রোববার বিকেলে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হলেও, সোমবার থেকে সকলের জন্য উন্মুক্ত করা হয় সেবিট মেলা। বিশ্বের অন্যান্য অনেক দেশের সঙ্গে বাংলাদেশও এই মেলায় অংশ নিয়েছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর উদ্যোগে ছয়টি প্রতিষ্ঠান এবং নেদারল্যান্ডসের সিবিআই-এর উদ্যোগে সাতটি প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ রয়েছে মেলায়। ১৯৯৯ সাল থেকে নিয়মিত হানোফারের মেলায় অংশ নিচ্ছে সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘লিডসফট’। প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ শহিদ বলেন, ‘‘সেবিট-এ ধারাবাহিকভাবে অংশ নেয়ার মাধ্যমে আমরা ডেনমার্কের কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য বেশ লাভজনক হয়েছে।”
বাংলাদেশ থেকে এ বছরই প্রথম সেবিট মেলায় অংশ নিয়েছে কয়েকটি প্রতিষ্ঠান। এদের একটি ‘বিয়ন্ড টেকনোলজিস’। অপেক্ষাকৃত নতুন এই প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোসাদ্দেক আহসান জানান, মূলত প্রতিষ্ঠানের ব্র্যান্ডিংয়ের জন্য বিশ্বের বৃহত্তম মেলায় আসা তাদের। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সেবিট চমৎকার স্থান বলে মনে করেন আহসান।

প্রসঙ্গত, বর্তমানে মুঠোফোন এবং ট্যাব নির্ভর অ্যাপস তৈরির দিকে ঝুঁকছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। বাংলাদেশের সফটওয়্যার নির্মাতারাও এক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই বলে জানান সিনেসিস আইটির চিফ অপারেটিং অফিসার রুপায়ন চৌধুরী। মূলত অ্যাপল আইওএস এর উপযোগী অ্যাপস তৈরি করে প্রতিষ্ঠানটি। বাংলাদেশের সফটওয়্যার খাতের কিছু সমস্যার কথা জানালেন মেলায় আগত ডাটাবিজ সফটওয়্যার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ কামাল। তিনি বলেন, ‘‘বাংলাদেশ থেকে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মার্কিন ডলারে লেনদেন এখনো সহজ হয়নি। ফলে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য অনেকক্ষেত্রে কঠিন হয়ে যাচ্ছে।”

বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যান্ডউইডথ নিয়ে এখনো সমস্যা রয়েছে বলে জানান কামাল। তিনি জানান, প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারে খরচ বেশি। পর্যাপ্ত গতিও এখনো পাওয়া যায় না। এছাড়া বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ‘ইমেজ’ ইতিবাচক না হওয়ায় ব্যবসার উপর তার প্রভাব পড়ছে বলে মনে করেন তিনি। তবে বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে উঠে সফটওয়্যার খাত এগিয়ে যাচ্ছে বলেও জানান তথ্য প্রযুক্তিবিদ রাশেদ কামাল। তিনি বলেন, ‘‘আনুষ্ঠানিক হিসেবে বাংলাদেশ গত বছর ১০০ মিলিয়ন ডলারের সফটওয়্যার এবং প্রযুক্তি সেবা রপ্তানি করেছে। আগামী চার-পাঁচ বছরের মধ্যে আমরা রপ্তানির পরিমাণ এক বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে চাই।”
উল্লেখ্য, সেবিট মেলায় বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ক্রমশ বাড়ছে বলে জানান বার্লিনের বাংলাদেশ দূতাবাসের কমার্শিয়াল কাউন্সিলর মোহাম্মদ আব্দুর রউফ। মেলায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সার্বিক সহায়তা করছে দূতাবাস। সেবিট ২০১৪ চলবে ১৪ মার্চ পর্যন্ত।