সকল মেনু

চেয়ারম্যান পদে হাড্ডা হাড্ডি লড়াই

 নুরন্নবী বাবু.দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে  প্রচারনায় মুখরিত সারা উপজেলার জনপদ । বিএনপি সমর্থিত ও আওয়ামীলীগ সর্মর্থিত প্রার্থীর মধ্যে  হাড্ডা হাড্ডি লড়াইয়ের সম্ভাবনা। প্রচারনার দৌড়ে  ঘুম হারাম  ৩ জন চেয়ারম্যান ও ৩ জন ভাইস চেয়ারম্যান এবং ৩ জন মহিলা ভাইস চেয়ারমম্যান প্রার্থীর। সকাল থেকে মধ্যরাত অবদী প্রার্থীরা ভোটারদের কাছাকাছি পৌছানোর লক্ষে পাড়া মহল্লা ও হাটে বাজারে  গন সংযোগে ব্যস্ত রয়েছেন। দিন যত ঘনিয়ে আসছে ব্যস্ততা তত বাড়ছে দলের নেতা কর্মী সহ প্রার্থীদের সমর্থকদের। পোষ্টারে পোষ্টারে ছেয়ে গেছে ফুলবাড়ী উপজেলার রাস্তা ঘাট।  হাটে বাজারের চায়ের টেবিলে , আড্ডায় চলছে প্রার্থীদের ভালো মন্দ ও রাজনৈতিক জীবন  নিয়ে চুল চেরা বিশ্লেষন।
সরকার দলীয় সমর্থক চেয়ারম্যান প্রার্থী মোঃ মুশফিকুর রহমান বাবুল (দোয়ত কলম মার্কা) নিয়ে লড়ছেন। তিনি ফুলবাড়ী উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক এবং বর্তমান সরকারের  প্রাথমিক ও গনশিক্ষা মন্ত্রী ও দিনাজপুর ৬ আসনের টানা ৬ বারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য এ্যাডঃ আলহাজ্ব মোস্তাফিজুর রহমান ফিজারের ছোট ভাই। এই পরিচয় তার ভোট প্রাপ্তিতে বাড়তি সুবিধা দিয়েছে। ছাত্র জীবন থেকে  রাজনীতির সাথে জড়িত মুশফিকুর রহমান বাবুলের ভালো সর্ম্পক রয়েছে উপজেলায় তার দলের তৃনমুল নেতা কর্মী ও সমর্থক সাথে । তিনি উপজেলায় পরিচিত মুখও বটে। বাবুল উপজেলার সকল ভোটারদের কাছে পৌছাতে দিন রাত ছুটে বেড়াচ্ছেন। তিনি তার প্রচারনায় ভোটারদের কাছে প্রতিশ্র“তি দিচ্ছেন সন্ত্রাস মুক্ত ফুলবাড়ী এবং ফুলবাড়ীর উন্নয়নের। জাতীয় পার্টির  সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী থাকায়  বাবুলকে বিজয়ী হতে হলে  নিজ দলের বাইরেও ভোটারদের ভোট আনতে হবে বলে ভোটরদের অভিমত।তবে ভোটাররা বলছেন  গত উপজেলা নির্বাচনে ভোট দিয়ে এলাকার কোন উন্নয়ন হয় নাই। ক্ষমতায় যারা থাকে তাদেরকে ভোট দিলে এলাকার উন্নয়ন হবে।  চেয়ারম্যান পদে ভোটরা মনে করছেন। অপরদিকে ১৯ দলীয় জোটের একক প্রার্থী হিসাবে বিএনপির সমর্থিত প্রাথী অধ্যক্ষ খুরশিদ আলম মতি (আনারস মার্ক) নিয়ে প্রতিদ্বন্দিতা করছেন। তিনি  ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতি। এরশাদ হঠাও আন্দোলনে ফুলবাড়ীতে বিএনপির  সকল আন্দোলন কর্মসুচি পালন ও সে সময় ফুলবাড়ী  বিএনপির দুর্দিনে তিনি নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠে ছিলেন। ছাত্র দলে রাজনীতির মাধ্যমে যাত্রা শুরু করে তিনি যুবদলের সভাপতি এবং পরবর্তীতে বিএনপির থানা শাখার  সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে অদ্যবদী ফুলবাড়ী উপজেলা বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ফুলবাড়ী পৌর বিএনপির সাথে উপজেলা বিএনপির গ্র“পিং থাকায় পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সাহাজুল ইসলাম চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হিসাবে মনোনয়নপত্র জমা দেন এবং নির্বাচনী প্রচারনায় মাঠেও নামেন।  