সকল মেনু

ইসলামী ব্যাংকের অনুদান নিয়ে লুকোচুরি

ঢাকা, ১৮ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে ‘লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা’ অনুষ্ঠানের জন্য ইসলামী ব্যাংকের কাছ থেকে তিন কোটি টাকা অনুদান নেয়ার বিষয়টি নিয়ে লুকোচুরি করছে সরকার। কোনো মন্ত্রী বলছেন এ টাকা ফেরত দেয়া উচিৎ আবার খোদ সংস্কৃতি মন্ত্রী টাকা নেয়ার বিষয়টিই অস্বীকার করছেন।

অথচ গত ১৪ মার্চ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবনে ব্যাংকটির ভাইস চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার মুস্তাফা মনোয়ারের হাত থেকে তিন কোটি টাকার চেক গ্রহণ করেন। এসময় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত এবং জ্বালানি উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী উপস্থিত ছিলেন।

পরের দিন ১৫ মার্চ চেক হস্তান্তরের বিষয়ে ইসলামী ব্যাংক গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠায়।

এই আয়োজনে ইসলামী ব্যাংকের অর্থায়ন নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের অন্যান্য মাধ্যমে এ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক ও সমালোচনা। অনেকে এই কর্মসূচি বর্জনেরও ঘোষণা দিয়েছেন।

একাত্তরে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গত বছরের ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে গড়ে ওঠে গণজাগরণ মঞ্চ। সেখান থেকে জামায়াতে ইসলামীর আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে ইসলামী ব্যাংক বন্ধ অথবা জাতীয়করণের দাবি ওঠে। একই সঙ্গে ইসলামী ব্যাংক বর্জনের জন্য দেশের মানুষদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। শুধু তা-ই নয় ইসলামী ব্যাংকের বিরুদ্ধে এর আগে জঙ্গি অর্থায়ন ও অর্থায়নে সহযোগিতা করারও অভিযোগ ওঠে।

গণজাগরণ মঞ্চের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে যুদ্ধাপরাধের জন্য সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধেও মামলা করার বিধান যুক্ত করে। সে অনুযায়ী শিগগিরই জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে মামলা হতে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। স্বাধীনতা বিরোধী ও যুদ্ধাপরাধী সংগঠন হিসেবে দলটিকে নিষিদ্ধ করারও দাবি উঠেছে। এমন সময়ে লাখো কণ্ঠে জাতীয় সংগীত গাওয়ার মতো একটি আয়োজনে জামায়াতের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ও পরিচালিত আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইসলামী ব্যাংকের আর্থিক সহযোগিতা নেয়া একাত্তরের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে মনে করছেন অনেকে।

এদিকে মঙ্গলবার সচিবালয়ে এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকরা ওই প্রসঙ্গ তুললে অর্থ অনুদান নেয়ার বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এটা শতভাগ নিশ্চিত যে লাখো কণ্ঠে সোনার বাংলা তহবিলে ইসলামী ব্যাংকের কোনো চেক গ্রহণ করা হয়নি। ইচ্ছা করলে আপনারাও যাচাই করে দেখতে পারেন।’

অপরদিকে মঙ্গলবার অন্য একটি অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু এমন একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘ইসলামী ব্যাংকের টাকা ফেরৎ দেয়া উচিৎ। এ টাকা দিয়ে জাতীয় সংগীতের অনুষ্ঠান হবে না।’

মন্ত্রীদের এরকম বক্তব্য নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিল। বিষয়টি সরকারেই দ্বন্দ্ব রয়েছে নাকি এভাবে লুকোচুরির চেষ্টা করছে তা স্পষ্ট হতে হয়ত আরো কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হবে। অবশ্য ২০১১ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপে ইসলামী ব্যাংক প্রধান স্পন্সর হয়েছিল। তাতে কোনো বিরোধিতায় সরকারকে নিবৃত্ত করতে পারেনি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top