সকল মেনু

প্রেমে প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারে ১০টি বিচিত্র তথ্য, যা আপনি মোটেও জানেন না!

লাইফস্টাইল প্রতিবেদক, ১৭ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : প্রত্যাখ্যান ব্যাপারটাই এমন, যত কঠিন মানুষই হোক না কেন, প্রিয়জনের প্রত্যাখ্যান তার সহ্য হয় না মোটেই। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হবার পর মানুষ ভেঙে পড়ে খুব সহজেই। শুধু প্রেম নয়, অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রত্যখ্যানের কষ্ট মানুষকে অনেকদিন ধরে বয়ে বেড়াতে হয়। এটা এমন এক ক্ষত, যা অনেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বয়ে বেড়ায়। এই প্রত্যাখ্যান আমাদের মনের মাঝে যেভাবে আঘাত করে, তেমনি আমাদের চিন্তাভাবনা এবং “শরীরের” ওপরেও রাখে অদ্ভুত কিছু প্রভাব। দেখে নিন প্রত্যাখ্যানের এমনই কিছু অদ্ভুত বৈশিষ্ট্য।

১) প্রত্যাখ্যানের কষ্ট অনেকটাই শারীরিক কষ্টের মত

শারীরিকভাবে ব্যথা পেলে আমাদের মস্তিষ্কের যেসব অংশ উদ্দীপিত হয়, প্রত্যাখ্যানের কষ্টেও মস্তিষ্কের ঠিক সেসব অংশই উদ্দীপিত হয়। এ কারণে প্রত্যখ্যাত হলে মানুষ এতোটা কষ্ট পায়।

২) পেইন কিলারে কমে প্রত্যখ্যানের কষ্ট

ব্যথা আর প্রত্যাখ্যানের কষ্টের মাঝে এতোটাই মিল যে, টাইলেনলের মতো পেইন কিলার খেলে প্রত্যখ্যানের কষ্ট কমে যায়। ডাক্তাররা ব্যাপারটা পরীক্ষা করার জন্য কিছু মানুষকে টাইলেনল খেতে দেন এবং তাদের জীবনের বিষাদময় প্রত্যখ্যানের স্মৃতি মনে করতে বলেন। দেখা যায় যারা টাইলেনল খেয়েছিলেন তারা কম মানসিক বেদনা অনুভব করেন।

৩) বিবর্তনের পেছনে রয়েছে প্রত্যাখ্যানের ভুমিকা

অন্যদের থেকে আলাদা হয়ে যাবার একটা ভয় থাকে প্রত্যাখ্যাত মানুষের। এই ভয়টা আমাদের মাঝে আছে সেই আদিম কাল থেকেই। আদিম সময়ে সমাজের অন্যরা যদি কাউকে আলাদা করে দিত, তবে একা একা বন্য পরিবেশে বেঁচে থাকা তার জন্য অসম্ভব হয়ে দাঁড়াত। এ কারণে সে সময় থেকেই আমাদের মনে প্রত্যাখ্যানের ব্যাপারে একটা সহজাত ভীতি রয়ে গেছে, তৈরি হয়ে একটা বিপদ সংকেতের মতো ব্যাপার।

৪) শারীরিক কষ্টের চাইতে আমরা প্রত্যাখ্যানের কষ্টের স্মৃতি সহজে মনে করতে পারি

গত সপ্তাহে হাত কেটে গেছিলো? পা মচকে গেছিলো? পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেয়েছিলেন? সেই ব্যাথার স্মৃতি মনে থাকবে না আপনার। মস্তিষ্ক শারীরিক সেই ব্যাথার স্মৃতি বেমালুম ভুলে যাবে। কিন্তু গত বছর প্রিয় একজন মানুষ আপনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে, সেই বেদনার স্মৃতি এখনো আপনার মনে তরতাজা, মনে হবে এইতো গতকাল সে আপনাকে কষ্ট দিয়েছে। দোষটা আসলে আমাদের মস্তিষ্কের। শারীরিক ব্যথা-বেদনা ভুলে গেলেও প্রত্যাখ্যানের যন্ত্রণা সে আপনাকে মনে করিয়ে দেবার জন্য তৈরি।

