সকল মেনু

বাঁচার তাগিদে ওরা নিজেকে বিলীন করে চোরাচালানে লিপ্ত

মো. আমিরুজ্জামান, নীলফামারী ০৭ মার্চ, (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : নীলফামারী জেলার সৈয়দপুরসহ বৃহত্তর রংপুর বিভাগের শত শত নারী জড়ো হয়েছেন হিলি সীমান্ত এলাকায়। সীমান্তের এপার ওপারের দালালের ইঙ্গীত পেলেই দলে দলে ঢুকে পড়বেন ভারতীয় এলাকায়। কিন্ত কখন যে ইঙ্গীত মিলবে কেউই জানেন না। একই এলাকায় তারা বসে আছেন ঘন্টার পর ঘন্টা। প্রয়োজন মিটাতে সেখানে নেই কোন শৌচাগার বা বিশুদ্ধ খাবার পানির ব্যবস্থা। এরপরেও বাঁচার তাগিদে নারী চোরাচালানীদের পদচারণায় মুখর হয়ে উঠেছে হিলি এলাকা।

জানা যায়, হিলির ওপারে ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় আসে হাজার হাজার মন জিরা। শুধুমাত্র সীমান্তের দুই দালালের ইঙ্গীতেই ভারতীয় সীমান্ত এলাকায় ঢুকে জিরা কিনতে পায় নারী চোরাচালানীরা। যারা দালালদের মন খুশি করতে ব্যর্থ হয় তাদের ভারাক্রান্ত মন নিয়ে ফিরে আসতে হয় নিজ নিজ এলাকায়। দালালরা কারো কাছে টাকা নিয়ে খুশি। আর কারো কাছে খুশি হতে পেতে চায় অবৈধ মেলামেশায়। এভাবেই এসব নারীরা বাঁচার তাগিদে নিজেকে বিলীন করে দিয়ে এসব ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন বছরের পর বছর। অনেক সময় জেল জরিমানার শিকারও হন অনেক নারীরা। স্বাধীন দেশের নারীরা আজ বাঁচার তাগিদে নিজেকে বিলীন করছেন দালালদের কাছে। কিন্ত সেটা দেখার যেন কেউই নেই।

ময়না, আসমা ও সালেহাসহ বেশ ক’জন মধ্যবয়সী নারী জানান, সাংবাদিক সাহেব কোন ভালো মানুষ এ ধরনের ব্যবসায় লিপ্ত হয় না এবং উচিতও না। সংসারে অভাব অনটনের কথা ভেবে সৈয়দপুর শহরের ক’জন ব্যবসায়ীর কাছে যাই। ব্যবসায়ীরা তাদের কিছু টাকা গুজিয়ে দিলে বলেন গচ্ছিত টাকা দিয়ে হিলি থেকে জিরা আনলে বিনিময়ে ব্যবসায়ীরা তাদের হাতে দিবেন দৈনিক ২ থেকে ৩০০ টাকা। সংসারের কথা ভেবে হিলি গিয়ে দেখা যায় এটা একটা অন্নজগত। এ ব্যবসায় দৈনিক ২/৩ শত টাকা পাওয়া গেলেও হারাতে হয় নিজেকে। এছাড়া চোরাচালানীর বদনাম তো আছেই। রহিম নামের এক জিরা ব্যবসায়ী জানান, তিনি দীর্ঘ ২০ বছর থেকে একই ব্যবসা করে আসছেন। পুরুষরা দালালদের হাতে মোটা অংকের টাকা অথবা হাত-পা ধরে এ ব্যবসা করে মোটা ভাত মোটা কাপড়ের ব্যবস্থা করতে পারলেও নারীরা তা পারে না। এরপরেও নারীরা নিজেকে বিলিয়ে দিয়েই বাঁচার তাগিদে এ ব্যবসা করে এগিয়ে চলেছেন। তিনি বলেন, যেসব সুন্দরী নারীর দালালদের অবৈধ দাবি করলে ব্যর্থ হয় তাদের কৌশলে ভারতীয় এলাকায় পাঠিয়ে দিয়ে জেল জরিমানায় লিপ্ত করে দেয়া হয়।

হিলি এলাকার বেশ ক’জন জানান, অভাবগ্রস্থ ওইসব নারীদের দেখে ভিশন মায়া হয়। কারণ, এরা নিজেকে বিলীন করছেন বাঁচার তাগিদে। এরপরেও তাদের খেতাব দেয়া হচ্ছে চোরাচালানী। জেল জরিমানাও হচ্ছে তাদের। কিন্ত যারা অবৈধভাবে কোটি কোটি টাকার ভারতীয় মালামালসহ অন্যান্য মালামাল নিয়ে আসছেন বাংলাদেশে তাদের কিন্ত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্ণধারসহ রাজনৈতিক নেতারা সম্মানের সাথে সালাম দিয়ে চলেছেন। তারা বলছেন, যারা পেটের তাগিদে এ ব্যবসা করছেন শুধুমাত্র কি তারাই চোরাচালানী? এবং তাদের জন্যই কি আইন প্রয়োগ করার নির্দেশ? আর যারা কোটি কোটি টাকার ব্যবসা করছেন অবৈধভাবে তাদের বেলায় কি কোন আইন নেই? এ প্রশ্ন হিলি এলাকার মানুষসহ সর্বস্তরের জনসাধারণের।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top