সকল মেনু

চকলেটের যত গুণ

স্বাস্থ্য প্রতিবেদক,ঢাকা, ২১ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : চকলেট এমন এক খাবার যা শিশু থেকে বুড়ো সবার কাছেই লোভনীয়। একটু একটু করে গোটা চকলেট বার খেয়ে নিলেও মন কিছুতেই ভরে না। কেউ যদি এমন সত্যেই করেন তাতে লজ্জা পাওয়ার আর কোন কারণই নেই৷ কারণ এতে রয়েছে নানা গুণাগুণ, এমনটাই বলছেন গবেষকেরা।

চকলেট প্রসঙ্গে মনে হয় সুইজারল্যান্ডের কথা।  আবার নোবেল প্রাইজের ব্যাপারে মনে ভেসে ওঠে সুইডেনের কথা। এই দুই দেশে অনেক চকলেট খাওয়া হয়। আর এই দুই দেশ থেকেই এসেছেন বহু নোবেল বিজয়ী। চকলেট ও বুদ্ধিমত্তার মধ্যে কি কোনো সংযোগ রয়েছে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন নিউইয়র্কের গবেষক ফ্রান্স মেসের্লি। তাঁর এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অফ মেডিসিনে।

সুইজারল্যান্ডে বছরে একজন প্রায় ১২ কিলো চকলেট খেয়ে থাকেন। আর এই দেশটি থেকেই সবচেয়ে বেশি নোবেল প্রাইজ বিজয়ী (৩৬) এসেছেন। সব মিলিয়ে ২৩টি দেশের ওপর সমীক্ষা চালিয়েছেন মেসের্লি।

তবে সুইডেনে ৬.৫ কিলোগ্রাম চকলেট খাওয়া হয়। অথচ দেশটি থেকে ৩২ জন নোবেল বিজয়ী এসেছেন। ‘চকলেট-পরিসংখ্যান’ অনুযায়ী, সুইডেনে এই ধরনের বিজ্ঞ ব্যক্তির সংখ্যা ১৪ হওয়ার কথা।

এই বিষয়টির ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মেসের্লি। সুইডিশরা এব্যাপারে সংবেদনশীল। তাই অল্প চকলেটেই কাজ হয়। যা নোবেল পাওয়ার জন্য যথেষ্ট। অন্য আরেকটি সম্ভবনার কথাও বলেছেন এই গবেষক। নোবেল প্রাইজ কমিটির কেন্দ্র সুইডেনে অবস্থিত। তাই পুরস্কারের ব্যাপারে কিছুটা পক্ষপাত থাকতে পারে।

অবশ্য এই গবেষণাকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে দেখছেন না জার্মান পুষ্টি সোসাইটির  আঙ্গেলা বেশ্টহোল্ড। তাদের ভাষায়, ‘‘নানা বৈজ্ঞানিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে চকলেটের উপাদান মানুষের কর্মদক্ষতার ওপর ইতিবাচক প্রভাব রাখতে পারে। আর এর ওপর ভিত্তি করে মেসের্লি সমীক্ষাটি করেছেন। কোনো কোনো দিক দিয়ে দুটির মধ্যে একটা সংযোগও লক্ষ্য করেছেন তিনি। তবে একে বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে নয় বরং রসাত্মক গবেষণা হিসাবে দেখা উচিত।” ‘মেসের্লি-পরিসংখ্যান’ অনুযায়ী জার্মানির স্থান সপ্তম।

বিজ্ঞানের জগতে চকলেটের গুণাগুণ নিয়ে অনেক গবেষণা হয়েছে। বিশেষ করে মানুষের শরীরে কালো ও তিতা স্বাদের চকলেটের প্রভাব নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়েছে।

শরীরে ইতিবাচক প্রভাব পেতে হলে চকলেটে কমপক্ষে ৭০ শতাংশ কোকো থাকতে হবে। রহস্যটা রয়েছে কোকো দানাতে থাকা ‘ফ্লাভোনয়েডস’ নামে এক ধরনের উদ্ভিজ উপাদানে।

এর সংক্রমণ প্রতিরোধী গুণাগুণ রয়েছে। যা রক্তের চর্বি নিয়ন্ত্রণ করে, কোলেস্টরেল ও উচ্চ রক্তচাপ কমায়। বার্ধক্যের প্রক্রিয়া মন্থর করে। স্মৃতিশক্তি ও মানসিক দক্ষতা বৃদ্ধি করে। এদিক দিয়ে মেসের্লি ঠিকই বলেছেন।

আঙ্গেলা বেশ্টহোল্ড বলেন ‘ফ্লাভোনয়েডস’-এর আরো কিছু ইতিবাচক গুণাগুণ রয়েছে। এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধশক্তি ও রক্তের ধমনির ওপর ইতিবাচক প্রভাব বিস্তার করে। এর ফলে রক্তচলাচল ভালোভাবে হয়। প্রতিরোধ হয় স্ট্রোক ও হার্টঅ্যাটাকের মতো অসুখবিসুখ।

চকলেট সুখানুভূতির হরমোন ‘সেরোটোনিন’ উজ্জীবিত করে। এখানে প্রশ্ন জাগতে পারে, সুখি হতে হলে কী পরিমাণ চকলেট খাওয়া প্রয়োজন? উত্তরে বলা যায়, প্রচুর চকলেট। চকলেটের একটি বার দিয়ে তা হবে না।

পুরস্কারস্বরূপও চকলেট দেওয়া হয়।  ভালো কাজের জন্য কোনো বাচ্চাকে চকলেট দিয়ে পুরস্কৃত করলে এক ধরনের ইতিবাচক অনুভূতি সৃষ্টি হয়। যা সুখের অনভূতিও এনে দেয়।

এবার মন্দের দিকটাও উল্লেখ না করলেই নয়। বেশি চকলেট খেলে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হয়। কালো বা সাদা যে কোনো চকলেটেই থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি ও তৈলাক্ত পদার্থ।  তাই প্রচুর পরিমাণে চকলেট খেলে ক্যালরিও গ্রহণ করা হয় বেশি, ওজন বেড়ে যায়। দেখা দেয় নানা রকম অসুখ-বিসুখ জানালেন পুষ্টি বিজ্ঞানী বেশ্টহোল্ড।

তবে চকলেট শুধু খেতেই মজা নয়। সৌন্দর্য চর্চাতেও সাহায্য করে এই মিষ্টি পদার্থটি।  মুখের মাস্ক, বাথ কিংবা ম্যাসেজও করা যায় চকলেট দিয়ে। এনে দেয় সুখের অনুভূতি। সূত্র- ওয়েবসাইট

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top