সকল মেনু

আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ

ঢাকা, ৭ মার্চ (হটনিউজ২৪বিডি.কম) : আজ ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। সুদীর্ঘ আন্দোলনের এক পর্যায়ে ১৯৭১ সালের এই দিনে স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে ২৩ বছরের বঞ্চনার ইতিহাস তুলে ধরে বাঙালিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য যার যা আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাকতে বলেন বঙ্গবন্ধু। তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করলেন দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বেন। একাত্তরের সেই উত্তাল সময়ে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরো দেব, এ দেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়ব ইনশাআল্লাহ। এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

পরাধীনতার দীর্ঘ প্রহর শেষে স্বাধীনতার জন্য এমন একটি মাহেন্দ্রক্ষণের জন্যই যেন অধীর অপেক্ষায় ছিল বাঙালিরা। বঙ্গবন্ধুর এ ভাষণের আহ্বানেই  মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে তারা। ৭ মার্চ তাই বাঙালির ইতিহাসে অবিস্মরণীয় একটি দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আছে।

এদিন মাত্র ১৯ মিনিটের ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতিকে তুলে আনেন এক অনন্য উচ্চতায়। এতে সামরিক আইন প্রত্যাহার, সেনাদের ব্যারাকে প্রত্যাবর্তন, শহীদদের জন্য ক্ষতিপূরণ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের দাবি উত্থাপন করেন তিনি।

তিনি বললেন, ‘… আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইল, প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু, আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।’

বঙ্গবন্ধুর এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাঙালি জাতি দীর্ঘ নয় মাসের বীরত্বপূর্ণ সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেয়। ৩০ লাখ শহীদের বলিদান ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বিশ্ব মানচিত্রে স্থাপন করে নিতে সক্ষম হয়।

৭ মার্চের উত্তাল দিনটিতে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের রাজধানী ঢাকা ছিল মিছিলের শহর। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দলে দলে মানুষ পায়ে হেঁটে, বাস-লঞ্চে কিংবা ট্রেনে চেপে রেসকোর্স ময়দানে সমবেত হয়েছিলেন। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে লাখ লাখ মানুষে সয়লাব হয়ে গিয়েছিল বিশাল সে ময়দান।

৭ মার্চ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন।

রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, ‘স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করা ছিল বঙ্গবন্ধুর আজীবনের লালিত স্বপ্ন। আমাদের মহান নেতার সে স্বপ্ন পূরণ করতে সমাজ থেকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অশিক্ষাসহ নানা সামাজিক কুসংস্কার দূরীকরণে আমাদের অব্যাহত প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বাণীতে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ভাষণের মধ্য দিয়ে বাঙালি জাতি যেভাবে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল, তেমনি আরেকবার ঐক্যবদ্ধ হয়ে রূপকল্প-২০২১ এবং রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়ন করে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে উপনীত হব।’

ঐতিহাসিক এ দিনটিকে যথাযোগ্য মর্যাদায় উদযাপন করতে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠন বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়েছে।

শুক্রবার ভোর ৬-৩০ মিনিটে বঙ্গবন্ধু ভবন ও দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করবে আওয়ামী লীগ।

সকাল ৭ টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু ভবন প্রাঙ্গণে রক্ষিত শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করবে দলটি।

বিকাল ৩টায় ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যান জনসভা। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

দিবসটি উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি গণমাধ্যম বিশেষ অনুষ্ঠান সম্প্রচার এবং বিশেষ ক্রোড়পত্র প্রকাশ করবে।

মন্তব্য করুন

খবরের বিষয়বস্তুর সঙ্গে মিল আছে এবং আপত্তিজনক নয়- এমন মন্তব্যই প্রদর্শিত হবে। মন্তব্যগুলো পাঠকের নিজস্ব মতামত, কর্তৃপক্ষ এর দায়ভার নেবে না।

top