সকল মেনু

গানের সঙ্গে সাবার প্রেম

বিনোদন প্রতিবেদক, ১৯ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : তার বয়স তখন মাত্র তিন বছর। ছোট্ট মেয়েটিকে বাবা-মা একটি হারমোনিয়াম কিনে দিলেন। তখন থেকেই গান শেখা শুরু। তার নাম সাবরিনা হক সাবা। এই মেয়েটি যখন প্রথম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তখন তাকে ভর্তি করিয়ে দেওয়া হল বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে। তবে শুধু গান শিখতে পাঠিয়ে দিয়েই তার মা থামলেন না। মায়ের চাওয়া মেয়ে হবে অলরাউন্ডার। তাকে গানের পাশাপাশি তালিম দেওয়ানো হল অভিনয়, নাচ, উপস্থাপনা ও আবৃত্তিতে। এরপর শিশু একাডেমিতে তিন বছরের একটা গানের কোর্স সম্পন্ন করল সে।

এই মেয়েটি জাতীয় শিশু-কিশোর প্রতিযোগিতা নতুন কুঁড়ি ২০০৩-এ নজরুল সংগীত বিভাগে তৃতীয় স্থান অর্জন করে। এরপর তিনি অংশ নেন এনটিভির মার্কস অলরাউন্ডার প্রতিযোগিতায়। এবারও এলো সাফল্য। ৪র্থ স্থান অর্জন করেন তিনি । এছাড়া তিনি জিতেছেন শাপলা কুঁড়ি ও পদ্ম কুঁড়িসহ আরও অনেক পুরস্কার।

তবে তিনি এই সাফল্য কিন্তু হঠাৎ করেই হাতের মুঠোয় পান। এজন্য তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। তার ভাষায়, ‘প্রথম প্রথম পুরস্কার পেতাম না বলে অনেক রাগ হতো। অনেক কষ্ট পেতাম, কান্নাকাটি করতাম। সবাই আমাকে বুঝাতো । এক দু’বছর পরে দেখলাম সব পুরস্কার আমার হাতে। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারীরা অনেকটা ধরেই নিতো সাবা আসছে মানেই, ওর ঘরে পুরস্কার।’

২০০৫ সালে শিশু একাডেমি থেকে সাংস্কৃতি টিম গঠন করা হয়। সারা দেশ থেকে আটজন শিশুকে নেয়া হবে। এখানে শুধু জাতীয় পুরস্কার পাওয়া শিশুরাই অংশগ্রহন করতে পারবে। এতে প্রায় ২৫ হাজার প্রতিযোগি অংশ নেয়। এ প্রতিযোগিতায় যেকোন একটি বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে। বিচারকরা সাবাকে জিজ্ঞাসা করলো ‘তুমি কি পারো?’
সাবার উত্তর ছিলো, ‘শুধু গান না, আমি সবই পারি, কোনটা দেখতে চান?’ তার পর নাচ,গান, অভিনয়, আবৃত্তি করলেন। ছবিও আঁকলেন। বিচারকরা খুবই অবাক। প্রতিযোগিতায় তিনি সবচেয়ে বেশি নাম্বার পেয়েও, ভয়ে ছিলেন। এতে তার প্রতিদ্বন্দী ছিলেন মডেল শখ। শেষ পর্যন্ত তিনি টিকে গেলেন। সেই দলটি এরপর নেপাল সফরে যায়।’

ছায়ানটে নজরুল গীতি শিখেছেন সাবা। এ কোর্সটি শেষ হওয়ার পর তিনি প্রথম কোন অ্যালবামে গান করেন। অ্যালবামটির নাম ছিলো প্রার্থনা ।এরপর ডুব, মনেরই আকাশ,  রোমিও জুলিয়েট, সুখপাখি, পাঁজরের মাঝে,  জনম জনম তোমাকে অ্যালবামে গান করেন। ২০১৩ সালে প্রকাশিত হয় তার প্রথম একক অনলি সাবা। অ্যালবামটি প্রযোজনা করেছেন সপ্তক অডিও ভিশন। ব্যয়বহুল এ অ্যালবামে সাবার সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছেন জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী আসিফ আকবর, বেলাল খান, কাজী শুভ ও ভারতের  কন্ঠশিল্পী জুবিন। অ্যালবামটির সংগীত পরিচালনা করেছেন নাজির মাহমুদ, রাফি, মুশফিক লিটু, অনিক সাহান ও দৃশান। গানগুলো লিখেছেন দেলোয়ার, আরজু, শরিফ, রবিউল ইসলাম জীবন,  রবি ও ভারতীয় গীতিকার প্রিয় গোপাল চট্টোপাধ্যায়। অডিও অ্যালবামের পাশাপাশি আসিফ আকবর ও বেলাল খানের সঙ্গে দুটি ডুয়েট গানেরও ভিডিও নির্মিত হয়েছে।

