সকল মেনু

অবশেষে লাভের অংশ দিচ্ছে গ্রামীণফোন

ঢাকা, ২০ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : সরকার ২০১০ সালে ১৮টি শিল্পখাতের কর্মীদের লাভের অংশ দেওয়ার বিষয়ে নির্দেশ দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করলেও গ্রামীণফোন তা বাস্তবায়ন করছে ৪ বছর পর। প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রায় ৪ হাজার স্থায়ী কর্মীকে প্রথমবারের মতো ২০১৩ সালের লাভের অংশ ৭৩ কোটি টাকা দিয়েছে। গত রোববার তাদের প্রায় ৪ হাজার কর্মী প্রত্যেকে ১ লাখ ৯২ হাজার ৯১ টাকা করে লাভের অংশ পেয়েছে। অপরদিকে রবি তাদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এ বছরও ১ হাজার ৮০০ স্থায়ী কর্মীর মধ্যে ১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা দেয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ২০১০ সালের নভেম্বরে সরকার ১৮টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশ্যে এই এসআরও জারি করে তাদের লাভের ৫ শতাংশ কর্মীদেরকে দিতে হবে। এর মধ্যে টেলিযোগাযোগ খাতও পড়ে। তখন এই খাতে একমাত্র গ্রামীণফোনই লাভ করছিল। এসআরও জারি হওয়ার পরপরই তারা এই এসআরও চ্যালেঞ্জ করে কোর্টে যায়। গ্রামীণফোনের আইনজীবী ব্যারিস্টার তানজিব-উল আলম তৎকালীন এ বিষয়ে বলে ছিলেন, টেলিযোগাযোগ খাতকে সরকার কখনোই শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেনি। সরকারের শ্রম আইনেও এটি শিল্পখাত হিসেবে স্বীকৃত নয়। ফলে এই এসআরও গ্রামীণফোনের ওপর কার্যকর হবে না।

বর্তমানে শ্রম আইন অনুসারে কোন শীল্প প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লাভের ৫ শতাংশ কর্মীদের দিতে হয়। এর আগে ২০১০ সালে সরকার এ বিষয়ে একটি এসআরও জারি করলেও গ্রামীণফোন তা আমলে নেয়নি। বরং তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য হবে না বলে বিষয়টি নিয়ে কোর্টেও যায় তারা। মামলার এখনো পর্যন্ত কোন সুরাহ হয়নি। তবে ২০১৩ সালের জুলাই মাসে সরকার সংশোধিত শ্রম আইনে বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত করলে গ্রামীণফোনও লাভের অংশ শেয়ার করতে রাজি হয়। আর সে অনুসারে তারা ২০১৩ সালে তাদের নেট লাভ ১ হাজার ৪৭০ কোটি টাকার ওপর লভ্যাংশ দিতে রাজি হয়। ৫ শতাংশ হারে এর পরিমান দাঁড়ায় সাড়ে ৭৩ কোটি টাকা। আর সেটিই গত রোববার গ্রামীণফোনের প্রায় ৪ হাজার স্থায়ী কর্মীদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়। এদিকে মামলা সংক্রান্ত ঝামেলা থাকায় কিছু গাড়ি চালকের অ্যাকাউন্টে এই টাকা যায়নি। তবে তাদের টাকা আলাদা করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

২০১২ সালে গ্রামীণফোন লাভ করেছে ১ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। তার আগের বছর এটি ছিল ১ হাজার ৮৮৯ কোটি টাকা। আর ২০১০ সালে এই পরিমান ছিল ১ হাজার ৭১ কোটি টাকা। এই হিসেবে ২০১২ সালের জন্যে গ্রামীণফোনকে ৮৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা কর্মীদেরকে দিতে হবে। আর তার আগের দুই বছরের জন্য তাদেরকে আরো দিতে হবে ৯৪ কোটি ৪৫ লাখ ও ৫৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা। সে সময় মামলা করে মাঠ পেতে চেয়েছিল অপারেটরটি। কিন্তু এখন বাধ্য হয়ে তাদেরকে টাকা গুনতে হবে। অল্প দিনের মধ্যে এই টাকা কর্মীদের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া হবে বলেও জানা গেছে।

এদিকে রবি চলতি মাসের মধ্যেই ২০১৩ সালে তাদের লাভের অংশ কর্মীদেরকে দেবে বলেও জানিয়েছে। শেষ হওয়া বছরে তারা ৩৬৫ কোটি টাকা লাভ করেছে। ৫ শতাংশ হারে তাদেরকে ১৮ কোটি ২৫ লাখ টাকা দেবে। রবি’র ১ হাজার ৮০০ স্থায়ী কর্মীর মধ্যে এটি সমান হারে ভাগ করা হবে। এছাড়া গত বছর কর্মীদেরকে লাভের অংশ দেওয়ার পাশাপাশি সরকারি তহবিলেও এর অংশ দিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটর রবি। অপারেটরটি ২০১২ সালের নিট মুনাফা ৯১ কোটি ৯০ লাখ টাকা থেকে সরকারি শ্রমিক কল্যাণ তহবিলে ১ কোটি ২ লাখ টাকা প্রদান করে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top