সকল মেনু

ভূমি প্রতিমন্ত্রীর ভয়ে…

চট্টগ্রাম , ১৭ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) :  চট্টগ্রাম মহানগরী ও জেলা উপজেলার বিভিন্ন সরকারি ভূমি অফিসসমূহ ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের আতঙ্কে ভুগছে।

মন্ত্রী আকস্মিকভাবে ভূমি অফিসসমূহ ঝটিকা সফর ও পরিদর্শন করে দুর্নীতিবাজ ভূমি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থ গ্রহণ করছেন। অনেক কর্মচারীকে তাৎক্ষণিক বদলি ও চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করছেন।

ভূমি দস্যুদের হাত থেকে সরকারি জমি উদ্ধারে নিজে উপস্থিত থেকে অভিযান পরিচালনা করছেন, গ্রেফতার করছেন ভূমিদস্যুদের।ভূমি  প্রতিমন্ত্রীর এ ধরনের প্রসংশনীয় উদ্যোগে ভূমি  দপ্তর সমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

যে কোনো মুহুর্তে মন্ত্রী চলে আসতে পারেন এই ভয় থেকে ভূমি অফিসগুলোতে অনৈতিক লেনদেন অনেকটা কমে এসেছে।

কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অনিয়ম দুর্নীতির ফাইলগুলো আড়াল করে রাখা কিংবা যতটা সম্ভব সঠিক শুদ্ধ রাখার চেষ্টায় রয়েছেন।

রোবার দুপুরে ভূমি  প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ হঠাৎকরে ঝটিকা পরিদর্শনে গিয়ে নগরীর সদরঘাট এলাকায় আগ্রাবাদ ভূমি অফিসের দুই কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত, এক কর্মচারীকে বদলি এবং অবৈধভাবে সরকারি জমি দখলে রাখায় দু’জনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছেন।

রোববার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আগ্রাবাদ ভূমি অফিসে যান সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।অফিস পরিদর্শনের সময় বিভিন্ন দাপ্তরিক নথিপত্র দেখেন তিনি।

ওই কার্যালয়ে এমএলএসএস পদে আনিসুল ইসলাম প্রায় চার বছর ধরে কর্মরত আছেন শুনে তাকে তাৎক্ষণিক বদলির আদেশ দেন প্রতিমন্ত্রী।এরপর ভূমি অফিসের পশ্চিমে সরকারি মালিকানাধীন একটি পুকুরের দখল হয়ে যাওয়া জমি পরিদর্শনে যান মন্ত্রী।

এ সময় ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, পুকুরটি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি দখলে রেখে পর্যায়ক্রমে ভরাট করে ফেলেছে।ভূমি প্রতিমন্ত্রীর পরিদর্শনের সময় স্থানীয় অলক খাস্তগীর (৪৫) নামে এক ব্যক্তি নিজেকে পুকুরের একাংশের মালিক পরিচয় দেন।

এ বিষয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তিনি একটি মামলা করেছেন বলেও জানান।মন্ত্রী ঘটনাস্থলে এই সরকারি পুকুর ও নথিপত্র যাচাই শেষে পুকুরের সরকারি মালিকানা নিশ্চিত হওয়ার পর ভূমি প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে কথিত মালিক অলক খাস্তগীরকে আটকের নির্দেশ দেন।এ সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে থাকা পুলিশ তাকে আটক করে।এরপর মন্ত্রী ভূমি অফিসের লাগোয়া সরকারি জমিতে অবৈধভাবে দোকান ঘর নির্মাণ করায় আবদুস শুক্কুর নামে একজনকেও আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন।

সরকারি জমি দখলের বিষয়ে সচেতন না থাকায় নিজ দায়িত্বে অবহেলা করায় আগ্রাবাদ ভূমি অফিসের সহকারী ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন ও সহকারী তহশিলদার রণ কান্তি শীলকে সাময়িক বরখাস্ত করেন প্রতিমন্ত্রী।
এরপর প্রতিমন্ত্রী নগরীর কর্ণফুলী নদীর শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায় গড়ে ওঠা একটি ইটভাটা পরিদর্শনে যান। সেখানে অবৈধ একটি ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।

ভূমি প্রতিমন্ত্রীর এই ধরনের ঝটিকা পরিদর্শন এবং দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া চট্টগ্রাম অঞ্চলের সকল ভূমি  অফিসে এখন ‘মন্ত্রী’ আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top