বিনিয়োগের জন্য দরকার দীর্ঘমেয়াদের স্বস্তি। তা এখনও দেখা যাচ্ছে না।

বিনিয়োগ বোর্ডের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে মোট বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ২৭৫৫ কোটি টাকা। যা  জানুয়ারিতে ছিল ৫১১৯ কোটি টাকা। আর সেপ্টেম্বরে ছিল ১৬৪৭০ কোটি টাকা। সে হিসাবে ৫ মাসের ব্যবধানে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগ কমেছে ১৪০০০ কোটি টাকা। এ সময় ১১৪টি শিল্প নিবন্ধন হয়। যা আগের মাসে ছিল ১৬৫টি। আর কর্মসংস্থান হয়েছে ২৯৪৮৭ জনের। কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলছে, বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর ঋণ ও আমানত প্রবৃদ্ধি সমানতালে এগিয়ে নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তরফে একাধিকবার নির্দেশ দেয়া হলেও ফলাফল শূন্য। বিদায়ী বছরে রাজনৈতিক হাঙ্গামার পর চলতি বছরে এ অবস্থার উন্নতি ঘটবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু সে লক্ষণ এখন পর্যন্ত অনুপস্থিত। এ সময় ঋণ বিতরণে তুলনামূলকভাবে খারাপ অবস্থায় রয়েছে রাষ্ট্রীয় খাতের তিন বাণিজ্যিক ব্যাংক। সোনালী ব্যাংকের ১৪.৮৩% আমানত প্রবৃদ্ধি হলেও ঋণ বিতরণ কমেছে (-) ৯.৭৪%। অগ্রণী ব্যাংকের ২২.১১% আমানত প্রবৃদ্ধি হলেও ঋণ কমেছে (-) ৬.৬৫%। জনতা ব্যাংকের ১৫.১৯% আমানত বাড়লেও ঋণ কমেছে (-) ৩.৮৬%।

রূপালী ব্যাংকের আমানত প্রবৃদ্ধি ২৩.৩৪% হলেও ঋণ প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩০.২৬%। তবে আগের বছরে ব্যাংকটি কোন ঋণই দেয়নি। সেই হিসাবে তার এ প্রবৃদ্ধি। বড় তিনটি ব্যাংকের ঋণ কমার কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের গড় ঋণ বিতরণ (-)  ৩.৮৮% ধারায় নেমে এসেছে। আর আমানতে গড় প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ১৭.৩৮%। এতে এসব ব্যাংকের সিডিআর দাঁড়িয়েছে ৫৬.৩৮ শতাংশে। রাষ্ট্রায়ত্ত বিশেষায়িত ব্যাংকের ২৭.৭৪% আমানত প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ঋণ বেড়েছে ১৫.১১%। এসব ব্যাংকের সিডিআর দাঁড়িয়েছে ৭৭.৮২%। বেসরকারি ব্যাংকের ১৫.০৩১% আমানত প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ঋণ  বেড়েছে ১১.৬৬%। তাদের সিডিআর রয়েছে ৭৬.৯৩%। বিদেশি ব্যাংকের ১৫.৫৬% আমানত প্রবৃদ্ধির বিপরীতে ঋণ  বেড়েছে মাত্র ৭.২৫%। তাদের সিডিআর দাঁড়িয়েছে ৭০.৪৪%। এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনসিসি ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক নুরুল আমিন বলেন, ৫ই জানুয়ারির নির্বাচনে সব দল অংশ নেয়নি। এ নির্বাচন নিয়ে দেশে ও আন্তর্জাতিকভাবে নানা বিতর্ক রয়েছে। এছাড়া সাময়িকভাবে দেশের রাজনৈতিক অবস্থা কিছুটা স্থিতিশীল থাকলেও উপজেলা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আবার সহিংসতা দেখা দিয়েছে। তাই বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করার মতো আস্থা এখনো খুঁজে পায়নি। এতে ব্যাংকের ঋণ বিতরণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। আর ব্যাংক আগামীতে ঋণ বিতরণের আশায় আমানত সংগ্রহ করেই যাচ্ছে। তাই সিডিআর-এ এক ধরনের তফাৎ সৃষ্টি হচ্ছে।  – মানব জমিন

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top