প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশ প্রসঙ্গে সাবরিনা সাবা  বলেন, ‘গতানুগতিক ধারার বাইরে গিয়ে ভালো কিছু করতে চেয়েছি। দীর্ঘদিনের শ্রম ও সাধনার ফসল আমার ‘অনলি সাবা’ অ্যালবাম। এখানে নিজেকে শতভাগ উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি।’ এবছর ভ্যালেইনটাইনে মিক্সড অ্যালবাম ভালোবাসি তোমায়  প্রকাশিত হয়। এর টাইটেল সংটিতে কণ্ঠ দেন সাবা ও কাজী শুভ।

সম্প্রতি অয়ন চাকলাদারের সঙ্গে একটা গান করেছেন। গানটার নাম ঠিক না হলেও এর রের্কডিং হয়ে গেছে। গানটি আসছে বৈশাখের একটি অ্যালবামে থাকবে। সাবা তার গান প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমি খুব বেছে বেছে কাজ করছি। কথা আর সুর মিলে যদি আমার কাছে ভালো লাগে তাহলে কাজ করি। মানুষ যেভাবে চায়, ঠিক সেভাবেই কাজ করতে চাই আসি।’

তার মতে, ‘যারা গানের পাশাপাশি যারা অন্যকিছু করছে তারা আসলে গানটাকে ভালোবাসতে চেষ্টা করছে না।’
সাবা আগামীতে শর্টফিল্ম তৈরি করতে চান। ইউনিসেফের পক্ষ থেকে নূপুর  নামে একটি শর্টফিল্ম তৈরি করা হয়েছিল। এটি প্রদর্শিত হয় নেদারল্যান্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে। এটি নির্মাণ করে প্রশংসিত হন সাবা। সেই থেকেই এদিকে তার টান। সেই টানের কারণেই শখের বসে আরো কিছু কাজ করতে চান।

 

সাবরিনা হক সাবা পরিচিতি :
বাবা: সানাউল হক।
মা: রোকসানা।
বোন: পাখি। ভিখারুননেসা স্কুল এন্ড কলেজে নবম শ্রেনীতে পড়ে।
জন্ম: ৭ নভেম্ববর ১৯৯৬।
জন্মস্থান : বগুড়া।
প্রিয় শিল্পী :রুনা লায়লা। বিদেশি শিল্পী : কেটি পেরি।
পোশাকের ক্ষেত্রে পছন্দ করেন : ইয়োলো, সাদা কালোর পোশাক
প্রিয় রং : নেভি ব্লু।
পছন্দের খাবার: চিকেন বিরিয়ানি, পিজা, সিঙ্গারা।
প্রিয় নায়ক: সালমান শাহ।
পছন্দের ছেলে : শিক্ষিত, ভদ্র ও বিনয়ী। তাকে যে খুব সুন্দর হতে হবে এমন কোন কথা নেই। তবে তাকে অবশ্যই ইতিবাচক মানিসিকতা সম্পন্ন হবে।
বর্তমানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভিকারুন নিসা নুন কলেজের। এইচ এস সি পরিক্ষার্থী। বিজ্ঞান বিভাগ।

ভবিষ্যত পরিকল্পনা : জিপিএ ৫ পাওয়া। এরপর ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হওয়া।
আনন্দের দিন : প্রথম একক অ্যালবাম প্রকাশের দিন।
খারাপ লাগা মুহুত: যখন রিয়েলিটি শো মার্কস আল রাউন্ডার থেকে বাদ পরলেন।
প্রিয় সুগন্ধী ব্র্যান্ড : সিকেব্র্যান্ড।
প্রিয় পোশাক : কোন অনুষ্ঠানে শাড়ি পরেন। এছাড়া জিন্স টপ্স। বাসায় পরেন সালোয়ার-কামিজ।
প্রিয় বন্ধু : সারা, লামইয়া, নিসি।
অবসরে : ঘুমাতে পছন্দ করেন। গান শোনেন।
– See more at: http://risingbd.com/detailsnews.php?nssl=aa1c251b60472e18e33ecdeaf84dd867#sthash.a1HXicDV.dpuf

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top