সকল মেনু

নিত্যদিনের স্ট্রেস কমানোর জাদুকরী ১১ টি কৌশল

স্বাস্থ্য প্রতিবেদক, ১৪ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : জীবনের ব্যাপারে সত্যি একটা কথা হলো, স্ট্রেস থাকবেই। আমাদের ভালো লাগুক আর না লাগুক, স্ট্রেস সবারই জীবনে আছে। এই স্ট্রেস যখন অতিরিক্ত হয়ে যায়, তখন তা আমাদের শরীর ও মনের স্থায়ী ক্ষতি করতে সক্ষম। তাহলে উপায় কি? যে কোনো উপায়ে স্ট্রেসকে সহনীয় মাত্রার মাঝে রাখা উচিত আমাদের। এখানে দেখে নিন স্ট্রেস কম রাখার খুব সহজ কিছু কৌশল।

যোগব্যায়াম

শুধু শরীর ভালো রাখার জন্যই নয় বরং স্ট্রেস কম রাখার জন্যেও অনেক কাজে আসে। নিয়মিত যোগব্যায়াম করার ফলে স্ট্রেস সহ্য করার ক্ষমতা বেড়ে যায় এবং শরীরের ক্ষতি কম হয়।

ঘুম

ভালো ঘুমালে আপনার চেহারা সকাল বেলায় চকচকে হয়ে থাকবে, সেই সাথে কমে যাবে আপনার স্ট্রেসের মাত্রাও। সারাদিন স্ট্রেসে থাকলে আপনার ঘুম কম হবে, ফলে পরদিন আপনি ক্লান্ত থাকবেন, কাজ করতে পারবেন না এবং আরও বাড়বে স্ট্রেস, ফলে স্ট্রেসের একটা চক্রের মাঝে পড়ে যাবেন আপনি। এ চক্র থেকে বের হয়ে আসার জন্য আপনাকে নিয়মিত ভালো করে ঘুমানোর অভ্যাস করতে হবে।

থেরাপি

সাইকোথেরাপি বা মনস্তত্ববিদের সাথে কথা বলার মাধ্যমে স্ট্রেস কমানো হলো আরেকটি উপায়। এক্ষেত্রে মনস্তত্ববিদ এবং রোগী দুজনেই কথা বলে স্ট্রেসের উৎস খুঁজে বের করেন এবং তার জীবনের সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করেন। অনেক সময়ে গ্রুপ থেরাপিও এক্ষেত্রে কাজ করে এবং জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আসার চেষ্টা করা হয়।

ব্যায়াম

কেন ব্যায়াম করলে স্ট্রেস কমে? কারন হলো, ব্যায়ামের ফলে শরীরের কর্টিসলের পরিমাণ কমে। কর্টিসল হলো স্ট্রেস হরমোন। এর পরিমাণ কমে গেলে স্ট্রেসের পরিমাণও কমে আসে। শুধু ভারি ব্যায়াম নয়, এমনকি দিনে তিন বার ১০ মিনিট করে হাঁটলেও স্ট্রেস অনেক কমে আসে।

ধ্যান

ধ্যানের আছে অনেক উপকারিতা, তার মাঝে অন্যতম হলো স্ট্রেস কম রাখার ক্ষমতা। ধ্যান কম রাখে রক্তচাপ, ব্যাথার অনুভুতি কমায় এমনকি বিষণ্ণতা সারিয়ে তোলে। ধ্যান মানে এই নয় যে আপনাকে পা মুড়ে বসে থাকতে হবে। ধ্যান হলো মনকে চিন্তাশূন্য করে দেওয়ার প্রক্রিয়া। এটা আপনি অফিসে বসে এমনকি বাসায় শুয়ে থেকেই করতে পারবেন।

হাসি

হাসি হলো স্ট্রেস কমানোর সবচাইতে সহজ ওষুধ। মজার কিছু দেখুন বা করুন, প্রাণ খুলে হাসতে থাকলে দেখবেন স্ট্রেস কখন পালিয়ে গিয়েছে!

দুশ্চিন্তার বাঁধা সময়

দুশ্চিন্তা আমাদের স্ট্রেস বাড়ায় ঠিকই, কিন্তু অনেক দুশ্চিন্তা না করে থাকতে পারেন না। দুশ্চিন্তা একেবারে না করতে বলা হলে তারা খাপ খাওয়াতে পারেন না। তাই যারা খুব দুশ্চিন্তাপ্রবণ তাদেরকে বলা হয় একটা নির্দিষ্ট সময় বেধে নিতে। ঠিক করে নিন, প্রতিদিন বিকেলে বা সন্ধ্যায় ঠিক ১০ মিনিট বা ৩০ মিনিট আপনি দুশ্চিন্তায় ব্যয় করবেন, কিন্তু অন্য সময়টা থাকবেন দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত। এই প্রক্রিয়া স্ট্রেস কমাতে অনেক কার্যকরী।

অভিযোগ করবেন না

আমরা অনেকেই দুশ্চিন্তায় থাকলে কাছের মানুষ বা বন্ধুর কাছে সব খুলে বলি যাতে আমাদের হাল্কা লাগে। কিন্তু এ কাজটি করা কি আসলে ঠিক? অনেকের ক্ষেত্রে দেখা যায়, এমন অভিযোগ করার পর তাদের হাল্কা না লেগে বরং আরও বেশি বিষণ্ণ লাগছে। সুতরাং এই অভিযোগ করার অভ্যাস থাকলে তা বদলে ফেলুন।

ম্যাসাজ

শরীর ম্যাসাজ করার ব্যাপারটা আমাদের দেশে এখনো খুব একটা প্রচলিত নয় বটে, কিন্তু এর উপকারিতা অনেক। পেশির মাঝে থাকা স্ট্রেস দূর করে আপনাকে রিল্যাক্স করে দেয় ম্যাসাজ। শুধু তাই নয়, স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল এবং সহিংসতার সাথে জড়িত হরমোন ভ্যাসোপ্রেসিন কমিয়ে আনতে ম্যাসাজের ভূমিকা প্রমাণিত।

জার্নাল/ডায়েরি লিখুন

আপনার মনে লুকিয়ে থাকা যত চিন্তা, এসব বলার চাইতে লিখে ফেলুন ছোট্ট একটি নোটবইতে। এতে আপনার মনে হবে আপনি পরিস্থিতি সামলে নিতে পারবেন এবং চোখের সামনে থাকলে আসলেই সমস্যার সমাধান করা সহজ হয়ে পড়ে। শুধু তাই নয়, আপনি পুরনো লেখা পড়তে পারেন এবং দেখতে পারেন আপনি আগে এ ধরণের সমস্যা কীভাবে সমাধান করেছেন এবং ঠিক কি করলে এসব ব্যাপারে আপনার স্ট্রেস কমে যেতে পারে।

আলিঙ্গন

স্ট্রেস কমানোর জন্য অক্সিটোসিন হরমোন কাজ করে। এই হরমোন নিঃসৃত হয় বেশ কিছু সময়ে, যেমন যখন মানুষ একে অপরকে আলিঙ্গন করে। তখন এই হরমোন শরীর থেকে স্ট্রেস দূর করতে কার্যকরী হয়। পরিবার, বন্ধু এবং প্রিয়জনের আলিঙ্গনে অনেকটাই কমে যায় স্ট্রেসের মাত্রা।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top