পরে বিএনপি প্রার্থীর বিজয় নিশ্চিত করতে জেলা নেতৃবৃন্দ ও ন্থানীয় নেতৃবৃন্দের সমঝোতার সাহাজুল ইসলাম তার প্রার্থীতা প্রত্যাহার করেন এবং  বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী মতির পক্ষে  নির্বাচনী প্রচারনায় মাঠে নেমেছেন। ফলে বিএনপির নেতাকর্মীদের মনোবল চাঙ্গা হয়েছে। বিএনপির ২ জন চেয়ারম্যান প্রার্থীর প্রতিদ্বিন্দিতার খবরে বিএনপির সমর্থকদের মাঝে যে হতাশা ছিল তা কেটে গেছে।  খুরশিদ আলম মতির পিতা ফুলবাড়ী পৌর সভার চেয়ারম্যান ছিলেন । এছাড়া ফুলবাড়ীতে তাদের ব্যবাসায়ীক পরিচিতিও রয়েছে। পিতার পরিচয় এবং তাদের ব্যবসার পরিচিতি তার নির্বাচনী প্রচারনায় বাড়তি সুবিধা হিসাবে কাজ করছে। বিএনপি ও জামাত সমর্থক ভোটারদের বাইরেও তিনি ভোট পাবেন বলে শোনা যাচ্ছে। জাতীয় পার্টি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এ্যাডঃ নুরুল ইসলাম (মোটর সাইকেল মার্কা)ভোটারদের কাছে নতুন মুখ। জাতীয় পার্টির সর্মথকরা তাকে প্রার্থী হিসাবে চিনলেও ব্যাক্তিগত ভাবে ততটা এলাকায় পরিচিত নন। ফলে ভোটারদের কাছে তার ব্যাক্তিগত পরিচিতি দিয়েই ভোট প্রার্থনা করতে হচ্ছে ফুলবাড়ীর জাতীয় পার্টির নেতা কর্মীদের।
ভাইস চেয়ারম্যান পদে আওয়ামীলীগ সমর্থিত প্রার্থী উপজেলা যুব লীগের সাধারন সম্পাদক গোলাম মওলা রঞ্জু (তালা মার্কা) প্রার্থী হিসাবে লড়ছেন। ভোটের মাঠে তিনি নতুন মুখ। ভাইস চেয়ারম্যান পদে তাদের দলের হিসাবে ফুলবাড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জাকারিয়া জাকির (টিবওয়েল মার্ক) প্রতিদ্বিন্দিতা করায় দলের কিছু নেতা কর্মীরা ও সমর্থকরা  কিছুটা বিব্রত বোধ করছেন এবং ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নিয়ে তাদের মধ্যে বিভক্তিও রয়েছে। ফলে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে ১৯ দলীয় জোটের সমর্থক জামায়াতের  প্রার্থী ফুলবাড়ী জামায়াতের উপজেলা শাখার সেক্রেটারী  মঞ্জুরুল কাদের বাবু। বিএনপি ও জামায়াতের সমর্থকদের ভোট পেলে তিনি বিজয়ী হতে পারেন বলে জোটের নেতা কর্মী ও সমর্থকরা মনে করছেন। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১৯ দলীয় জোটের সমর্থনে মাঠে নেমেছেন ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদের বর্তমান মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিনারা বেগম। তিনি হাসঁ মার্কা প্রতিক নিয়ে এবারও মাঠে আছেন। বিএনপি সমর্থক হাসিনা পারভিন(ফুটবল মার্কা) নিয়ে প্রতিদ্বিন্দিতা করছেন। বিএনপির দুই জন প্রার্থী হওয়ায় সুবিধা জনক অবস্থানে আছেন আওয়ামীলীগ সমর্থক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী নীরু সামছুন্নাহার (কলস মার্কা)।
ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সকল প্রার্থীর আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধব এবং পরিবারের সদস্যরাও বসে নেই। তারা ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চাইছেন তাদের প্রার্থীদের পক্ষে। এবার উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে গত  উপজেলা নির্বাচনের ন্যায় ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা লক্ষ করা যাচ্ছে না। নির্বাচনে  ফুলবাড়ী উপজেলার ১ লক্ষ ১৭ হাজার ৮১০ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। আাগামী  ২৩ মার্চ অনুষ্টিত হবে ফুলবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। ৫২ টি  ভোট কেন্দে নিবিড় পর্যবেক্ষনে ভোট অনুষ্টিত হবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top