৫) প্রত্যাখ্যান আমাদের মানসিক স্থিতি নষ্ট করে দেয়

আমাদের সবার মাঝেই একটা সুপ্ত আকাঙ্খা থাকে কোনো একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর মাঝে নিজের স্থান করে নেওয়ার। আমরা কোনো একটি জাতির মানুষ হিসেবে পরিচিতি পেতে চাই, নির্দিষ্ট একদল বন্ধুর মাঝে নিজেদের স্থান খুঁজে পেতে চাই, একটি নির্দিষ্ট এলাকায় পরিচিত হয়ে উঠতে চাই, এবং সাধারণত এই স্থান আমরা খুঁজে পাই ও আমাদের মাঝে একধরণের স্থিতি আসে। কিন্তু প্রত্যাখ্যাত হলে এই স্বাভাবিক স্থিতির অনুভূতি নষ্ট হয়ে যায়। আমরা নিজেদের স্থান থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়ি। একাকী মনে করতে থাকি নিজেকে, নিজের স্থান আর খুঁজে পাই না।

৬) আচরনে রাগ এবং সহিংসতা সৃষ্টি করে প্রত্যাখ্যান

২০০১ সালের এক গবেষণায় বলা হয়, তরুণদের মাঝে সহিংস আচরণ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ড্রাগ এবং দারিদ্র্যের চাইতে প্রত্যাখ্যান বেশি দায়ী। এমনকি খুব হালকা ধরণের প্রত্যাখ্যানেও মানুষের মানসিক অবস্থা একেবারেই পালটে যেতে পারে। শান্তশিষ্ট একজন মানুষ হয়ে উঠতে পারে মারমুখী।

৭) প্রত্যাখ্যানে আমরা ক্রমশ নিজের ওপরে আস্থা হারিয়ে ফেলি

বিশেষ করে প্রেমের ক্ষেত্রে প্রত্যাখ্যাত হলে আমরা ধরে নেই আমাদের মাঝেই কোনো খুঁত রয়েছে যার কারণে কেউ আমাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। একটু একটু করে নিজেদেরকে দোষ দিতে শুরু করি আমরা, একটুতেই নিজের ওপর রাগ হয়ে যাই। এতে আমাদের কষ্ট আরও বাড়তেই থাকে।

৮) প্রত্যাখ্যাত হবার পর কিছু সময়ের জন্য আমাদের আই কিউ কমে যায়

শুধু আই কিউ কমে না, বরং আমাদের স্মৃতিশক্তি ও কমে যায় এবং সঠিক সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলি আমরা।

৯) প্রত্যাখ্যানের কষ্ট কোনো যুক্তি মানে না

আপনাকে যদিওবা কেউ বলে, যে মানুষটি আপনাকে প্রত্যাখ্যান করেছে সে খুবই খারাপ মানুষ, সে আপনার যোগ্য নয়, এর পরেও আপনার কষ্ট কমবে না। এমনকি তার খারাপ চরিত্রের প্রমাণ দিলেও কষ্ট কমবে না। এটা একেবারে গবেষণায় প্রমানিত সত্য।

১০) প্রত্যাখ্যানের ফলে সৃষ্ট মানসিক কষ্ট সারিয়ে তোলা সম্ভব

প্রত্যাখ্যানের এতোগুলো খারাপ প্রভাবের কথা তো শুনলেন, এবার শুনুন একটু আশার কথা। মনস্তত্ববিদের সাহায্যে কমিয়ে ফেলতে পারেন এমনকি পুরোপুরি সারিয়ে ফেলতে পারেন নিজের হৃদয়ের এই ক্ষত। এর সাথে সাথে ফিরে পেতে পারে নিজের আত্মবিশ্বাস, বুদ্ধি, উদ্যম এমনকি ফিরে পেতে পারেন ভালোবাসার শক্তি।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top